![বাংলাদেশে সহায়তা অব্যাহত রাখবে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি](uploads/2024/01/18/1705591542.abul_Hasan_mahmud_ali.jpg)
বাংলাদেশের আর্থিক খাতে সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। অপরদিকে সঠিক নীতি প্রণয়নেরও ওপর গুরুত্বারোপ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বহুজাতিক দুই দাতা সংস্থা তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয় পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর বহুজাতিক দুই দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এটাই তার প্রথম বৈঠক।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘তারা এসেছেন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে। পরিচিত হওয়ার জন্য এসেছেন।’ এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট একবার এসেছিলেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। আমিই তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। রোহিঙ্গারা তো এখনো যায়নি, যে কারণে সেই সম্পর্ক আছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের জন্য কাজ করে। তারা বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায়।’
বিশ্বব্যাংক কি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সংস্কার চাচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংস্কার তারা চাচ্ছে। সংস্কার তো অবশ্যই দরকার। তারা বলেছে, বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। আমরা একসঙ্গে কাজ করা শুরু করে দিয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সহায়তা প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক বলেছে তারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে তাদের মনোভাব ইতিবাচক।’
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে বৈঠক: বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল্লায়ে শেখের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠক শেষে কান্ট্রি ডিরেক্টর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের একটা ভালো বৈঠক হয়েছে। আমরা বাংলাদেশকে সহায়তার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছি। আপনারা জানেন, এই সহায়তা অনেক বড় ও জোরালো। আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশকে সহায়তায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার সহায়তা করেছি- এ কথা উল্লেখ করে কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ‘আরও ১৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সহায়তা করা হবে।’
বাংলাদেশের জন্য এখন অর্থায়ন দরকার উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ২০৪১ সালের পরিকল্পনা সামনে রেখে অর্থ-সহায়তা যেমন দরকার, তেমনই সংস্কারও করতে হবে।’
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে বৈঠক: বিকেলে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডমন গিনটিং। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর বাংলাদেশকে বাজেট সাপোর্ট দিয়ে থাকে এডিবি। বিদায়ী বছর ৮০ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে।’ আগামীতেও এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনে করেন, ‘বাংলাদেশর অর্থনীতিতে যে সংকট চলছে তা নিরসন করতে হলে সঠিক নীতি প্রণয়ন করা খুবই দরকার।’ এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সঠিক পথেই রয়েছে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর আস্থা ফিরে আসবে। এতে করে বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। উন্নতি হবে বিনিয়োগের পরিবেশ। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে জিডিপির যে প্রবৃদ্ধি রয়েছে সেটা খুবই প্রশংসার যোগ্য। তবে মূল সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশে বিনিয়োগ কমে গেছে। সরকারকে এ বিষয়ে বেশি নজর দিতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। আমি মনে করি ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো অবস্থান। তবে অর্থনীতিতে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সরকারের এ চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সঠিক নীতি।’
এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এডিবি। শেখ হাসিনিার সরকার ফিরে আসাতে তারা (এডিবি) খুশি।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন থেকে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতির সঙ্গে সমন্বয় থাকবে।’