ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

বিমানে ঝাঁকুনি বাড়ছে কেন? বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
বিমানে ঝাঁকুনি বাড়ছে কেন? বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা
ছবি: সংগৃহীত

বিমানে যাত্রা করার সময় হঠাৎ ঝাঁকুনি লাগার অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের হয়েছে। চারপাশের আকাশ পরিষ্কার, নীল এবং শান্ত, তারপরও হঠাৎ করেই বিমানটি ঝাঁকুনি দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিমান চালক ও বিমান ইতিহাসবিদ ড্যান বাব এই ঝাঁকুনিকে ‘ক্লিয়ার-এয়ার টার্বুলেন্স’ বলে অভিহিত করেছেন। এটি উচ্চ আকাশে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের সময় একটি পরিচিত ঝুঁকি।

ককপিট থেকে এটি দেখা যায় না। এটি ফ্লাইট ডেকের আবহাওয়া রাডারেও ধরা পড়ে না। বাব আরও বলেন, ‘এটি যেন প্রতি ঘণ্টা ৬০ মাইল গতিতে গাড়ি চালানোর সময় একটি গভীর গর্তে আঘাত করার মতো। এই ঝাঁকুনি যাত্রীরা অনুভব করেন, আশা করি তারা আহত হবেন না।’

তবে এতে আহত হওয়া বা তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। ২০২৪ সালের মে মাসে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমান লন্ডন থেকে রওনা হওয়ার পরে প্রবল ঝাঁকুনির মধ্যে পড়ে। এই অপ্রত্যাশিত ঝাঁকুনিতে ৮৩ জন যাত্রী আহত হন ও একজন মারা যান।

যদিও এই ঘটনা বিশেষভাবে গুরুতর ছিল। এই ধরনের ঝাঁকুনিতে মৃত্যুর ঘটনা বিরল, তবে সামগ্রিকভাবে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে। বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর জন্য দায়ী আমাদের উষ্ণ হওয়া বায়ুমণ্ডল।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের অধ্যাপক পল উইলিয়ামস জানান, ‘বর্তমানে আমাদের কাছে শক্ত প্রমাণ রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝাঁকুনি বাড়ছে। আমরা সম্প্রতি আবিষ্কার করেছি, ১৯৭৯ সাল থেকে উত্তর আটলান্টিকে গুরুতর ক্লিয়ার-এয়ার টার্বুলেন্স বা স্পষ্ট আকাশে ঝাঁকুনি ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।’ গবেষকরা স্যাটেলাইট চালু হওয়ার পর থেকে চার দশকের বায়ুমণ্ডলীয় ডেটা বিশ্লেষণ করে ক্লিয়ার-এয়ার টার্বুলেন্সের ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা নির্ধারণ করেছেন।

গবেষকরা আরও উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মহাদেশীয় অংশেও একই রকম এই বৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। উত্তর আটলান্টিক ও যুক্তরাষ্ট্র এই দুই জায়গায় বিশ্বের  কয়েকটি ব্যস্ততম বিমান যাতায়াতের রুট রয়েছে।

 

মরু শ্যাওলা মঙ্গলে প্রাণের সূচনা করতে পারে!

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০৭ পিএম
মরু শ্যাওলা মঙ্গলে প্রাণের সূচনা করতে পারে!
ছবি: সংগৃহীত

চীনের বিজ্ঞানীরা মোজাভে মরুভূমি ও অ্যান্টার্কটিকায় জন্মানো ‘সিন্ট্রিচিয়া ক্যানিনারভিস’ নামের এক বিশেষ ধরনের মরু শ্যাওলা আবিষ্কার করেছেন, যা মঙ্গল গ্রহের রুক্ষ পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে। এই আবিষ্কার মঙ্গল গ্রহে প্রাণের বিকাশ ঘটানোর সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

মরু শ্যাওলাটি খরা, উচ্চমাত্রার বিকিরণ ও চরম ঠাণ্ডা পরিবেশেও ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্যাওলাবিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী স্টুয়ার্ট ম্যাকড্যানিয়েল বলেন, ‘স্থলজ উদ্ভিদ চাষ করা যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ মিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

মঙ্গল গ্রহের কঠিন পরিবেশে এই শ্যাওলা ব্যবহারের কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। চীনা গবেষকরা ‘দ্য ইনোভেশন জার্নাল’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে মঙ্গলগ্রহে মরু শ্যাওলার ব্যবহারের সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন। গবেষণাপত্রে গবেষক আগাতা জুপানস্কা জানিয়েছেন, ‘মরু শ্যাওলা মঙ্গলপৃষ্ঠের পাথুরে উপাদানকে সমৃদ্ধ ও রূপান্তরিত করতে সাহায্য করতে পারে।’

এই শ্যাওলা কেবল কঠিন পরিবেশে বেঁচে থাকে না, বরং পানিশূন্য পরিবেশেও দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে। এমনকি এসব শ্যাওলা মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাতেও পাঁচ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও মরু শ্যাওলা টিকে থাকে। গামা রশ্মির সংস্পর্শে এসেও এই শ্যাওলার বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। রুক্ষ পরিবেশ থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক বৃদ্ধির নজির খুব কম গাছেরই রয়েছে।

বেশির ভাগ গাছপালা মহাকাশ ভ্রমণের চাপ সহ্য করতে পারে না। তাই বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতেই মঙ্গল গ্রহের মতো তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডল ও বিকিরণ তৈরি করে মরু শ্যাওলার সহনশীলতা পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে, সিন্ট্রিচিয়া ক্যানিনারভিস মঙ্গলের পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে। সূত্র: ডেইলি মেইল

/আবরার জাহিন

 

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ধ্বংস করবে স্পেসএক্স

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০০ পিএম
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ধ্বংস করবে স্পেসএক্স
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশযান প্রস্তুতকারক ও মহাকাশ যাত্রায় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স ধ্বংস করবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, যা ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)’ নামে পরিচিত। এই মহাকাশ স্টেশনের জীবনকাল শেষে, এটিকে ধ্বংসের জন্য স্পেসএক্সকে দায়িত্ব দিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নাসার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।

স্পেসএক্স প্রশান্ত মহাসাগরে ৪৩০ টন ওজনের মহাকাশ কাঠামোটিকে নিরাপদে অবতরণ করার জন্য আগামী কয়েক বছরের মধ্যে একটি যান নির্মাণ করবে। সম্প্রতি এই কাজের জন্য স্পেসএক্সের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৮৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের একটি চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে নাসা।

২০৩০ সাল পর্যন্ত নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। এরপরের বছর অর্থাৎ ২০৩১ সালের শুরুর দিকে এটিকে কক্ষচ্যুত করে প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলা হবে। কিছু প্রতিষ্ঠান স্টেশনটির বিভিন্ন মডিউল পুনরায় ব্যবহার করতে চাইছে। আইএসএসের জায়গা নিতে পারে তুলনামূলকভাবে ছোট একাধিক বাণিজ্যিক মহাকাশ স্টেশন।

১৯৯৮ সালে আইএসএস প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। সর্বপ্রথম রাশিয়ার জারিয়া নামক মডিউল পাঠানোর মাধ্যমে এ স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মহাকাশে মানুষ নির্মিত সর্ববৃহৎ স্থাপনাটি তৈরিতে বিশ্বের প্রায় এক ডজনের বেশি দেশ একত্রে কাজ করেছে। ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো কোনো নভোচারী মহাকাশ স্টেশনটিতে পা রাখেন। এরপর থেকে নিয়মিতই তাদের আনাগোনা ছিল সেখানে।

প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে চলা এই মহাকাশ স্টেশন ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এখানে মানবদেহে বার্ধক্যের প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে নতুন ধরনের উপকরণের সূত্র আবিষ্কারসহ সব ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি বিশেষ যান তৈরি করবে। নাসা ও এর আন্তর্জাতিক অংশীদাররা যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ফলে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে আইএসএসের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর নিরাপদে এটি অপসারণ করা সম্ভব হবে। নতুন এই যানের নাম রাখা হয়েছে ‘ইউএস ডিওরবিট’। এই যান তৈরির জন্য ২০২৩ সালে প্রথম প্রস্তাব গ্রহণ করে নাসা। এটি অনেকটা নদী বা সমুদ্রে চলমান টাগবোটের মতো কাজ করবে। বড় বড় জাহাজকে যেমন টাগবোটের মাধ্যমে নদীর তীরে টেনে আনা হয়, এই যান তেমনই কাজ করবে।

নাসার স্পেস অপারেশনসের পরিচালক কেন বোয়ারসক্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ইউএস ডিওরবিট যানটি তৈরি করা হচ্ছে। নাসা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে আরও কার্যকর বৈজ্ঞানিক, পরীক্ষা পরিচালনা করতে চায়। সেই লক্ষ্যে আরও আধুনিক আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন তৈরি করতে চায় মহাকাশ সংস্থাটি।’

আইএসএস প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ইউরোপ, কানাডা ও জাপান এই প্রকল্পে সহযোগী ভূমিকা পালন করছে। পশ্চিমা অংশীদাররা ২০৩০ সাল পর্যন্ত স্টেশনটির জন্য অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। রাশিয়া কমপক্ষে ২০২৮ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পে যুক্ত থাকার কথা জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের আয়ুষ্কাল শেষে এটি নিষ্ক্রিয় করার বিভিন্ন সমাধান খুঁজছে নাসা। এই সমাধানগুলোর মধ্যে রয়েছে স্টেশনটির পুরোনো অংশগুলো ভেঙে ফেলা এবং নতুন প্রজন্মের মহাকাশ কাঠামো তৈরিতে কিছু অংশ ব্যবহার করা। অপর একটি সমাধান হলো এটি চালু রাখা এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া। তবে প্রতিটি সমাধানেই খরচের পাশাপাশি মালিকানা নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে।

মহাকাশ স্টেশন নিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার জন্য যে যান তৈরি করা হচ্ছে, তার নকশা প্রকাশ করেনি স্পেসএক্স ও নাসা। তবে নিরাপদে সঠিক সময় এবং জায়গায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করানোর জন্য নতুন যানটির শক্তিশালী গতিবেগ লাগবে।

স্টেশনটির বিশাল আকৃতি ও ভরের কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় তীব্র তাপ সহ্য করে কিছু কাঠামো এবং যন্ত্রাংশ ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারে। এর আয়তন প্রায় একটি ফুটবল মাঠের সমান।

মহাকাশ স্টেশনের নিয়ন্ত্রণকারীরা ধীরে ধীরে কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। এতে অবস্থান করা সর্বশেষ মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পর চূড়ান্তভাবে এটিকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

নিষ্ক্রিয় মহাকাশযানগুলোকে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ‘পয়েন্ট নিমো’ নামের স্থানকে লক্ষ করে নিক্ষেপ করা হবে। জুল ভার্নের বিখ্যাত বই ‘টোয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি’-এর সাবমেরিন চালকের নামানুসারে লক্ষ্যস্থলটি সবচেয়ে কাছের স্থলভাগ থেকে আড়াই হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত।

নাসা আশা করছে, আইএসএস নিষ্ক্রিয় হওয়ার আগেই বেশ কয়েকটি বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থা বাণিজ্যিক মহাকাশ স্টেশন উৎক্ষেপণ শুরু করবে। এরপর মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলোর মনোযোগ থাকবে ‘গেটওয়ে’ নামের প্রকল্পের দিকে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে এমন একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। সূত্র: বিবিসি

 

নভোচারী আটকা পড়েছেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
নভোচারী আটকা পড়েছেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার দুই নভোচারী আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) আটকা পড়েছেন। বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানের বেশ কয়েকটি যান্ত্রিক সমস্যার কারণে নাসার নভোচারী ব্যারি উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস সেখানেই অবস্থান করছেন। এ দুইজন নভোচারীকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে। তবে তাদের ফিরে আসার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।

৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে স্টারলাইনার মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। ফ্লাইট কমান্ডার ব্যারি উইলমোর ও ফ্লাইট পাইলট সুনিতা উইলিয়ামসসহ একদিন পর নভোযানটি  আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছায়। এই মিশন নাসার কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রামের অংশ, যা বোয়িংয়ের নভোযান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিয়মিত মিশন পরিচালনা করার জন্য যোগ্য কি-না তা পরীক্ষা করছে। মূলত এই নভোচারীদের ১৪ জুন পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল। তবে তাদের ফিরে আসা বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে। এখনো পৃথিবীতে ফিরে আসার দিন-ক্ষণ অনির্ধারিত।

নাসার কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রামের পরিচালক স্টিভ স্টিচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা সময় নিচ্ছি ও ভালোভাবে মিশন ব্যবস্থাপনা দলের প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। রনডেইভু (rendezvous) ও ডকিং (docking)-এর সময় আমরা হিলিয়াম সিস্টেমে ছোট লিকেজ ও থ্রাস্টারের কার্যক্রমের সমস্যা দেখেছি। সে জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করছি।’

বোয়িং ও নাসা জানিয়েছে, নভোযানটিতে সমস্যা দেখা দেওয়ার পরও মহাকাশচারীরা বর্তমানে নিরাপদে আছেন। তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আছেন, যেখানে তাদের জন্য খাবার, পানি ও অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় সব সরবরাহ রয়েছে। আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্টেশনের কার্যসূচি তুলনামূলকভাবে ফাঁকা রয়েছে। মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরে আসার জন্য কোনো চাপ নেই। 

নাসা ও বোয়িং আরও জানিয়েছে, ব্যারি উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস আইএসএসের ‘এক্সপিডিশন ৭১’ ক্রুদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। প্রয়োজন অনুসারে স্টেশন অপারেশনে সহায়তা করছেন। নাসার স্টারলাইনারের সম্ভাব্য প্রত্যয়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করছেন।

বোয়িংয়ের স্টারলাইনার প্রোগ্রামের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্ক ন্যাপি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ক্রুদের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। তারা জানেন ক্রু ফ্লাইট টেস্টে আমরা যা শিখেছি, তা ভবিষ্যতের ক্রুদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত ও সুচারু করবে।’

স্টারলাইনার উৎক্ষেপণের আগে থেকে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়েছে। পরীক্ষামূলক এই উৎক্ষেপণের কথা ছিল চলতি বছরের ৬ মে। তবে মহাকাশযান কক্ষপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্সের (ইউএলএ) রকেটের অক্সিজেন ভাল্বের সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে উৎক্ষেপণটি বাতিল করা হয়েছে।

২৫ মে নতুন করে উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তবে পরে মহাকাশযান পরিচালনার জন্য সাপোর্ট সিস্টেম ও যন্ত্রপাতি রয়েছে, এমন সার্ভিস মডিউলে হিলিয়াম সিস্টেমে লিকেজ ধরা পড়ে।

এরপর হিলিয়াম লিকেজ ও থ্রাস্টারের সমস্যা স্টারলাইনারের ডকিং বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কায় পড়ে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ডকিংয়ের পাঁচ দিন পর নাসা ও বোয়িং জানায়, মহাকাশযানটিতে পাঁচটি ছোট হিলিয়াম লিকেজ হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ফিরতি যাত্রার জন্য যথেষ্ট হিলিয়াম জ্বালানি রয়েছে।

মূলত নভোচারীদের এই সফরে আট দিন থাকার কথা ছিল। তবে বর্তমানে মহাকাশচারীদের সমস্যা সমাধানের জন্য কমপক্ষে এক মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অবস্থান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বোয়িং জানিয়েছে, আগামী ২ জুলাই নির্ধারিত স্পেসওয়াকের পর মহাকাশচারীদের ফিরতি সময়সূচি সমন্বয় করা হবে। নাসার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, নতুন লক্ষ্য ফিরতি যাত্রার তারিখ ৬ জুলাই।

মহাকাশে থাকা সুনিতার জন্য নতুন কিছু নয়। এর আগে ৩২২ দিন মহাকাশে ছিলেন সুনিতা। নারী হিসেবে সবচেয়ে বেশি সময় মহাকাশে থাকার রেকর্ড তার। এবার নিয়ে তৃতীয়বার মহাকাশে গেলেন সুনিতা। ব্যারিও অভিজ্ঞ নভোচারী। তিনিও তিনবার মহাকাশে গিয়েছেন। সূত্র: এবিসি নিউজ

 

চাঁদের নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছে চীনের চন্দ্রযান

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০২:৫০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০২:৫০ পিএম
চাঁদের নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছে চীনের চন্দ্রযান
ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর মতো চাঁদ কি বসবাসের যোগ্য? চাঁদের মাটিতে কি প্রাণের সঞ্চার হতে পারে? মানুষ এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে, অনেক আগে থেকে। এবার এই উত্তরের সন্ধানে চাঁদের কঠিনতম প্রান্তে মহাকাশযান পাঠিয়েছে চীন। সেখানকার মাটি খুঁড়ে পৃথিবীতে নমুনা নিয়ে ফিরেছে নভোযানটি।

চীনের চ্যাংই-সিক্স লুনার মডিউল গত মঙ্গলবার পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। দেশটির উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহাকাশ কর্মসূচির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে চাঁদের দূরবর্তী দিক থেকে প্রথমবারের মতো নমুনা সংগ্রহের ঐতিহাসিক অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিসিটিভি জানিয়েছে, পুনঃপ্রবেশ করা মডিউলটি মঙ্গলবার চীনের উত্তরাঞ্চলীয় অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে নির্ধারিত এলাকায় সফলভাবে অবতরণ করেছে। সিসিটিভির সরাসরি সম্প্রচারে দেখা যায়, মডিউল প্যারাসুটের মাধ্যমে অবতরণ করছে এবং মিশন নিয়ন্ত্রণ কক্ষে তালি দিচ্ছে সবাই।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)-এর প্রধান ঝাং কেইজিয়ান বলেন, চ্যাংই-সিক্স চন্দ্র অনুসন্ধান অভিযান সম্পূর্ণ সফল হয়েছে।

সিসিটিভি জানিয়েছে, অবতরণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি অনুসন্ধান দল মডিউলটি উদ্ধার করে। সরাসরি সম্প্রচারের সময় দেখা যায়, একজন কর্মী মডিউলটির পরীক্ষা করছেন, যা একটি চীনা পতাকার পাশে ঘাসের ওপর রয়েছে।

এই সফল মিশনকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ‘চিরকালের স্বপ্ন’ বলে প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে যখন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশও নিজেদের চাঁদে অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করছে। গত মঙ্গলবারের এক অভিনন্দন বার্তায় সি চিন পিং মিশনটিকে ‘মহাকাশ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে শক্তিশালী দেশ গড়ার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন’ হিসেবে অভিহিত করেন।

বেইজিং ২০৩০ সালের মধ্যে মহাকাশে মহাকাশচারী পাঠানোর এবং চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে। ধারণা করা হয়, চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে জলীয় বরফ রেয়েছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রও একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করতে চায়।

সিএনএসএ জানিয়েছে, চ্যাংই-সিক্স অনুসন্ধান যানটি চাঁদের দূরবর্তী দিক থেকে প্রায় দুই কেজি চাঁদের ধুলা ও পাথর নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে, যা চীনের গবেষকরা বিশ্লেষণ করবেন। এরপর আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা এটি নিয়ে গবেষণা করবেন।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই চাঁদে পাড়ি জমিয়েছিল চীন। গত ৩ মে দেশটির দক্ষিণ প্রান্তের হাইনান প্রদেশ থেকে ‘লং মার্চ-ফাইভ’ নামক রকেটে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল চ্যাং-৬।

চন্দ্রযান চ্যাংই-৬-এর লক্ষ্য ছিল চাঁদ থেকে মাটি এবং পাথর সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসা। বিজ্ঞানীদের একাংশ ভেবেছিলেন চিনের চন্দ্রযান বোধ হয় চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতেই ব্যর্থ হবে।

 

পছন্দের জিনিস সহজ করে মস্তিষ্কের কাজ

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ০৮:৫১ পিএম
পছন্দের জিনিস সহজ করে মস্তিষ্কের কাজ
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের পছন্দের খাবার, রং, জায়গা, এমনকি মানুষের প্রতি আকর্ষণ- এ সবকিছুর পেছনেই রয়েছে মস্তিষ্কের কার্যকৌশল। বিবর্তনের ফলে মানুষের মস্তিষ্কে এই পছন্দের ধারণা গেঁথে গেছে। আমরা সাধারণত উজ্জ্বল রঙের প্রতি আকৃষ্ট হই। কারণ এগুলো আকাশ ও পানির মতো ইতিবাচক জিনিসের সঙ্গে সম্পর্কিত। আবার গাঢ় রং, যা ময়লা বা রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত- সেগুলো আমরা এড়িয়ে চলি।

আমরা সাধারণত এমন ভৌগোলিক পরিবেশ পছন্দ করি, যা আশ্রয়, সম্পদ ও সুন্দর পরিবেশের ভারসাম্য দিয়ে থাকে। সম্ভবত কারণ, বিবর্তনের ফলে আমাদের পূর্বপুরুষরা এই জায়গায় টিকে থাকতে সক্ষম হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ সাধারণত নিখুঁত চেহারাকে সুন্দর মনে করে। কারণ এটি সুস্থ জিনের লক্ষণ হতে পারে।

পছন্দের ব্যাপারে জিনগত প্রবণতার সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক প্রভাব ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ছেলেবেলায় হয়তো প্রিয় রং, দেশ, চলচ্চিত্র ও তারকা ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হতো। এই উত্তরগুলো নির্বাচনে মিশ্রভাবে কাজ করে মৌলিক প্রবণতা ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার। এসব পছন্দের ক্ষেত্রে বিবর্তনীয় পছন্দ ও ব্যক্তিগত পছন্দের মতো বিষয় মিশ্রণ হয়। কোন ফুটবল দলকে সমর্থন করি বা কোন ছুটির অভিজ্ঞতা মনে রয়েছে, সেগুলো উত্তর নির্বাচনে কাজ করে। এসব পছন্দের তালিকা মনে রাখি ও কথায় কথায় সেগুলো বলি।

পছন্দের আরেকটি কারণ হলো সহজ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কৌশল বা সহজীকরণ। পৃথিবীতে এত বিচিত্র পছন্দের জিনিস আছে যে, সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্লান্তিকর হয়। তাই মস্তিষ্ক শর্টকাট পদ্ধতি ব্যবহার করে। শর্টকাট হিসেবে মস্তিষ্ক পছন্দের জিনিসগুলোকে বেছে নেয়। রেস্টুরেন্ট বা ছুটি কাটানোর জায়গা নির্বাচন, এমনকি কোন পডকাস্ট শুনবেন, সেসব ক্ষেত্রে পছন্দের জিনিসের দিকেই ঝুঁকে পড়ি। এটা সুবিধাজনক ঠিকই, তবে নতুন কিছু চেষ্টা করে দেখার সুযোগ বা সাহসিকতার জন্য এতটা দুর্দান্ত নয়। বিশেষ করে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পছন্দের প্রবণতা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। বাবা-মায়ের যদি একটি সন্তানের প্রতি আরেক সন্তানের চেয়ে বেশি ঝোঁক থাকে অথবা কোনো কর্মকর্তার যদি একজন কর্মচারীকে বেশি পছন্দ করেন, তাহলে তা অন্যায় ও বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে। ব্যক্তি-পছন্দ পক্ষপাতিত্ব তৈরি করে,  আর  পক্ষপাত দুর্নীতি ও বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে। সূত্র: বিবিসি

জাহ্নবী