![উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে আ.লীগ নেতার আপত্তিকর বক্তব্য](uploads/2024/05/04/Up-Election-1714803856.jpg)
‘শুধু আনারুল ভাইয়ের মার্কায় সিল মারতে দেওয়া হবে’ মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন বুলবুলের এমন বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় বইছে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও কর্মীদের মাঝে। মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রীর বড় ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন। প্রচার সভায় তিনি বলেছেন, ‘৮ তারিখের নির্বাচনে শুধু আনারুল ইসলামের (মোটরসাইকেল প্রতীক) ছাড়া অন্য কোনো এজেন্ট থাকতে পারবে না। এই আশরাফপুর গ্রামে কোনো এজেন্ট থাকবে না। শুধু আনারুল ভাইয়ের মার্কায় সিল মারা হবে। আর কোনো মার্কায় সিল মারতে দেওয়া হবে না।’
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের আশরাফপুর গ্রামের নির্বাচনি প্রচার উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় ইকবাল হোসেন এসব কথা বলেন। ৭নং ওয়ার্ড স্কুলপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আয়োজনে ওই মতবিনিময় সভায় দেওয়া তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন বক্তব্যে ভোটারদের মাঝেও প্রভাব পড়েছে।
মতবিনিময় সভায় ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আনারুল ভাই একজন যোগ্য প্রার্থী। উপজেলা চেয়ারম্যান এমন একজনকে করতে হবে, যিনি পুরো উপজেলা আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন। যিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে পারবেন। আনারুল ভাই ছাড়া এ ধরনের আর কোনো প্রার্থী নেই। তাই আজকে সেই ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মতো, ভোট চাই আনারুল ভাইয়ের জন্য। একচেটিয়া ভোট হবে শুধু মোটরসাইকেলে। প্রতিটি সেন্টারে আনারুল ভাই জিতবেন। এই আশরাফপুর গ্রামে কোনো এজেন্ট থাকবে না। শুধু আনারুল ভাইয়ের মোটরসাইকেল মার্কায় সিল মারতে হবে। অন্য কোনো মার্কায় সিল মারতে দেওয়া হবে না।’
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রকাশ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর ভাই ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতির এমন বক্তব্য দেওয়া উচিত হয়নি। এর ফলে উপজেলা নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। এগুলো নির্বাচনি আচরণবিধির লঙ্ঘন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আকারে এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে আনারুল ইসলামের জনপ্রিয়তা ওই এলাকায় অনেক বেশি। তার জনপ্রিয়তার কারণেই অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট পাওয়া যাবে না এমনটা বোঝাতে চেয়েছি। বক্তব্যে কথাগুলো বলতে গিয়ে অন্যভাবে বলা হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি ওইভাবে মনে করার কিছু নেই।’
মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে জেলা কৃষকলীগের সহসভাপতি হাসেম আলী ‘আনারস’ প্রতীকে, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন ‘কাপ-পিরিচ’ প্রতীকে, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মান্নান ‘ঘোড়া’ প্রতীকে এবং আমদহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সদস্য আনারুল ইসলাম ‘মোটরসাইকেল’ প্রতীকে নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন। ভোটে সব প্রার্থী আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা হওয়ায় মতবিরোধ দেখা দিয়েছে দলটির নেতা-কর্মীদের মাঝে।