জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত। হারলেও থাকত যদি-কিন্তুর সমীকরণ। তবে জটিল সমীকরণ এড়িয়ে দারুণ জয়ে বিপিএলের চতুর্থ দল হিসেবে প্লে অফ খেলা নিশ্চিত করেছে ফরচুন বরিশাল।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারায় তামিম শিবির। বরিশালের জয়ে প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে গেছে খুলনা টাইগার্স। সিলেটের বিরুদ্ধে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটি খুলনার জন্য তাই নিয়মরক্ষার।
শেষ দল হিসেবে প্লে-অফে ওঠা বরিশালের উন্নতি হয়েছে পয়েন্ট টেবিলেও। চট্টগ্রামকে সরিয়ে তিন নম্বরে তামিমের দল। পয়েন্ট টেবিলে অবস্থানের হেরফের হলেও খুব বেশি লাভ হয়নি দলটির। ফাইনালে ওঠার পথে চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে বরিশালকে খেলতে হবে এলিমিনেটর। ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রংপুর। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে কুমিল্লা। তৃতীয় স্থানে থাকা বরিশালের পয়েন্ট ১৪। চট্টগ্রামের পয়েন্টও ১৪। তবে নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকায় দলটির অবস্থান চতুর্থ।
বরিশাল-কুমিল্লার ম্যাচে মিরপুরের চোখ ধাঁধানো আউটফিল্ডে মন ভরেছে ক্রিকেট সমর্থকদের। এমন আউটফিল্ডের পাশাপাশি উইকেট নিয়েও প্রত্যাশা ছিল বাড়তি। নাহ, উইকেটের আচরণে আসেনি কোনো পরিবর্তন। মিরপুরের সহজাত ধীরগতির টার্নিং উইকেটের দেখা মিলেছে গতকাল।
এমন উইকেটে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম। চট্টগ্রামের ফ্লাট উইকেটে দাপট দেখানো কুমিল্লা গতকাল পারেনি রানের এভারেস্টে উঠতে। তাদের ইনিংস থামে মাত্র ১৪০ রানে। দলীয় সংগ্রহ তিন অঙ্কের ঘর স্পর্শ করাতে দলটিকে খেলতে হয়েছে ১০৪ বল। এমন ব্যাটিংয়ে আদতে সংগ্রহ ১৩০ এর বেশি হতে পারবে কি না এমন শঙ্কাও জেগেছিল। কারণ, দলীয় সংগ্রহ ১০০ পার হওয়ার আগেই যে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কুমিল্লার ছয় ব্যাটার।
শঙ্কা দূরে সরিয়ে দলীয় সংগ্রহ ১৪০-য়ে নেন জাকের আলী অনিক। সাতে নামা জাকের ১৬ বলে করেন ৩৮ রান। শেষদিকে তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ডে কুমিল্লার নামের পাশে যুক্ত হয় লড়াকু সংগ্রহের পুঁজি। জাকেরের ওই ঝড়ের আগে তাওহিদ হৃদয় ও মঈন আলীর ৩০ বলে ৩৬ রানের জুটির কল্যাণে প্রাথমিক বিপদ সামলে নেয় কুমিল্লা। হৃদয় ২৫ ও মঈনের ব্যাটে আসে ২৩ রান। বরিশালের হয়ে তাইজুল ২০ রানে তিন উইকেট নেন। এ ছাড়া দুইটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও ওবেদ ম্যাকয়।
১৪১ রানের লক্ষ্য, ওভারপ্রতি দরকার ৭ রানের একটু বেশি। টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় বরিশালের সামনে লক্ষ্যটা মাঝারি। অধিনায়ক তামিম একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের জয়ের পথ সুগম করে দেন। ৪৮ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬৬ রান। তার দলের অন্য ব্যাটাররা ছিল যাওয়া-আসার পথে। আহমেদ শেহজাদ ৭ বলে ১ ও তিনে নামা কাইল মেয়ার্স করেন ২৫ বলে ২৫ রান। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও পারেননি। ২৪ বলে করেন ১৭ রান। তামিমের ব্যাটে নিয়মিত রান আসায় তাদের এমন ওয়ানডে স্টাইলের ব্যাটিং বরিশালের রান তোলায় তৈরি করেনি বাধা। দলের জয়ের পথ সুগম করা তামিমের সামনে ছিল ম্যাচ শেষ করে প্যাভিলিয়নে ফেরার সুযোগ। ১৮তম ওভারে আন্দ্রে রাসেলের বলে হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে ফিরলে থামে তার ইনিংস। চট্টগ্রামের পর ঢাকায় ফিফটি করা তামিম পান ম্যাচসেরার পুরস্কার। তামিমের বিদায়ের পর দুই বল হাতে রেখে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকার। ১১ বলে ১২ রান করেন রিয়াদ আর সৌম্য ৩ বলে করেন ৬ রান।
কুমিল্লার হয়ে তরুণ মুশফিক হাসান ১৯ রানে নেন দুই উইকেট। কুমিল্লার এমন ব্যর্থতার দিনে তার বোলিং ফিগারটা ছিল আলো ঝলমলে। চাপহীন বোলিংয়ে ঠিকই নজর কাড়েন তিনি। এই হারে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার সুযোগ হাতছাড়া করল কুমিল্লা। টেবিলের দুইয়ে থেকে তাদেরকে খেলতে হবে প্লে অফ রংপুরের বিরুদ্ধে।
এমএ/