ভোট গ্রহণের দিন নাশকতার কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একই সঙ্গে গুপ্তহত্যা রোধে গোয়েন্দা বাহিনী সতর্ক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সব সময় নাশকতা করে আসছে। নাশকতা দিয়েই তাদের জন্ম। কাজেই তারা এগুলো করবেই। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যথাযথভাবে কাজ করছে বলেই তারা (নাশকতাকারীরা) এসব কর্মকাণ্ডে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। আমি মনে করি নাশকতাকারীদের এ দেশের জনগণ প্রতিহত করবে। জনগণ তাদের কোনো রকম আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না। জনগণ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চায় না।’
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আগাম সতর্কতা নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত তেমন কিছু আসেনি। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী যেসব তথ্য দিচ্ছেন, সেগুলো নিয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে তেমন কোনো খবর আসেনি।’
‘বিএনপি গুপ্তহত্যা চালাতে পারে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন আশঙ্কা প্রকাশ প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও আমাদের পার্টির সাধারণ সম্পাদকের কাছে অবশ্যই খবর আরও বেশি থাকে। কারণ তিনি রাজনীতি করেন। তার কাছে যথেষ্ট তথ্য থাকে। সে তথ্যের ভিত্তিতেই তিনি বলেছেন। তবে আমাদের কথা হলো, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী সজাগ রয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে গেলে কিংবা ঘটনার আগেই আমরা তাদের ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
নির্বাচন কমিশন নির্বাচনবিরোধী প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যেন না হয়, নির্বাচনে যেন কেউ অংশগ্রহণ না করে- সে ধরনের প্রচারণা শুরু করেছে বিএনপি নামক একটি রাজনৈতিক দল। তারা ভাঙচুর করছে, মানুষ হত্যা করছে, সম্পত্তি বিনষ্ট করছে, হরতাল-অবরোধ কতকিছুই করে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ কোনো কিছুতেই অ্যাটেনশন দিচ্ছে না।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘তাদের (বিএনপির) সঙ্গে নাম না জানা আরও দুই একটি দল এ ধরনের লিফলেট ছড়াচ্ছে। সেগুলো খুবই সামান্য পরিসরে। মাঝে মাঝে দু-এক জায়গায় আমরা খবর পাচ্ছি। আমাদের পুলিশ, বিজিবি, গোয়েন্দা বাহিনী এগুলো ধৈর্য সহকারে দেখছেন। এগুলো নিশ্চয় আমাদের নির্বাচন কমিশনও দেখছেন। এগুলো যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তবে নিশ্চয়ই নির্বাচন কমিশন থেকে একটা নির্দেশনা আসবে, তখনই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা যা দেখছি দু-একজন করছে কিংবা ঘোষণা দিচ্ছে। এগুলো অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল, নির্বাচন কমিশন যে ঘোষণা দিয়েছে, সেটার বিপরীতমুখী কর্মকাণ্ড। এগুলো নির্বাচন বানচালের কর্মকাণ্ড, এগুলো অবশ্যই গর্হিত অপরাধ। আমি মনে করি, এগুলো যদি সীমা অতিক্রম করে নিশ্চয়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।’
ভোটের টার্ন আউট ( ভোটের হার) কেমন হবে বলে মনে করছেন?- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই ভালো টার্ন আউট হবে। সারা পৃথিবীর দিকে যদি তাকান, এখন উন্নত দেশের টার্ন আউটগুলো দেখবেন, সেগুলোর ফিগার কী রকম আসে। জাপান এবং অন্য দেশগুলো যদি দেখেন, সেখানে টার্ন আউট কেমন, এর থেকে ইনশাআল্লাহ্ অনেক অনেক বেশি হবে।’
আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২০ জন। মানবাধিকার পরিস্থিতিকে অস্বস্তিকর বলছেন তারা, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা মানবাধিকার কমিশন রয়েছে, তারা কী বলে সেটা লক্ষ্য রাখবেন। বিদেশ থেকে কী বলল, কোথা থেকে কী বলল- তথ্যভিত্তিক কথা অনেক সময়ই আসে না। এর আগে ৭৮ জন গুম হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর পাঠিয়েছিল। আমরা দেখেছি এর মধ্যে ২৫ জন বিএনপির রাজনীতি করছে কিংবা কারাগারে আছে, আত্মগোপন করেছে, বিদেশে পালিয়ে আছে। অনেককে আমরাই খুঁজছি, এগুলো গুম নয়। এরা অনেক সময় তথ্যের বাইরে কিছু কথা বলে থাকে।’
এমএ/