![জাহাজভাঙা শিল্প: দুর্ঘটনা কমলেও আহতদের মানবেতর জীবনযাপন](uploads/2024/07/01/BILS-2-1719822426.jpg)
জাহাজভাঙা শিল্পে দুর্ঘটনা কমেছে। তবে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় আহতরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেউ কেউ চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এসব জেনেও মালিকপক্ষ কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না।
রবিবার (৩০ জুন) সীতাকুণ্ডে ইপসা এইচআরডি ভবনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, ভাটিয়ারীতে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে হাসপাতাল করা হলেও এই শিল্পের আহত শ্রমিকরা সেখানে চিকিৎসা নিতে গেলে খোঁজখবরও নেওয়া হয় না। অনেক শ্রমিককে পঙ্গুত্ব বরণ করে সারা জীবন দুঃখে-কষ্টে কাটাতে হয়। জাহাজভাঙা শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। এই শিল্প দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হয়। মালিকরা মুনাফা অর্জন করে। কিন্তু শ্রমিকরা কোনো মর্যাদা দূরে থাক, স্বীকৃতিও পান না। দুর্ঘটনায় কেউ আহত বা নিহত হলে মালিকপক্ষ অস্বীকার করে। এ ছাড়া এখন ঠিকাদারের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেন মালিকরা। এতে দুর্ঘটনা হলে তাদের প্রতিষ্ঠানের কেউ নয় বলে সহজে দায় এড়িয়ে চলেন।
সভায় শ্রমিকদের এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর ফজলুল করিম মিন্টু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিকরা আহত হওয়ার পর চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেলে পরে মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা দুষ্কর হয়ে ওঠে। এতে তারা ফলোআপ চিকিৎসা পান না। অথচ শ্রম আইনে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত মজুরিসহ ছুটি ও চিকিৎসা খরচে চিকিৎসা পাওয়া শ্রমিকের অধিকার। আহত শ্রমিকেরা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হলে আড়াই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া আইনে বিধান আছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫ সাল থেকে গত সাড়ে ৯ বছরে ১২৪ জন মারা গেছেন এই শিল্পে। কেবল ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি বছরগুলোতে মৃত্যুর হার তুলনামুলক কম ছিল। অনেক শ্রমিকের দেহে কাশি, শ্বাসকষ্ট, শারীরিক দুর্বলতা অনুভবসহ নানা রোগের লক্ষ্মণ দেখা দিচ্ছে। তাদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, আলসার, চর্মরোগ ও ব্যথাজনিত রোগে ভুগতে দেখা গেছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।