![মৌসুমি ফল আল্লাহর নেয়ামত](uploads/2023/12/28/1703736076.28-december-1-ok.jpg)
‘আল্লাহতায়ালা আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসেবে। অতএব, আল্লাহর সঙ্গে তোমরা অন্য কাউকেও সমকক্ষ করো না, বস্তুত, এসব তোমরা জানো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২২)
এভাবে কোরআন মাজিদের বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে আল্লাহতায়ালার নেয়ামতসমূহের বর্ণনা। এই নেয়ামতরাজিই তাঁর বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তার পরিচয় বহন করে। এভাবে মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের অনেক সুরার বহু আয়াতে আল্লাহতায়ালা তাঁর বান্দাদের তাঁর দান ও নেয়ামত সম্পর্কে স্মরণ ও সচেতন করেছেন। আসমান-জমিন, গ্রহ-তারা ও তার মধ্যে সৃষ্ট সবকিছু একমাত্র মানুষের জন্যই প্রস্তুত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই সেই সত্ত্বা যিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন যা কিছু আছে ভূমিতে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৯)
পবিত্র কোরআনে আরও এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামতের গণনা করতে শুরু কর, তাহলে তবে তা গণনা করে শেষ করতে পারবে না।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ২৪)
ফলমূল—আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, জামরুল, কালোজামসহ আরও কত কী! অন্যান্য নেয়ামতের মতো ফলমূল বা মৌসুমি ফলও আল্লাহ মহান প্রদত্ত বিশেষ এক প্রকার নেয়ামত। এই নেয়ামতের উদ্দেশ্যও এক ও অভিন্ন। আর তা হলো; এসব ফলমূল ভোগের পর সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামিনের যথাযোগ্য কৃতজ্ঞতা আদায় করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অস্তিত্ব, একত্ববাদ ও বড়ত্বের কথা স্বীকার করা এবং বান্দার প্রতি তাঁর দান, দয়া ও অনুগ্রহের কথা উপলব্ধি করা। অন্তরের গহীনে বিশ্বাস রাখা যে, এসব নেয়ামত একমাত্র আল্লাহতায়ালারই দান। তাঁর বহু কুদরত ও অদৃশ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এগুলো আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে। এক ফারাসি কবি বলেন, ‘আসমান-জমিন, সূর্য-চন্দ্র, গ্রহ-তারা, বাতাস-মেঘের কর্মব্যস্ততায় তোমাদের কাছে এ নেয়ামতসমূহকে পৌঁছে দিয়েছে। অতএব, তোমরা তা অকৃতজ্ঞতার সঙ্গে ভোগ করো না।’
কুদরতি ব্যবস্থাপনায় আল্লাহ মহান পুরুষের কীটকে নারীর রেহেম পর্যন্ত বাতাস, প্রজাপতি, পাখি, পানির জোয়ার-ভাটাসহ অন্যান্য বস্তুর মাধ্যমে পৌঁছান। যা নিয়ে চিন্তা-ফিকির করলে যে কারও জন্য আল্লাহ ও তাঁর কুদরতের ওপর ঈমান আনা সহজতর হয়ে দাঁড়ায়।
এ ফল-ফলাদির উপকার তো বলে শেষ করা যাবে না, তবে সংক্ষেপে এতটুকু বলা যায় যে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মানুষের শরীরে রোগের প্রতিষেধক হিসেবে মৌসুমি ফল-ফলাদির চেয়ে অধিক কার্যকরী ভিন্ন কোনো ওষুধ নেই। এ সবকিছু চিন্তা করে এক আল্লাহতায়ালার ওপর দিল থেকে বিশ্বাস করার নামই হলো ঈমান। ঈমান ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে যখন আমরা এগুলো ভোগ করব ও তার স্বাদ আস্বাদন করে তা থেকে উপকৃত হব; তখন অবশ্যই আমাদের মুখ থেকে বের হবে আল্লাহর প্রশংসাবাণী ‘আলহামদুলিল্লাহ’। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিভিন্ন মৌসুমি ফল-ফলাদি খাওয়ার এবং আল্লাহতায়ালার যথাযোগ্য শুকরিয়া আদায় করার তওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক: আলেম, সাংবাদিক ও গবেষক