![নেপালকে হালকাভাবে দেখছেন না তানজিম সাকিব](uploads/2024/06/16/Untitled-2-1718477001.jpg)
প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে এসে নিজেকে অনেক উপরে নিয়ে গেছেন বাঁহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ৫ উইকেট। এর মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। বাকি দুই ম্যাচের নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ৩ ওভার বোলিং করে ৩৩ রান এবং প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। আসরে তিনি এখন দলের অপরিহার্য খেলোয়াড়। অথচ তার খেলারই কথা ছিল না। শরিফুল ইসলামের ইনজুরি তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন করে দেয়। সুযোগ পেয়ে এমনভাবে কাজে লাগাচ্ছেন যে শরিফুলের ফিরে আসার দরজা কঠিন করে তুলেছেন। নেপালের বিপক্ষে সুপার এইটে ওঠার ম্যাচকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তানজিম সাকিব। তার বলা কথার উল্লেখযোগ্য অংশ খবরের কাগজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল। সেখানে ছিলেন খবরের কাগজের বিশেষ প্রতিনিধি (স্পোর্টস) মহিউদ্দিন পলাশ।
নেদাল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলেছে আবার দক্ষিণ আফ্রিকা-নেপাল খেলেছে একে অপরের বিপক্ষে। উইকেট কেমন দেখলেন?
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে উইকেট ভালো ছিল। বল উঁচু-নিচু হলেও ব্যাট করায় সমস্যা হয়নি। ১৭০ (হয়েছে ১৫৯ রান) রান লড়াকু সংগ্রহ হত। নেপাল-দক্ষিণ ম্যাচে দেখলাম বল টার্ন করছে। সেক্ষেত্রে ১৫০ রানই এই উইকেটে ভালো। দুই দলের সব উইকেট স্পিনাররাই পেয়েছে। আমরা ফ্রেশ উইকেটে খেলব, তাই আশা করছি ভালো রান করা সম্ভব। আমাদের রক্ষণাত্মক মনোভাব নেই, ইতিবাচক থাকছি। আমরা আগের মতোই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলব। নেপাল ভালো খেলেছে, প্রশংসা করছি তাদের। তবে আমরাও আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব।
নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে আপনার কি কি পেতে চান?
প্রত্যেক ম্যাচই আমরা জেতার জন্য খেলি। এই ম্যাচও জেতার জন্য খেলব। আগের ম্যাচে যারা রান করেনি আশা করি এই ম্যাচে রান করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে। আমরা চেষ্টা করব উইকেট টু উইকেট বল করার আর সুপার এইটের আত্মবিশ্বাস কুড়িয়ে নেওয়ার। এদিকেই মনোযোগ থাকবে।
সবাই বলছে শান্তর অধিনায়কত্ব খুবই ভালো হচ্ছে। কিন্তু তার ব্যাটে রান নেই?
শান্ত ভাই খুব পরিশ্রম করছে প্র্যাকটিসে নিজেকে ফর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য। উনি খুব কঠোর পরিশ্রমী মানুষ, জাতীয় দলের কয়েকজন পরিশ্রমীর মধ্যে উনি একজন। খুবই ডেডিকেটেড এবং প্যাশনেট একজন মানুষ। অধিনায়ক হিসেবেও খুবই ভালো। আমাদের খুব ভালো লাগে, আমরাও প্রশংসা করি। সবাইকে খুব আগলে রাখেন। গুছিয়ে রাখেন- মাঠ ও মাঠের বাইরে। এটা খুব ভালো দিক আমি বলব।
শরিফুলের ইনজুরি না হলে আপনার হয়তো এই বিশ্বকাপে খেলারই কথা ছিল না। নিজের পারফরম্যান্সকে কিভাবে দেখছেন?
ম্যাচ খেলব কি খেলব না এটা নিয়ে ভাবি না। সুযোগ পেলে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। কম্বিনেশনের কারণে না খেলা হলে আলাদা ব্যাপার। আমি সবসময় প্রস্তুত থাকি। সুযোগ পেলে তিন বিভাগেই শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি আমার কাছ থেকে দল যেন সর্বোচ্চটা পায়। দলের জন্য আমি শতভাগ দিতে চাই মাঠে। এটাই আমার কাজ।
এই মাঠে যে দুইটি ম্যাচ হয়েছে তাতে স্পিনোরদের দাপট ছিল বেশি। কালকের ম্যাচে কি ব্যাটেল অব স্পিন লড়াই হবে?
উইকেটে কিছু ঘাস আছে, একটু শক্ত মনে হলো। একই উইকেটে খেলা হলে বলতে পারতাম ব্যাটল অব স্পিন, কিন্তু আমরা খেলছি ফ্রেশ উইকেটে। স্বাভাবিক আচরণই আশা করব যতক্ষণ না প্রথম বল হচ্ছে। প্রথম বল দেখে হয়ত উইকেট বুঝতে পারব। তার আগে কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছি না, ইতিবাচক থাকছি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের পর নেপালকে নিয়ে আপনাদের দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে কিনা যে নেপাল দূর্বল প্রতিপক্ষ নয়?
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছোট দল, বড় দল বলে কিছু নেই। প্রত্যেককে সমানভাবে দেখার চেষ্টা করি। মাত্র ২০ ওভারের খেলা। কখন মোমেন্টাম বদলে যায় কেউ বলতে পারে না। আমরা প্রত্যেক দলকেই সমানভাবে দেখার চেষ্টা করি। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক একইভাবে খেলার চেষ্টা করব।
এই মাঠে প্রথম ম্যাচে দিনে হয়েছে, পরের ম্যাচে ফ্লাড লাইটে। কালকের ম্যাচে আবার ফ্লাড লাইটে। এটা কি আপনাদের কোনো সমস্যা হবে মানিয়ে নিতে?
আমরা তো অনেক দিবারাত্রির ম্যাচ খেলেছি। এটা প্রথম না। সবার অভিজ্ঞতা আছে। দিবারাত্রির ম্যাচে ক্যাচ উঠলে হয়ত একটু মানিয়ে নেওয়া লাগে। আমাদের জন্য নতুন কিছু না।
সুপার এইটে যেতে হলে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। এটা কোনো বাড়তি চাপ কি না?
এটা মোটেও চাপের কিছু না। আমরা আমাদের শতভাগ দিব। সেরাটা চেষ্টা করব।