রাশিয়ার উত্তর ককেশাস অঞ্চলের দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের চার উপাসনালয় ও পুলিশ চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
প্রথমে দুটি ভিন্ন শহরে থাকা চার উপাসনালয়ে হামলা চালায় একদল বন্দুকধারী। পাশাপাশি হামলা হয় পুলিশের তল্লাশি চৌকিতেও। এতে ১৫ পুলিশ সদস্য, ছয় হামলাকারী ও অর্থোডক্স চার্চের ধর্মযাজকসহ অন্তত ২৩ জন নিহত হন।
গত রবিবার সন্ধ্যায় দাগেস্তানের মাখাচকালা ও দেরবেন্ত শহরে অর্থোডক্স ধর্মীয় উৎসবকে লক্ষ্য করে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় অন্তত ডজনখানেক লোক আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে দাগেস্তান কর্তৃপক্ষ।
দাগেস্তানের প্রধান সের্গেই মেলিকভ বলেছেন, ‘হামলাকারীদের পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে হামলার পেছনে কারা ছিল তা বোঝা গেছে। কারণ অতীতেও দাগেস্তানে ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার নজির রয়েছে। বন্দুকধারীরা খ্রিষ্টানদের দুটি গির্জা ও ইহুদিদের দুটি সিনাগগ লক্ষ্য করে আকস্মিক হামলা চালায়। হামলায় মাখাচকালার একটি গির্জার ধর্মযাজক ফাদার নিকোলাই কোটেলনিকভ নিহত হন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক মারা গেছেন।’
সোমবার (২৪ জুন) থেকে দাগেস্তানে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন মেলিকভ। হামলার এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে রুশ প্রশাসন। টেলিগ্রামে একটি ভিডিওতে মেলিকভ বলেছেন, আক্রমণটি বিদেশ থেকে সংঘটিত হয়েছে। দাগেস্তান এখন ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার যুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে পড়ল।
এদিকে হামলাকবলিত ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেগুলোতে বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এ ছাড়া একটি ভিডিওতে মাখাচকালা শহরে কালো পোশাক পরা কয়েকজন ব্যক্তিকে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তেও দেখা যায়।
ঘটনার পর জরুরি সেবা সংস্থার সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে রুশ সরকার।
রাশিয়ার দরিদ্র এলাকাগুলোর মধ্যে দাগেস্তান অন্যতম। এটি রাশিয়ার মুসলিমপ্রধান এলাকাগুলোরও একটি। ২০০৭ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ‘ককেশাস আমিরাত’ নামের একটি ইসলামপন্থি সশস্ত্র সংগঠন এই অঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি রুশ প্রজাতন্ত্রে হামলা চালিয়েছে। সংগঠনটি পরে নাম পরিবর্তন করে ‘ইসলামিক আমিরাত অব দ্য ককেশাস’ রাখে। সূত্র: বিবিসি