ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

তারেকবিদ্বেষীরা নির্বাচনে আসতে নতুন প্ল্যাটফর্ম করছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:০০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:২৬ এএম
তারেকবিদ্বেষীরা নির্বাচনে আসতে নতুন প্ল্যাটফর্ম করছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না, তারা নির্বাচনে আসতে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির কথিত চেয়ারপারসন তারেক রহমান রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন। এখন আবার তিনি রাজনীতির মাঠ গরম করছেন। তিনি একেক সময় একেক ঘোষণা দিচ্ছেন। ২৮ অক্টোবর সরকার পরিবর্তন হবে, তারপর বিএনপি যেভাবে চাইবে সেভাবেই দেশ চলবে- এমন ঘোষণাও তিনি দিয়েছিলেন।’ 

বিএনপি নির্বাচনে না এলে তো নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে না। সাংবাদিকদের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারেক রহমানকে যারা নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না এবং তারেকের নেতৃত্ব মানতে যাদের কষ্ট হচ্ছে, তারাই নির্বাচনে আসবেন বলে আমরা জানি। নির্বাচনে আসার জন্য তারা এরই মধ্যে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছেন। আপনারা দেখেছেন, বিএনপির যে নেতৃত্ব, তা দলটির অনেকের পছন্দ না। যে কারণে তারা নতুন দল গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার বিএনপিরও অনেকেই প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জেনেছি।’

নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ আছে কি না, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সেটি আছে কি না, আপনারা দেখবেন। রাজনৈতিক দলগুলো তো প্রচার চালাবেই। তারা নিজেদের প্রার্থী নিয়ে আনন্দ করবে, উৎসব করবে।’

নির্বাচনকে ঘিরে কোনো নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো খবর পাইনি। আর নাশকতা কেবল বাংলাদেশের মানুষ না, বিশ্বের কোনো সভ্য দেশের মানুষ পছন্দ করে না। যতই নাশকতা করবে, ততই জনবিচ্ছিন্ন হবে। এতে তাদের ভাগ্যে জনসমর্থনের চেয়ে ধিক্কার জুটবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, মানুষ সেটিই চাচ্ছে। সেই আলোকিত বাংলাদেশ থেকে কেউ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চাচ্ছে না। নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের মানুষকে নির্বাচিত করতে মানুষ তৈরি হয়ে আছে।’

নির্বাচনে সহিংসতার হলে আগাম প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, নির্বাচনে পরাজিত হবে জেনেই তারা আসছে না। ২০০৮ সালে তারা ৩০টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচনে আসেনি। তারপর জ্বালাও-পোড়াও করল। তারা সারা বাংলাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে।’

হরতাল-অবরোধ স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বিএনপি এখন কঠোর আন্দোলন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেই কঠোর আন্দোলন কী আমি জানি না। আমরা তো দেখলাম তারা ট্রেনের লাইন কাটার জন্য গিয়েছিল। পরে জনগণ তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ তাদের ধরে পুলিশে দিয়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে, দেশের মানুষ সহিংসতা পছন্দ করে না। যেখানে জনসমর্থন নেই, সেখানে এ ধরনের চিন্তা কাম্য নয়।’

আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘মানুষ যখন বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তখন তারা নিশ্চিত যে, কোনোদিন নির্বাচনে আসতে পারবে না। যে কারণে তারা কুৎসা রটাচ্ছে ও অবান্তর কথা বলে যাচ্ছে। একটা কথা জোর দিয়ে বলতে পারি, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী সঠিক সময়ই নির্বাচন হবে। দেশের মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ চলে এসেছে। সবাই নিজেদের প্রার্থীকে কীভাবে বিজয়ী করা যায়, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করছে। কে নির্বাচনে আসল না, বা কে কী বলল, তা নিয়ে মানুষের কোনো উদ্বেগ নেই।’

এমএ/

 

রাষ্ট্রপতির কাছে ৩ দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩১ পিএম
রাষ্ট্রপতির কাছে ৩ দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করছেন গ্রিসের অ্যালিকি কৌতসোমিটোপোলু। ছবি: পিআইডি

বাংলাদেশে নিযুক্ত তিনজন অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।

সোমবার (১ জুলাই) বঙ্গভবনে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত এই তিন রাষ্ট্রদূত পৃথক সময়ে এ পরিচয়পত্র পেশ করেন।

এই তিন অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হলেন- লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্রের ডায়ানা মিকেভিসিয়েন, গ্রিসের অ্যালিকি কৌতসোমিটোপোলু এবং মালাউইয়ের লিওনার্ড মেনগেজি।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রদূতদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি সবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয়।

পরিচয়পত্র পেশ করছেন লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্রের ডায়ানা মিকেভিসিয়েন

বাংলাদেশ সবসময় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, ঢাকায় তাদের অবস্থানের সময় এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে।

বাংলাদেশকে বিপুল সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও উল্লেখিত দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সব রকম সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি আহ্বান জানান। 

রাষ্ট্রপতি দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং বাণিজ্য প্রতিনিধিদলসহ বেসরকারি এবং সরকারি উভয় প্রতিনিধিদের উচ্চ পর্যায়ের পারস্পরিক সফর-বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশ ওষুধ, তৈরি পোশাক (আরএমজি), চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য ইত্যাদিসহ বিশ্বমানের মানের পণ্য উৎপাদন করে থাকে এবং ওই দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা এখান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানির বিবেচনা করতে উদ্যোক্তাদেরকে আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।

পরিচয়পত্র পেশ করছেন মালাউইয়ের লিওনার্ড মেনগেজি

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন যাতে বাংলাদেশ একটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর সফলভাবে জিএসপি+ বাণিজ্য সুবিধা অর্জন করতে পারে।
 
রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তারা ঢাকায় নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।

বৈঠকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস

অমিয়/

অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:০১ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম
অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে অল্প সময়ে কম খরচে বেশি মানুষকে সংক্রমিত করা যায়, তাই জঙ্গি তৎপরতা রোধে পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

সোমবার (১ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। 

অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা পুলিশের বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ অল্প সময়ের ভেতরে অল্প খরচে বেশি মানুষকে সংক্রমিত করা যায়। এক্ষেত্রে পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি সমাজের সব শ্রেণির মানুষের এগিয়ে আসতে হবে। 

তিনি বলেন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সচেতন শ্রেণির মানুষ ও অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে এবং এগিয়ে আসতে হবে। সন্তান কীভাবে চলছে, কার সঙ্গে চলছে, কতক্ষণ তার সন্তান মোবাইলে থাকছে, একা একা থাকছে- সবকিছু অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈষয়িক সমস্যা। বাংলাদেশেও এর থেকে মুক্ত নয়। এরপরও বাংলাদেশ পুলিশের সিটিটিসি, এটিইউ ও জঙ্গি দমনে অন্যান্য বাহিনীর দক্ষতা ও দূরদর্শিতা বাংলাদেশকে সুন্দর অবস্থায় রেখেছে। জঙ্গি দমনে বিশ্বে রোল মডেল পরিচিতি পেয়েছে। 

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে দেখে থাকি জঙ্গি আক্রমণের পরে অপারেশন হয় কিন্তু বাংলাদেশেই একমাত্র উদাহরণ যে, জঙ্গি আক্রমণ হওয়ার তথ্য পুলিশের কাছে ছিল এবং ইন্টেলিজেন্স পুলিশিং করে জঙ্গিদের অ্যাটাক করতে পেরেছি এবং অনেক ক্ষেত্রেই নির্মূল করতে পেরেছি।’ 

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামানসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

অমিয়/

ভারী বর্ষণের সতর্কতা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
ভারী বর্ষণের সতর্কতা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রবিবার (৩০ জুন) আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (২৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবল রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে ও বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

লাগাতার কর্মবিরতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২৮ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৫ পিএম
লাগাতার কর্মবিরতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা
বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: খবরের কাগজ

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।

সোমবার (১ জুলাই) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা একযোগে এই কর্মসূচি পালন করছেন।

ফলে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। 

রবিবারও (৩০ জুন) দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। নতুন কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

এ সময় ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রস্তাবিত এই স্কিম বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাও এর ভুক্তভোগী হবেন। আমাদের আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষার পক্ষে এবং উচ্চশিক্ষা-ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে। তাই দেশ ও জাতির প্রয়োজনে সবাইকে এক হতে হবে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান জানাব, তারা যেন দল-মত নির্বিশেষে এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

সংগঠনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি আমাদের আত্মমর্যাদার লড়াই। আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছি বিষয়টি সুরাহা করার জন্য। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাইনি। দেশের ৩৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। একযোগে তারাও এই কর্মসূচি পালন করবে।’ 

প্রত্যয় স্কিম থেকে অন্তর্ভুক্তি বাতিল ছাড়া আরও দুটি দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। সেগুলো হলো- শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন এবং প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি।

ঢাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনে ৯ কর্মসূচি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের জন্য ৯টি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। সেগুলোর হলো- সব বিভাগের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা; অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস বন্ধ রাখা; সব পরীক্ষা বর্জন করা (মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষা); বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখা এবং সব ধরনের সভা বন্ধ (একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা); ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখা এবং নবীনবরণ-সিলেকশন বোর্ডের সভা বন্ধ রাখা। এ ছাড়া ইনস্টিটিউট ও গবেষণা সেন্টারের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ, হলের প্রাধ্যক্ষ অফিস এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ রাখা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান। তিনি বলেন, ‘বিভাগগুলোকেও আমরা জানিয়ে দিয়েছি। সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাসও বন্ধ থাকবে। সব পরীক্ষা বর্জন করা হবে। মিডটার্ম, ফাইনাল পরীক্ষা কিছু অনুষ্ঠিত হবে না। কোনো দপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কাজ করবেন না।’

সেবা না দেওয়ার ঘোষণা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় অচলের হুমকি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা মো. আব্দুল মোতালেব। রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা হলে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হবে। পানি, বিদ্যুৎ থাকবে না; টয়লেট পরিষ্কার, ময়লা পরিষ্কার করার কেউ থাকবে না, গাড়ি চলবে না, অফিস চলবে না, কোনো কিছু চলবে না, সব বন্ধ হয়ে যাবে। কিছু ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী সরকারকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্রত্যয় নামে একটা স্কিম ঘোষণা করেছে। অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মহিউদ্দীন খন্দকার খবরের কাগজকে বলেন, ‘দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে ৭ জুলাই কমিটির সঙ্গে বসে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত: শিক্ষামন্ত্রী
কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হলে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। 

রবিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এইচএসসি পরীক্ষার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশনের আওতায় কারা আসবেন, সেটা সরকারের নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটার সঙ্গেই আছে। শিক্ষকরা দাবি-দাওয়া সরকারের কাছে জানাচ্ছেন, সরকারই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখানে কিছু করার নেই।

পর্যায়ক্রমে সবাই আসবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনা হচ্ছে সেটাও নয়। সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এ পেনশনের আওতায় আসবেন। হয়তো এ বছর শিক্ষকরা আসছেন, আগামী বছর অন্যরা আসবেন। 

ঢাবির অধিভুক্ত-উপাদানকল্প কলেজের পরীক্ষার সূচি অপরিবর্তিত
কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজের পরীক্ষাগুলো পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও কার্জন হল পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষাগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো। উল্লেখ্য, অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজের পরীক্ষাসমূহ পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন ঢাবি ও জবি প্রতিনিধি]

ভুল চিকিৎসায় জীবন গেল ঐশীর, ২ চিকিৎসকের শাস্তি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
ভুল চিকিৎসায় জীবন গেল ঐশীর, ২ চিকিৎসকের শাস্তি
অধ্যাপক কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) ডা. মো. নুরুল আজিম ও ডা. তানজিমা তাজরিন

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) গত বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকত হোসেনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুজন চিকিৎসকের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। ছোট একটু জায়গাজুড়ে হলুদ রঙের ওপর কালো কালিতে ছাপানো কতগুলো অক্ষর। পত্রিকায় ছাপানো আরও গা-শিউরে ওঠা খবরের আড়ালে হয়তো খেয়ালও করে ওঠা হয়নি অনেকের। তবে এই বিজ্ঞপ্তি একজন বাবা ও মায়ের তিন বছরের অপেক্ষা ও সংগ্রামের ফল। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্নেল ডা. অধ্যাপক মো. নুরুল আজিমের (অবসরপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে অভিযোগকারী আহমেদ রশীদ ও শর্মিষ্ঠা আহমেদ ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাকে তাদের একমাত্র মেয়ে শ্রেয়সী আহমেদ ঐশীর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে কাউন্সিলে অভিযোগ করেছিলেন। কাউন্সিলের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, চিকিৎসক নুরুল আজিম অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অবহেলা করেছেন।

বিএমডিসি আরও বলেছে, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক তানজিমা তাজরিন মূলত নুরুল আজিমের তত্ত্বাবধানে কাউন্সেলিংয়ের কাজ করতেন। এ ক্ষেত্রে অদক্ষতা, অপেশাদার আচরণ করার পাশাপাশি তিনি পেশাগত কাঠামো মেনে চলেননি। এ ছাড়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে তার ব্যবস্থাপনাবিষয়ক জ্ঞানেও উল্লেখযোগ্য ঘাটতি প্রমাণিত হয়েছে। কাউন্সিলের ২০১০ সালের আইনের আওতায় বিএমডিসি নুরুল আজিম ও তানজিমা তাজরিনের রেজিস্ট্রেশন যথাক্রমে পাঁচ বছর ও এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে; যা চলতি বছরের ২৮ জুন থেকে কার্যকর হবে। এ সময়ে চিকিৎসক হিসেবে কোথাও চিকিৎসাসেবা দিতে পারবেন না তারা। এমনকি তারা নিজেদের চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতে পারবেন না।

ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মাত্র ১৭ বছর বয়সে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক রাস্তা বেছে নেন প্রাণচঞ্চল ঐশী। পুরো নাম শ্রেয়সী আহমেদ ঐশী। ঐশীর মৃত্যুর পর ফেসবুকে মেয়েকে নিয়ে তার বাবা আহমেদ রশীদের আবেগঘন পোস্ট স্পর্শ করেছিল গোটা দেশবাসীকে। কলিজার টুকরো মেয়ের মৃত্যুর পর মুষড়ে পড়েছিলেন বাবা আহমেদ রশীদ ও মা শর্মিষ্ঠা আহমেদ। তবে মেয়ের আত্মহত্যাকে কখনোই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি তারা। তারা বরাবরই বলে আসছিলেন, ঐশী আত্মহত্যা করেনি, তাকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ঐশীর মৃত্যুর দুই বছর পর পোক্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে ২০২১ সালের ১১ মার্চ এই ঘটনার বিচার চেয়ে বিএমডিসিতে অভিযোগ করেছিলেন তারা। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন বিএমডিসি। তদন্তের রিপোর্টে অবশেষে সত্যতা মেলে বাবা-মায়ের অভিযোগের। দোষী সাব্যস্ত করা হয় সেই দুই চিকিৎসককে যাদের তত্ত্বাবধানে ঐশী চিকিৎসায় ছিলেন প্রায় আড়াই মাস। 

ঢাকার দিল্লি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল ঐশী। মাত্র কয়েক মাস পর ছিল ‘ও’ লেভেলের পরীক্ষা। পড়াশোনায় চেষ্টার অন্ত ছিল না। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই বাবা-মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে বলছিল তার পড়াশোনা মনে থাকছে না। পরীক্ষার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, দুশ্চিন্তা বাড়ে ঐশীর। তাই মেয়েকে সাইকিয়াট্রিস্ট কর্নেল ডা. অধ্যাপক মো. নুরুল আজিমের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। 

ঐশীকে দেখে তিনি সেদিন কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসিভ ওষুধ লিখে দেন। সঙ্গে তারই তত্ত্বাবধানে তরুণ চিকিৎসক ডা. তানজিমা তাজরিনের কাছে কাউন্সিলিং নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওষুধ সেবনের মাত্র ১২ দিনের মাথায় প্রথমবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে ঐশী। তারপর তাকে আবারও ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ওষুধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন তিনি। ওষুধ সেবনের আড়াই মাসের মাথায় আত্মহত্যা করে ১৭ বছর বয়সী ঐশী। আত্মহত্যার মাত্র কিছু সময় আগেও তার বাবাকে ইউনিমার্ট থেকে চেরি নিয়ে আসতে বলেছিল।

মেয়ের মৃত্যুকে বরাবরই ‘মেডিকেল ইনডিউসড সুইসাইড’ বলে দাবি করেছেন তার বাবা আহমেদ রশীদ। মেয়ের মৃত্যুর পর পর এক আত্মীয়ের কাছে জানতে পারেন ঐশীকে দেওয়া একটি ওষুধের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্রেককারী উপাদান রয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেন আহমেদ রশীদ। এবার মেয়েকে দেওয়া সব ওষুধ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি। কথা বলেন দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। তিনি জানতে পারেন কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে, এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ওষুধগুলোই মেয়েটিকে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। শুধু একটি নয়, বরং ঐশীকে দেওয়া চারটে ওষুধের মধ্যেই ছিল আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্রেককারী উপাদান। এসব ওষুধের নির্দেশিকায় স্পষ্ট উল্লেখ ছিল এই ওষুধ বয়সন্ধিকালে প্রয়োগের উপযোগী নয়। তবুও ডাক্তার এই ওষুধের হাই ডোজ দিয়েছিলেন ঐশীকে। ঐশীর বাবা-মা মেয়ের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের অবহেলা আর অপেশাদারত্বকেই দায়ী করেন।