![আগের মতো যাচ্ছেতাই ডিসিশন দিচ্ছে না](uploads/2024/05/23/Mithu--Interview-1716445429.jpg)
একটা সময় সিসিডিএমের আওতাধীন বিশেষ করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ লিগে আম্পায়ারদের পক্ষপাতদুষ্ট খেলা পরিচালনা ছিল ওপেন সিক্রেট। এখন পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং কমতে শুরু করে। এর কারণ দুটি। ইফতেখার রহমান মিঠু বিসিবিতে প্রথমবারের মতো পরিচালক নির্বাচিত হয়ে আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়ে অনেকটাই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে বিসিবি গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে সিসিডিএমের আওতাধীন সব ক্লাবকে (৭৬টি) কাউন্সিলারশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের আম্পায়ারদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। আম্পায়ারদের সর্বোচ্চ লেবেল ‘এলিট প্যানেলে’ আছেন একজনব প্রতিনিধি। এসব নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মহিউদ্দিন পলাশ
সৈকতের এলিট প্যানেলে যুক্ত হওয়াটাকে কিভাবে দেখছেন?
এটা তো একটা গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট। আমাদের সাকিব আল হাসান টপ টেন অলরাউন্ডার যেই রকম, আম্পায়ারিংয়ের ক্ষেত্রে সেই রকম এলিট প্যানেলে। এটা সহজ বিষয় না। সৈকতও পরিশ্রম করেছে । এসব পারফরম্যান্স দেখে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার নিয়েছে। সেকেন্ড হচ্ছে সৈকতের ইনক্লুশনে যেই জিনিসটা হয়েছে যে যদি পরিশ্রম করেন, ওইদিকে যেতে পারবেন। আপনি রেমুনারেশনের ক্ষেত্রে বলেন বা আম্পায়ারিংয়ে লেভেল হিসেবে বলেন, এর ওপরে তো আর কিছু নেই। এটা তো হাইয়েস্ট লেভেল। ইয়ং জেনারেশন এখন আম্পায়ারিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারব, ওই জায়গায় পৌঁছাতে পারব।
মোর্শেদ আলী খান সুমন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার প্যানেলে ঢুকেছেন?
আইসিসি একটা ইমার্জিং গ্রুপ করে। সেখানে আমাদের চারজন ছিল। এই চারজনের থেকে একজন চলে গেল এলিটে। এখন এখানে গ্যাপ হওয়াতে আমাদের সুমনকে অ্যাড করে নেওয়া হলো।
আপনার সময়েই প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার বিভাগে ক্রিকেট লিগে দুজন নারী আম্পায়ার দিয়ে খেলা পরিচালনা করার সাহস দেখিয়েছেন। একটু যদি প্রেক্ষাপট বলতেন?
আমাদের দেশে প্রাইম মিনিস্টার, স্পিকার, পুলিশে, আর্মি- সব জায়গায় মেয়েরা আছে। এটা তো ফিজিক্যাল কন্টাক্ট গেম না। আমি তো ফুটবল খেলা বা বক্সিংয়ে নামিয়ে দিচ্ছি না। এটা হচ্ছে ডিসিশনের ব্যাপার। আমাদের প্র্যাকটিসে ছিল না, ইউজ করিনি। সারা দুনিয়ায় কিন্তু আস্তে আস্তে সবাই ইউজ করছে। আমরা কেন বসিয়ে রাখব? অনেকে হয়তো বলতেছে কেন আমরা হুট করে প্রিমিয়ার লিগে দিলাম। আমার প্রশ্ন হচ্ছে কোথায় ট্রেনিং দিব? লোকাল ক্রিকেটে যদি প্রেসার ম্যাচে ট্রেনিং না করতে পারে, তাহলে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচ যখন হবে, তখন কী প্রেসারটা নিতে পারবে? অপরচুনিটি দেখেছি। তাও প্রথম দিকে থার্ড আম্পায়ার হিসেবে রেখেছি। সেই হিসেবে এই ম্যাচগুলোতে দিয়েছি। আমার আশা তো চারজনই করবে। অদূর ভবিষ্যতে দেখবেন সৈকত এবং একটা মেয়ে বিদেশে ইন্টারন্যাশন্যাল ম্যাচ করছে।
দেশে নারী আম্পায়ারদের সম্ভাবনা কতটুকু দেখছেন?
দুই বছর আগে আমরা মেয়েদের ইউজ করা শুরু করছি। সবাই বাংলাদেশ টিমে খেলা প্লেয়ার। এরা পরীক্ষা দিয়েছিল। আমি এসে ২৬ মার্চ ম্যাচে প্রথম তাদের ইন্ট্রোডিউস করলাম। দেখলাম তারা পারফর্ম করল। আমাদের সবচেয়ে যে প্রেসার এ গ্রেড টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, এই বছর করালাম। যাতে আইসিসিও দেখে। এদেরও ট্রেনিং হয়। এর মধ্যে জেসি-মিশু একটু এগিয়ে আছে, অপর দুইজন চম্পা চাকমা ও ডলি রানী একটু পিছিয়ে আছে। মানে অভিজ্ঞতার দিকে। অন্যদের থার্ড আম্পায়ার হিসেবে ইউজ করি। রিজার্ভ আম্পায়ার যেটা বলে। জেসি আর মিশু দেখবেন যে ইন্ডিয়ার সঙ্গে অনফিল্ড করেছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে করেছে জেসি দুটোতে। মিশু যেমন নিউইয়র্কে আম্পায়ারিং করেছে। জেসি করেছে ইমার্জিং এশিয়া কাপে হংকংয়ে। সেখানে সে ভালো করেছে। রিটায়ার্ড ক্রিকেটারদের লিগ হয়, সেখানে করেছে। তাতে ওর অভিজ্ঞতা কিছুটা এগিয়েছে।
ঘরের মাঠে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কয়জন নারী আম্পায়ারকে দেখা যেতে পারে?
অন্তত ২ জন জেসি ও মিশু যাতে করতে পারে, সে চেষ্টা করছি। আশা করি এই ২ জনকেই দেখা যাবে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যখন বাংলাদেশের আম্পায়াররা এগিয়ে যাচ্ছেন, তখন ঘরোয়া ক্রিকেটে বিতর্কমুক্ত হতে পারছে না। এর থেকে উত্তোরণের উপায় কী?
এখন দেখেন এটা ফুল ম্যানুয়াল আম্পায়ারিং। একজন ফরমার ক্রিকেটার হিসেবে আমাকে যে লেগ বিফোর দেন, আমি খুশি হব না। সো কথাটা হচ্ছে যে যতদিন পর্যন্ত আমরা ডিআরএস লোকালি ইন্ট্রোডিউস না করতে পারব ততদিনে আপনি পারফেক্ট ডিসিশন নিতে পারবেন না। ক্যামেরা বসানোয় আমরা মনিটরিং করছি। এই মনিটরিংয়ের ইফেক্ট দেখতেছি বেটার আম্পায়ারিং। কেউ যদি বাজে আম্পায়ারিং করে, তাহলে আমরা তাদের লোয়ার লেভেলে আম্পায়ারিং দিয়ে রিহ্যাবের মতো করে তুলে আনি। এটা আম্পায়াররাও জানে। আগের মতো যাচ্ছেতাই ডিসিশন দিচ্ছে না। ভুল তো যে কেউ করতে পারে। আইপিএল দেখেন কন্টিনিউয়াসলি ভুল হচ্ছে। ইভেন ওয়াইডেও ভুল হচ্ছে। এটা তো হতেই পারে। ডিআরএস বা টেকনোলজির সাহায্য না নিলে এটা কোনো দিনই বিতর্ক মুক্ত হবে না। বিপিএলে দেখেন কোনো ইনসিডেন্ট ছাড়া কিন্তু ক্লোজ হয়েছে। জাস্ট বিকজ ডিআরএস ছিল।