![মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি রিমালের ক্ষতিগ্রস্ত জেলে পরিবারের](uploads/2024/07/01/7.-Mongla--Fisherman-1719803714.jpg)
ঘূর্ণিঝড় রিমালে মোংলার জেলেদের জাল, নৌকার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য সুন্দরবন এলাকায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন। তাই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে জেলে পরিবারগুলোকে। এর ফলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জেলেরা। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত জেলে পরিবারদের ঘুরে দাঁড়াতে বিকল্প কর্মসংস্থানসহ সরকারি সহায়তার আশ্বাস সংশ্লিষ্টদের।
সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে নদী ও খালের আয়তন প্রায় ১ হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার। সুন্দরবনের পানির ভাগকে বলা হয় মৎস্য সম্পদের ভাণ্ডার। মোংলা উপকূলীয় এলাকার বেশির ভাগ মানুষের জীবিকা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সাগর ও সুন্দরবনের মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল। বছরের পুরো সময়টাই কাটে তাদের সুন্দরবনের সাগর-নদী-খালে মাছ ধরে। আর মাছ ধরার আয় দিয়েই চলে তাদের সংসার।
গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালে এখানকার জেলেপল্লিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদীর উপকূলে বসবাস করায় জলোচ্ছ্বাসে তাদের জাল, নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জাম ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘর। অনেক জেলে পরিবার রাস্তায় আবার কেউ নদীর তীরে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন।
জেলে আবদুর রহিম জানান, এক দিন মাছ না ধরলে যাদের সংসার চলে না, তারা তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ রাখলে পরিবারসহ না খেয়ে থাকতে হবে। এ বছর ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে জেলেরা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হবেন।
অপর জেলে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে দরিদ্র জেলেদের ঘরবাড়ি সব তছনছ হয়ে গেছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। অনেক জেলের ঘরে খাবার নেই। আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের মাছ ধরা ছাড়া আর কোনো কাজ কারার উপায় নেই। তাও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আমরা ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে মরবো। দুর্গত মানুষের জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে সুন্দরবনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না জানিয়েছেন, নিবন্ধিত জেলেদের পাশাপাশি অনিবন্ধিত জেলেদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলে পরিবারগুলো ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য অফিসার অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের এখানের জেলেদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদের মধ্যে চিলা ইউনিয়নের জয়মনি এলাকার জেলেরা যারা কুঁড়েঘরে থাকেন, তাদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমরা তাদের তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তা ছাড়া তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছি।’