![মৃত্যুর আগেই ফিরে আসে স্মৃতি](uploads/2024/05/08/science-1-1715157163.jpg)
ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া রোগের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, মৃত্যুর কিছুদিন আগে এই রোগে আক্রান্ত অনেকেই তাদের স্মৃতিশক্তি ফিরে পান। সায়েন্স অ্যালার্টে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
যখন ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্মৃতিশক্তি ফিরে পান- সে পরিস্থিতিকে চিকিৎসকরা বলেন ‘লুসিডিটি’। এ সময় রোগীরা তাদের প্রিয়জনের কথা মনে করতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাছের মানুষের সঙ্গে তারা রসিকতাও করেন এবং অর্থপূর্ণ আলাপেও অংশ নেন। যেসব স্মৃতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছিল বলে মনে করা হয়- সেগুলোও ফিরে আসতে থাকে।
কিন্তু চিকিৎসা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, লুসিডিটি দেখা দিলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৩ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয় এবং ৮৪ শতাংশ রোগী মারা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম ঘটে। এমনও আছে যে লুসিডিটির ছয় মাস পরেও রোগী দিব্যি বেঁচে আছেন।
তবে কেন লুসিডিটি ঘটলেই মৃত্যু ঘনিয়ে আসে- এর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। কারণ ডিমেনশিয়াতে মস্তিষ্কের নিউরনের যে ক্ষয় হয়, তা পূরণ হওয়া আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব একটি ঘটনা। তাই হঠাৎ হারানো স্মৃতি ফিরে আসার ঘটনাটিকে প্যারাডক্স হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
এরপরেও লুসিডিটিকে যারা কাছ থেকে দেখতে পান, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহ চমৎকার এবং মূল্যবান একটি অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও তারা রোগাক্রান্ত হওয়ার আগের ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে হলেও ফিরে পান এবং চিরচেনা মানুষকে চূড়ান্ত বিদায় দেওয়ার সুযোগও পেয়ে যান।
ডিমেনশিয়া একটি নিউরোডিজেনারেটিভ একটি রোগ। অর্থাৎ এই রোগে মস্তিষ্কের নিউরনগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোনো স্মৃতি ক্রমেই ভুলে যেতে থাকে এবং এক সময় সাধারণ কাজকর্ম করার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। শিশুর মতো নতুন এক অস্তিত্বে পরিণত হয়। পুরোনো ব্যক্তিসত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলার কারণে এই রোগকে ‘দীর্ঘ বিদায়’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। কারণ এই রোগ একবার হলে সাধারণভাবে পুনরুদ্ধারযোগ্য নয় বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট