![‘অধিনায়কত্ব উপভোগ করিনা’](uploads/2024/01/21/1705816097.Tamim-Captaincy.........jpg)
জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর তামিম ইকবাল দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আবার মাঠে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। ৫ উইকেটের জয় দিয়ে শুরু করেছেন। এর আগে শুধু খেলোয়াড় হিসেবে লিটন দাসের নেতৃত্বে তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কেবল খেলেছিলেন একটি ম্যাচ। এবার মাঠে ফেরার পর তিনি অধিনায়কত্বও করছেন। যে কারণে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল আবার অধিনায়কত্ব করার অনুভূতিটা। তামিম সরাসরি জানিয়ে দিলেন তিনি উপভোগ করেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এই জিনিসগুলো খুব বেশি উপভোগ করি না। আমি উপভোগ করি, ওয়ার্ম আপ শেষ হবে, আরামসে বসে থাকব। ব্যাটিং হয়েছে, ফিল্ডিং হয়েছে। অধিনায়ক থাকলে কাগজে সই কর, টস কর, টসে কী হবে, জিতব, হারব, বহু ঝামেলা।’
প্রায় ৪ মাস পর ২২ গজে ফিরে তামিম ইকবাল ব্যাটিং করেছেন ৩২ মিনিটের মতো। এই ৩২ মিনিট ছিলেন দারুণ ছন্দে। ২৪ বল খেলে ১ ছক্কা আর ৫ চারে ৩৫ রান করে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবিকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন। নিজের এই ফেরাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল জানিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং আমার কাছে মনে হয়। কারণ তিন, সাড়ে তিন মাস পর কম্পিটিটিভ ক্রিকেট খেলা। এর মাঝখানে সত্যি কথা বলতে আমি দুই-আড়াই মাস কোনো ট্রেনিংই করিনি। তবে আমার কাছে মনে হয় অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে যে শুরুটা প্রয়োজন ছিল সেটা হয়েছে।’ আজমতউল্লাহর করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই পরপর দুটিসহ তিনটি বাউন্ডারি তুলে নেন তামিম ইকবাল। এটি তাকে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করতে অনেক সহায়তা করেছে জানিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘দ্রুত বাউন্ডারি পাওয়া আমার জন্য কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। তবে অনুশীলনেও আমি ভালো ব্যাটিং করেছি।’ এই ধারাবাহিকতা গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে ধরে রাখতে পারবেন কি না- জানতে চাওয়া হলে তামিম বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্ট কেমন খেলব সেটা তো এই ইনিংস ডিফাইন করবে না। ডিফাইন করবে যখন অন্য ধরনের চ্যালেঞ্জ আসবে তখন আমি কিভাবে সামলাই। তবে এটা ভালো শুরু, আমি খুশি।’
বিপিএলের দশম আসরের আগে নানা নেতিবাচক খবরে মুখর ছিল সংবাদমাধ্যম। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রচারণায় চমক দেখিয়ে খানিকটা অবাক করে বিসিবি। এরপর অবশ্য কমেছে বিপিএলের সমালোচনা। এত সমালোচনার মাঝেও তামিম ইকবালের চাওয়া বিপিএলের ইতিবাচক বিষয় নিয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু বিপিএলে যে উন্নতির জায়গা আছে সেটা স্বীকার করেন তামিম। নেতিবাচক বিষয় পাশে সরিয়ে তামিমের মতে নজর রাখা উচিত ইতিবাচক বিষয়গুলোর দিকে। রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম সরাসরি বলেন, ‘শেষ কয়েক দিনে এত নেতিবাচক খবর হয়েছে বিপিএল নিয়ে! এতটাও খারাপ না। আমাদের এখানে অনেক ইতিবাচক বিষয়ও আছে।’
বিপিএলে কেন তামিম ইতিবাচকতা খোঁজেন, সেটা অবশ্য পরিষ্কার করেন সংবাদ সম্মেলনে। তার কথামতে, ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিপিএলের নিয়মিত আয়োজন। বিশেষ করে আর্থিক দিক বিবেচনায়। তার কথায়, ‘বিপিএলের অনেক ইতিবাচক দিক আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটারদের কথা চিন্তা করেন, তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়। অনেক নেতিবাচক দিক আছে যেটা নিয়ে সারা দিন আলাপ করতে পারি।’
বিপিএলের প্রথম আসর থেকে নিয়মিত খেলোয়ার তামিম জানান, তার চোখে সেরা আসরগুলো ছিল ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। ওই সময় বিপিএল নিয়ে ছিল না কোনো বিতর্ক। বেশ সাবলীলভাবে হয়েছিল টুর্নামেন্টগুলো। এরপর থেকে আবার বিপিএলের সঙ্গে যুক্ত হয় বিতর্ক। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো লম্বা সময়ের জন্য বিপিএলে যুক্ত হলে সেটা টুর্নামেন্টের মান বাড়ায় বলে বিশ্বাস করেন তামিম। তার কথায়, ‘বিপিএলে যখনই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক ৭-৮ বছর থাকে তখন টুর্নামেন্টের ভ্যালুটা অন্য রকম হয়ে যায় সব সময়।’
নানা বিতর্ককে পাশে রেখে তামিমের বিশ্বাস বিপিএলে মাঠের ক্রিকেট বেশ প্রতিযোগিতামূলক। তার কথায়, ‘কী করতে পারি, কেমন হতে পারে, এটা কেমন হতে পারে এসব নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি, ক্রিকেটের কথা যদি বলেন এটা খুবই প্রতিযোগিতামূলক। এখানে রাতারাতি সাফল্য পাওয়া সহজ না। আমার কাছে মনে হয় উন্নতির অনেক জায়গা আছে এবং পজেটিভ জিনিসও আছে।’
বিপিএলের দশম আসরের ইতিবাচক দিক কী এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসরি ধারাভাষ্যকে লেটার মার্ক দেন তামিম ইকবাল। জানান ধারাভাষ্যে একধাপ এগিয়ে গেছে বিপিএল। তার কথায়, ‘আমার কাছে মনে হয় ভালো কমেন্টেটর এসেছে, এটা একধাপ এগিয়ে দিয়েছে। ভালো ভালো কমেন্টেটর আসতেছে, টুর্নামেন্ট জমাতে ভালো কমেন্টটের দরকার।’