পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার ধার্য দিনে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হচ্ছেন না। তিনি পারিবারিক কারণ দেখিয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।
বুধবার (৫ জুন) বিকেলে তার আইনজীবীর মাধ্যমে এক মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন তিনি। আবেদনটি দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে এসেছে বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেনজীর আহমেদ সময় চেয়ে আবেদন পাঠিয়েছেন। সেটি দাপ্তরিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এখন আবেদনটি বিবেচনা করবেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা। তবে দুদকের আইন অনুযায়ী, কেউ এ ধরনের আবেদন করলে ১৫ দিন সময় পাবেন। এ ধরনের আবেদন একবারই মঞ্জুর করা হয়।’
এ ব্যাপারে দুদক কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেনজীর আহমেদকে ৬ জুন (আজ) হাজির থাকতে বলা হয়েছিল। তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে ডাকা হয়েছে ৯ জুন। কিন্তু সময় চেয়ে তারা আবেদন করেছেন। তাদের পক্ষে এক আইনজীবী চারটি আবেদন দুদকে জমা দিয়েছেন। যেহেতু আইন অনুযায়ী এ ধরনের আবেদন মঞ্জুর করার সুযোগ আছে। তাই বেনজীর আহমেদকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তিনি দুদকের তলবে হাজির না হলে তার বক্তব্য ছাড়াই অনুসন্ধান কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধানকাজ সম্পন্ন করা হবে।
গত ২১ এপ্রিল এ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা হলেন উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী এবং জয়নাল আবেদীন। দুদকের বিধিবিধান অনুযায়ী, ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে এই অনুসন্ধান শেষ করতে হবে। অনুসন্ধান কর্মকর্তারা চাইলে আরও ১৫ কর্মদিবস বাড়িয়ে নিতে পারবেন। ফলে ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ হওয়ার কথা। এদিকে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশে নাকি বিদেশে আছেন, সে ব্যাপারে যথাযথ তথ্য নেই দুদকের কাছে। এ বিষয়টি নিয়ে ভাবছেনও না দুদক কর্মকর্তারা। দুদক সূত্র জানায়, নিয়মানুযায়ী বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বাসার ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। তারা এতে সাড়া না দিলে বা অসহযোগিতা করলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের চারটি ফ্ল্যাটসহ ৬২১ বিঘা জমি ক্রোক, ব্যবসায়িক শেয়ার ও বিও অ্যাকাউন্টসহ অর্ধশতাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতোমধ্যে আদালতের মাধ্যমে ফ্রিজ করা হয়েছে। আরও অর্থ-সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য আসছে। দেশের বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জমিজমাসহ স্থাবর সম্পদের তথ্য এসেছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকেও এসেছে আর্থিক বিবরণী। এ ছাড়া অর্থ পাচার সম্পর্কে তথ্য পেতে দুদকের মানি লন্ডারিং শাখার কর্মকর্তাদেরও সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।