ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

ভুল চিকিৎসায় জীবন গেল ঐশীর, ২ চিকিৎসকের শাস্তি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
ভুল চিকিৎসায় জীবন গেল ঐশীর, ২ চিকিৎসকের শাস্তি
অধ্যাপক কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) ডা. মো. নুরুল আজিম ও ডা. তানজিমা তাজরিন

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) গত বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকত হোসেনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুজন চিকিৎসকের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। ছোট একটু জায়গাজুড়ে হলুদ রঙের ওপর কালো কালিতে ছাপানো কতগুলো অক্ষর। পত্রিকায় ছাপানো আরও গা-শিউরে ওঠা খবরের আড়ালে হয়তো খেয়ালও করে ওঠা হয়নি অনেকের। তবে এই বিজ্ঞপ্তি একজন বাবা ও মায়ের তিন বছরের অপেক্ষা ও সংগ্রামের ফল। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্নেল ডা. অধ্যাপক মো. নুরুল আজিমের (অবসরপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে অভিযোগকারী আহমেদ রশীদ ও শর্মিষ্ঠা আহমেদ ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাকে তাদের একমাত্র মেয়ে শ্রেয়সী আহমেদ ঐশীর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে কাউন্সিলে অভিযোগ করেছিলেন। কাউন্সিলের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, চিকিৎসক নুরুল আজিম অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অবহেলা করেছেন।

বিএমডিসি আরও বলেছে, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক তানজিমা তাজরিন মূলত নুরুল আজিমের তত্ত্বাবধানে কাউন্সেলিংয়ের কাজ করতেন। এ ক্ষেত্রে অদক্ষতা, অপেশাদার আচরণ করার পাশাপাশি তিনি পেশাগত কাঠামো মেনে চলেননি। এ ছাড়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে তার ব্যবস্থাপনাবিষয়ক জ্ঞানেও উল্লেখযোগ্য ঘাটতি প্রমাণিত হয়েছে। কাউন্সিলের ২০১০ সালের আইনের আওতায় বিএমডিসি নুরুল আজিম ও তানজিমা তাজরিনের রেজিস্ট্রেশন যথাক্রমে পাঁচ বছর ও এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে; যা চলতি বছরের ২৮ জুন থেকে কার্যকর হবে। এ সময়ে চিকিৎসক হিসেবে কোথাও চিকিৎসাসেবা দিতে পারবেন না তারা। এমনকি তারা নিজেদের চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতে পারবেন না।

ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মাত্র ১৭ বছর বয়সে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক রাস্তা বেছে নেন প্রাণচঞ্চল ঐশী। পুরো নাম শ্রেয়সী আহমেদ ঐশী। ঐশীর মৃত্যুর পর ফেসবুকে মেয়েকে নিয়ে তার বাবা আহমেদ রশীদের আবেগঘন পোস্ট স্পর্শ করেছিল গোটা দেশবাসীকে। কলিজার টুকরো মেয়ের মৃত্যুর পর মুষড়ে পড়েছিলেন বাবা আহমেদ রশীদ ও মা শর্মিষ্ঠা আহমেদ। তবে মেয়ের আত্মহত্যাকে কখনোই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি তারা। তারা বরাবরই বলে আসছিলেন, ঐশী আত্মহত্যা করেনি, তাকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ঐশীর মৃত্যুর দুই বছর পর পোক্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে ২০২১ সালের ১১ মার্চ এই ঘটনার বিচার চেয়ে বিএমডিসিতে অভিযোগ করেছিলেন তারা। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন বিএমডিসি। তদন্তের রিপোর্টে অবশেষে সত্যতা মেলে বাবা-মায়ের অভিযোগের। দোষী সাব্যস্ত করা হয় সেই দুই চিকিৎসককে যাদের তত্ত্বাবধানে ঐশী চিকিৎসায় ছিলেন প্রায় আড়াই মাস। 

ঢাকার দিল্লি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল ঐশী। মাত্র কয়েক মাস পর ছিল ‘ও’ লেভেলের পরীক্ষা। পড়াশোনায় চেষ্টার অন্ত ছিল না। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই বাবা-মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে বলছিল তার পড়াশোনা মনে থাকছে না। পরীক্ষার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, দুশ্চিন্তা বাড়ে ঐশীর। তাই মেয়েকে সাইকিয়াট্রিস্ট কর্নেল ডা. অধ্যাপক মো. নুরুল আজিমের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। 

ঐশীকে দেখে তিনি সেদিন কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসিভ ওষুধ লিখে দেন। সঙ্গে তারই তত্ত্বাবধানে তরুণ চিকিৎসক ডা. তানজিমা তাজরিনের কাছে কাউন্সিলিং নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওষুধ সেবনের মাত্র ১২ দিনের মাথায় প্রথমবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে ঐশী। তারপর তাকে আবারও ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ওষুধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন তিনি। ওষুধ সেবনের আড়াই মাসের মাথায় আত্মহত্যা করে ১৭ বছর বয়সী ঐশী। আত্মহত্যার মাত্র কিছু সময় আগেও তার বাবাকে ইউনিমার্ট থেকে চেরি নিয়ে আসতে বলেছিল।

মেয়ের মৃত্যুকে বরাবরই ‘মেডিকেল ইনডিউসড সুইসাইড’ বলে দাবি করেছেন তার বাবা আহমেদ রশীদ। মেয়ের মৃত্যুর পর পর এক আত্মীয়ের কাছে জানতে পারেন ঐশীকে দেওয়া একটি ওষুধের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্রেককারী উপাদান রয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেন আহমেদ রশীদ। এবার মেয়েকে দেওয়া সব ওষুধ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি। কথা বলেন দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। তিনি জানতে পারেন কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে, এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ওষুধগুলোই মেয়েটিকে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। শুধু একটি নয়, বরং ঐশীকে দেওয়া চারটে ওষুধের মধ্যেই ছিল আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্রেককারী উপাদান। এসব ওষুধের নির্দেশিকায় স্পষ্ট উল্লেখ ছিল এই ওষুধ বয়সন্ধিকালে প্রয়োগের উপযোগী নয়। তবুও ডাক্তার এই ওষুধের হাই ডোজ দিয়েছিলেন ঐশীকে। ঐশীর বাবা-মা মেয়ের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের অবহেলা আর অপেশাদারত্বকেই দায়ী করেন।

প্রত্যয় স্কিম দ্বিতীয় দিনেও অচল ঢাবি-জবি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
দ্বিতীয় দিনেও অচল ঢাবি-জবি
কর্ম বিরতিতে লাইব্রেরী বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে। গতকাল মঙ্গলবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করেন।

এদিকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার পাশাপাশি লাইব্রেরিও বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে অন্যান্য দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এটা সবার জন্য দুঃখজনক ঘটনা। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে না নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা আশা করব, আমাদের দাবি যখন পূরণ হবে, তখন পর্যন্ত যে সেশনজট বা যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তা আমরা স্পেশাল ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়ে পূরণ করতে পারব।'

সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। এ আন্দোলন নিয়ে অনেক ধরনের অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ আন্দোলন করা হচ্ছে। মূলত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যই এ আন্দোলন করছেন। আর প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিম্মি করা হচ্ছে।

এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঢাবির কর্মচারী সমিতির সভাপতি সারোয়ার মোর্শেদ বলেন, ‘এই আন্দোলন সফলভাবে শেষ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। প্রধানমন্ত্রীকে কে বা কারা এমন ভুলভাল বুঝিয়েছে, আমরা জানি না। বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য আন্দোলন করে ছাত্রত্ব হারিয়েছিলেন। তাদের প্রতি এই অন্যায় স্কিম মেনে নেওয়ার মতো নয়। প্রত্যয় স্কিম বাতিল করা না হলে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাবিকে অচল করে দেব, পুরো বাংলাদেশ অচল করে দেব।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও বিজ্ঞান লাইব্রেরি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির মূল ফটকে ঝুলছে কর্মবিরতির ব্যানার। যেখানে লেখা, ‘পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে ১লা জুলাই ২০২৪ হইতে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি’।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। এর ফলে সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমসহ দাপ্তরিক সব কার্যক্রম। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ফটকে তালা দেওয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তরগুলোতেও একই অবস্থা। শিক্ষকরা দুপুর ১২টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও কর্মকর্তারা সকাল থেকেই কর্মবিরতি দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই আন্দোলনে নেমেছি। যাতে আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আকাশ-পাতাল বৈষম্য তৈরি না হয়। একটি মহল এ আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছানোর জন্য গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আন্দোলন আমাদের স্বার্থে। কিন্তু আসলে এ আন্দোলন ভবিষ্যতে যারা শিক্ষকতায় যোগদান করবে তাদের জন্য।’
পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চলবে

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপত্তি জানানোর পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। তবে এটিতে গোঁজামিল রয়েছে উল্লেখ করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে তিন দফা দাবি আদায়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নং পয়েন্টের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ৮ নং পয়েন্টে যা সংখ্যা দেখিয়েছে সব ঠিক। 

কিন্তু এটার মধ্যে চরম জালিয়াতি রয়েছে। ২০২৪ সালে টাকা জমা করে ৩০ বছর পরে ২০৫৪ সালে পেনশন পাবেন। তাদের হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা পাবেন প্রতি মাসে। এই ৩০ বছরে বেতন বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্ট, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় তার পেনশন হওয়া উচিত ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এটা আমরা বুঝিয়ে দিতে পারব। প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শনির আখড়ার পাটেরবাগ এলাকায় একটি চারতলা ভবনের ছাদের লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে মো. রবিউল হাসান ওসমান (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। 

সোমবার (২ জুন) রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা নিহতের বন্ধু ইসমাইল জানান, ওসমান পাশের আরেকটি বাসায় থাকতেন। রাতে বন্ধু সৈকতের বাসার ছাদে ওঠার সময় তিনি ছাদের লিফটের ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ওসমানের বড় ভাই রাকিবুল বলেন, ‘বাসার পাশেই সে সন্ধ্যার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বের হয়েছিল। পরে খবর পাই ওসমান ছাদ থেকে পড়ে গেছে। পরে আমরা ঢামেক হাসপাতালে এসে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, নিহতের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।

নিহত ওসমান পেশায় দর্জি। যশোর কোতোয়ালি থানার হুসতলা গ্রামের থাই অ্যালুমিনিয়াম দোকানের ব্যবসায়ী হাফিজ মোল্লার ছেলে।  তিনি শনির আখড়ার পাটেরবাগ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

এমপি আনার হত্যা: এবার মোস্তাফিজুরের দায় স্বীকার

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:১১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:১১ এএম
এমপি আনার হত্যা: এবার মোস্তাফিজুরের দায় স্বীকার
ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে (আনার) হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে করা মামলার অন্যতম আসামি মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ জুলাই) এই জবানবন্দি দেন তিনি। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় পুলিশ এদিন আদালতে তাকে হাজির করেন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তা রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত। এ নিয়ে এই মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিলেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল গত ২৬ জুন আনার হত্যায় জড়িত  ফয়সাল আলী সাহাজী ও মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে। পরের দিন ২৭ জুন আদালত তাদের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া যাবেন শুক্রবার

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ এএম
প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া যাবেন শুক্রবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৫ জুলাই শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যাবেন। পরের দিন ৬ জুলাই নির্ধারিত কর্মসূচি শেষে ঢাকায় ফিরবেন তিনি।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব নুর এলাহি মিনা। 

তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবর জিয়ারত ছাড়াও টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে।

সম্পদের হিসাব দিতে মতিউর ও স্ত্রী-সন্তানকে দুদকের নোটিশ

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৯ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৯ এএম
সম্পদের হিসাব দিতে মতিউর ও স্ত্রী-সন্তানকে দুদকের নোটিশ
এনবিআরের সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ। ছবি: সংগৃহীত

ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে মতিউরের দুই স্ত্রী- লায়লা কানিজ ও শাম্মী আখতার শিভলী, প্রথম পক্ষের বড় সন্তান আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতাকে ২১ দিন সময় বেঁধে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে নিজ ও তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তির নামে থাকা যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুদকের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন এই নোটিশ জারি করেছেন। দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মতিউর রহমানের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গত ৪ জুন সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরে ২৩ জুন দুদকের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হলে তাদের নামে থাকা অর্থসম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ, বিএসইসি, সব সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিসে চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের চিঠি পেয়ে বিএফআইইউ ও বিএসইসি স্ব-উদ্যোগে মতিউর ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। পাশাপাশি অন্তত ২০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ১৬টি বিও অ্যাকাউন্টের তথ্য দুদকে পাঠিয়েছে। এদিকে ঢাকার তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স, সাভার, নরসিংদীর রায়পুরা, গাজীপুর সদর ও ময়মনসিংহের ভালুকাসহ বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে অন্তত ৫৫টি দলিলের তথ্য-উপাত্ত দুদকে এসেছে।