দোয়া ইবাদতের মূল। দোয়াকারীকে আল্লাহতায়ালা ভালোবাসেন। অনেকে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করেন, ‘দোয়া করি কিন্তু কবুল হয় না।’ বস্তুত দোয়া কবুল হওয়ারও কিছু নিয়মনীতি অছে। তা মেনে দোয়া করলে দোয়া কবুল হওয়ার আশা রাখা যায়। কেননা মুমিনের কোনো দোয়াই বিফল হয় না। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আপনার প্রতিপালক বলেন, আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা মুমিন, আয়াত: ৬০)
দোয়া কবুলের বেশকিছু শর্ত আছে; সেগুলো পূর্ণরূপে পাওয়া গেলে দোয়া কবুল হওয়ার বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। যথা—
সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দোয়া করা: প্রার্থনাকারী আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ও আন্তরিকতা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করে, নিজ অক্ষমতা এবং দুর্বলতা স্বীকার করে দোয়া করা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা একনিষ্ঠচিত্তে তাঁর কাছে দোয়া করো।’ (সুরা গাফির, আয়াত: ১৪)
তওবা করা: অন্যায় স্বীকার করে তা থেকে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাওয়া দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম আলামত। (সুরা কাসাস, আয়াত: ১৬, সুরা নুহ, আয়াত: ১০-১২)
আল্লাহর আনুগত্যে ত্রুটি না করা: আনুগত্যের ত্রুটি দোয়া কবুল না হওয়ার একটি কারণ। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৯-৯০)
বিনম্রচিত্তে দোয়া করা: বিনম্রচিত্তে একনিষ্ঠভাবে দোয়া করতে হবে। বিক্ষিপ্তচিত্ত নিয়ে দোয়া করলে সাড়া পাওয়া যায় না। (মুসলিম, হাদিস: ২৭২২)
দুর্বলতা এবং অভাব প্রদর্শন করে দোয়া করা: সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে দুর্বলতা, অভাব প্রদর্শন এবং তাঁর সামনে মিনতি করে নিচুস্বরে দোয়া করা। (সুরা আরাফ, আয়াত: ৫৫)
খাদ্য, পানীয় ও পোশাক হালাল হওয়া: হারাম ভক্ষণ দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে মানুষেরা! আল্লাহ উত্তম এবং উত্তম ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না। এই হাদিসের শেষাংশে রাসুলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন যে, দীর্ঘ সফর করে, যার এলোমেলো চুল ধূলি-ধূসরিত; সে আকাশের দিকে দুই হাত তুলে বলে, হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক-পরিচ্ছদ হারাম এবং তার শরীর গঠিত হয়েছে হারামে। অতএব, তার দোয়া কীভাবে কবুল করা হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০১৫)
এ ছাড়া গুনাহের কাজে দোয়া না করা, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন না করা এবং তাড়াহুড়া না করা। (মুসলিম, হাদিস: ২৭৪৫)
লেখক: শিক্ষার্থী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী