আদালতের নির্দেশে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে গোপালগঞ্জে করা সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটি টিম পার্কে প্রবেশ করে নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেয়। এরপর শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পার্কের প্রধান ফটকের পাশে মাইকিং করে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেয় জেলা প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে আদালতের ক্রোক আদেশের বাস্তবায়ন করা হলো।
এদিকে জেলা প্রশাসন পার্কটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। তবে দখলকৃত জমি ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে গত শুক্রবার রাতে পার্কের ঘের থেকে গোপনে ৫৯০ কেজি মাছ ৮৩ হাজার টাকায় বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শনিবার পার্কের মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের নামে সদর থানায় মামলা করেছেন দুদকের গোপালগঞ্জের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান। সেই সঙ্গে মাছ বিক্রির টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
পার্কের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বাদল বল (৫০) নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘ডিসি স্যার পার্কের দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আমরা আশা করি, এখন থেকে সরকারি রাস্তা দিয়ে আমরা আমাদের জমি ও পুকুরে যেতে পারব।’
পার্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজ বাবলী শবনম, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গোপালগঞ্জের উপপরিচালক মো. মশিউর রহামন, সহকারী পরিচালক সোহরাব হোসেন সোহেল, দুদক মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান ও গোপালগঞ্জের জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মো. জিল্লুর রহমান রিগানসহ অন্য কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের দুদক উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় শিগগিরই পার্কের সব কার্যক্রম চালু করা হবে। এ ছাড়া দর্শনার্থী প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম জানান, ইতোমধ্যে সাভানা পার্কের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। পার্কের মৎস্য, কৃষিজমিসহ নানা স্থাপনা বিভিন্ন দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, র্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপি থাকাকালীন বেনজীর আহমেদ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। এ পার্কে জমির প্রায় সবই হিন্দু সম্প্রদায়কে ভয় দেখিয়ে ও জোর করে দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।