ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সুনামগঞ্জের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলল

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ০৪:৫৪ পিএম
টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সুনামগঞ্জের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলল
টাঙ্গুয়ার হাওর। ছবি : খবরের কাগজ

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। 

রবিবার (২৩ জুন) দুপুরে এ ঘোষণা দেয় তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা পারভীন জানান, সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং যাদুকাটাসহ নদনদীতে প্রবল স্রোত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে কোনো পর্যটক এসে যাতে খারাপ পরিস্থিতি বা বিপদে না পড়েন এসব বিষয় মাথায় রেখে ও পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত কয়েকদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় যেহেতু বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে তাই আজ থেকে আবারও টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ও বিশ্বম্ভপুর উপজেলার দুর্গাপুর, শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাহিরপুরের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। 

এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) বন্যা পরিস্থিতিতে কোনো পর্যটন যাতে খারাপ পরিস্থিতিতে না পড়েন এবং বন্যা পরিস্থিতিতে এসে তাহিরপুরের আটকা না পড়েন তাই তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী/সালমান/

বর্ষায় পর্যটন

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৪৩ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম
বর্ষায় পর্যটন
বর্ষায় কক্সবাজারের সৌন্দর্য অন্যরকম। ছবি: প্রশান্ত রায়

বৃষ্টির মৌসুমে প্রকৃতি যেন তার আপন রূপ মেলে ধরে। বাংলার চিরায়ত সবুজ শ্যামল সৌন্দর্য মেলে ধরে বর্ষা। বর্ষায় ঘুরে দেখার জন্য দেশের কিছু জায়গা সম্পর্কে জানাচ্ছেন মোহনা জাহ্নবী

সিলেট
পানি আর সবুজ পাহাড়বেষ্টিত সুন্দর একটি জেলা সিলেট। নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরা এ জেলায় রয়েছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। যেমন- জাফলং, বিছানাকান্দি, লোভাছড়া, লক্ষণছড়া, ডিবির হাওড়, হাকালুকি হাওড়, লালাখাল, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, সংগ্রামপুঞ্জি ঝরনা, পান্থুমাই ঝরনা, ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, জৈন্তা হিল রিসোর্ট ইত্যাদি।

মৌলভীবাজার
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা বাগান রয়েছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। বর্ষাকালে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার দরুন চা বাগান তার পরিপূর্ণ সৌন্দর্য মেলে ধরে। চা বাগান ছাড়াও মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, হাকালুকি হাওড়, হামহাম জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ক্যামেলিয়া লেক ইত্যাদি এ জেলার পর্যটন স্থান। 

সুনামগঞ্জ
বর্ষা মৌসুম হাওড়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ জেলায় জনপ্রিয় টাঙ্গুয়ার হাওড় ছাড়াও রয়েছে আরও কিছু দর্শনীয় স্থান। যেমন- বারেক টিলা, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, নীলাদ্রি লেক ইত্যাদি।

হবিগঞ্জ
বৃষ্টির দিনে হবিগঞ্জজুড়ে বিস্তৃত বনাঞ্চল আরও নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। হবিগঞ্জের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে- রেমাকালেঙ্গা অভয়ারণ্য, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, লক্ষ্মীবাউর জলাবন, সাগরদী ঘি ইত্যাদি।

সিরাজগঞ্জ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল এবং সমৃদ্ধতম জলাভূমি চলনবিল তিনটি জেলাজুড়ে বিস্তৃত। জেলা তিনটি হচ্ছে নাটোর, পাবনা এবং সিরাজগঞ্জ। বর্ষায় চলনবিল পানিতে ভরপুর থাকে। তখন তার সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহু গুণ। 

কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে রয়েছে মিঠামইন হাওড়, ইটনা হাওড়, নিকলী হাওড়, অষ্টগ্রাম হাওড় ইত্যাদি। হাওড়ের মাঝখান দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা নির্মাণের ফলে বিগত কয়েক বছর এর জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে অনেক গুণ। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জে আরও রয়েছে গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি, কবি চন্দ্রাবতী মন্দির, এগারসিন্দুর দুর্গ, ইটনা শাহী মসজিদ, সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি, এমনকি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান শোলাকিয়া।

বরিশাল
ঝালকাঠি, বরিশাল এবং পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম পেয়ারা বাজার। তিন দিক থেকে আসা খালের মোহনায় বসে এই পেয়ারা বাজার। বৃষ্টি নামলে পেয়ারা বাজারের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে ভ্রমণের জন্য এটি খুব উপযুক্ত স্থান।

ভোলা
ভোলা বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপবেষ্টিত জেলা, যা কুইন আইল্যান্ড অব বাংলাদেশ নামেও পরিচিত। জেলাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জল-স্থলের অপূর্ব সুন্দর ল্যান্ডস্কেপের জন্য বর্ষা মৌসুমে ভোলা জেলা আরও নান্দনিক হয়ে ওঠে। ভোলার কিছু দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- মনপুরা দ্বীপ, চর কুকরিমুকরি, তালুকদার জমিদার বাড়ি ইত্যাদি।

বর্ষায় বিছানাকান্দি

খুলনা
এ জেলাকে বলা হয় সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার। বৃষ্টির সঙ্গে বনের সৌন্দর্য উপভোগ করার আগ্রহে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য বর্ষা মৌসুমকেই বেশি উপযুক্ত মনে করেন প্রকৃতি ও ভ্রমণপ্রেমী মানুষ। বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম এ জেলায় রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। ভূতিয়ার পদ্মবিল, পুটনী দ্বীপ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষদের বাড়ি ও শ্বশুরালয়, বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড, করমজল পর্যটন কেন্দ্র, কটকা সমুদ্র সৈকত ইত্যাদি।

বাগেরহাট
বঙ্গোপসাগরের কূলঘেঁষা এ জেলায় রয়েছে কচিখালী সমুদ্র সৈকত, দুবলার চর, মোংলা বন্দর, খাঞ্জেলী দিঘি, যা বর্ষা মৌসুমে ঘুরে দেখার জন্য উপযুক্ত স্থান। 

শেরপুর
শেরপুর জেলাও বন পাহাড়ে ঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর একটি প্রাকৃতিক জেলা। বৃষ্টির মৌসুম শুরু হলে গজনী অবকাশ কেন্দ্র, বনরানী ফরেস্ট রিসোর্ট, মধুটিলা ইকোপার্ক প্রভৃতি স্থান তার আপন সৌন্দর্য মেলে ধরে।

নেত্রকোনা
বিরিশিরি আর সোমেশ্বরী নদীর জন্য জনপ্রিয় জেলা নেত্রকোনা। বর্ষায় সোমেশ্বেরী নদী নবযৌবনা হয়ে ওঠে। একদিকে সোমেশ্বরী নদীর স্বচ্ছ পানি, অন্যদিকে গাঢ় সবুজ পাহাড় মিলিয়ে অপূর্ব সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ। নেত্রকোনায় আরও রয়েছে কমলারানীর দিঘি, ডিঙ্গাপোতা হাওড়, সাত শহীদের মাজার ইত্যাদি।

ফেনী
ফেনী জেলায় রয়েছে বেশ কিছু ছোট-বড় দিঘি। বর্ষায় সেসব দিঘি পানিতে টইটম্বুর হয়ে থাকে। তার মধ্যে পরীর দিঘি, বিজয়সিংহ দিঘি, রাজাঝির দিঘি, শমসের গাজীর দিঘি অন্যতম। 

রাঙামাটি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রাচুর্যে ভরা রাঙামাটি দেশের বৃহত্তম জেলা এবং সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে পুরো জেলাটিই একটি কৃত্রিম হ্রদের ওপর অবস্থিত, যা কাপ্তাই হ্রদ নামে পরিচিত। বর্ষা মৌসুমে ঘোরার কথা মনে হলেই পাহাড়, ঝরনা, হ্রদ এসবের কথা মনে পড়ে। আর রাঙামাটি জেলায় এগুলো সবই আছে। ঝরনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- হাজাছড়া, কমলক, মুপ্পোছড়া, ধূপপানি এবং শুভলং। আর যে জায়গাটির কথা না বললেই নয়, তা সাজেক ভ্যালি। সাজেক ভ্যালির মেঘ ভেসে বেড়ানো পাহাড়ের অপূর্ব সৌন্দর্য পর্যটকদের বারবার সেখানে টেনে নিয়ে যায়। 

খাগড়াছড়ি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর খাগড়াছড়ি জেলায় রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে ওঠা প্রাকৃতিক লেক মাতাই পুখিরি, হার্টিকালচার হেরিটেজ পার্ক, মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি, তৈদুছড়া ঝরনা, পানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুঠির, স্বর্গের সিঁড়ি বা হাতিমাথা, নিউজিল্যান্ড পাড়া, রিসাং ঝরনা, আলুটিলা গুহা, মায়াবিনী লেক প্রভৃতি।

বান্দরবান
পাহাড়, নদী আর ঝরনা মিলে অপূর্ব সুন্দর জেলা বান্দরবান। বর্ষায় ঝরনা আর নদীগুলো যখন পানিতে ভরপুর থাকে, পাহাড় আরও সবুজ হয়ে ওঠে, তখন তা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- দেবতাখুম, সাতভাইখুম, আমিয়াখুম জলপ্রপাত, ঋজুক ঝরনা, জাদিপাই ঝরনা, মিলনছড়ি, ডিম পাহাড়, মারায়নতং, তিন্দু, দামতুয়া ঝরনা, আলীর 
সুড়ঙ্গ, চিংড়ি ঝরনা, নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র, শৈলপ্রপাত ঝরনা, স্বর্ণমন্দির, কেওক্রাডং, বগালেক, সাইরু হিল রিসোর্ট, নাফাখুম প্রভৃতি।

চট্টগ্রাম
পাহাড় আর সমুদ্রে ঘেরা চট্টগ্রাম জেলায় রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত, মহামুণি বৌদ্ধ বিহার, রাঙ্গুনিয়া চা বাগান, ফয়েস লেক, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, পারকি সমুদ্র সৈকত, বাওয়াছড়া লেক, প্রজাপতি পার্ক, হাজারিখিল অভয়ারণ্য, বাঁশখালী ইকোপার্ক, সোনাইছড়ি ট্রেইল, সুপ্তধারা ঝরনা, সহস্রধারা ঝরনা, খৈয়াছড়া ঝরনা, ঝরঝরি ঝরনা, কমলদহ ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরনা ও ট্রেইল, ভাটিয়ারী লেক, ওয়ার সিমেট্রি, চন্দ্রনাথ পাহাড়, মহামায়া লেক, সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, কুমিরাঘাট ইত্যাদি।

জাহ্নবী

পর্যটন সূচকে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
পর্যটন সূচকে বাংলাদেশ

গত মাসে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মে মাসে ‘ভ্রমণ ও পর্যটন উন্নয়ন সূচক ২০২৪’ প্রকাশ করেছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ভ্রমণ ও পর্যটন উন্নয়ন সূচক প্রকাশ করে থাকে। চলতি বছর ১১৯টি দেশের মধ্যে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯। এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে ভারত ৩৯। এরপর শ্রীলংকা ৭৬, পাকিস্তান ১০১, নেপাল ১০৫। এই সূচকে বাংলাদেশের পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে জিম্বাবুয়ে, হন্ডুরাস, নাইজেরিয়া, বেনিন, আইভোরিকোস্ট, মালাউয়ি, অ্যাঙ্গোলা, ক্যামেরুন, সিয়েরা লিওন ও মালি।

সূচক তৈরিতে পাঁচটি বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। বিষয়গুলো হচ্ছে- সহায়ক পরিবেশ, ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক নীতি, অবকাঠামো ও সেবা, পর্যটন ও ভ্রমণের সম্পদ এবং দীর্ঘস্থায়িত্ব। এই সূচক তৈরিতে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামকে সহায়তা করেছে যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়। সূচক তৈরিতে নিজেদের সংগ্রহ করা তথ্য ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সূচকের প্রথম পাঁচটি দেশ হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, জাপান, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার প্রথমে জাপান- সূচক ৩। এরপর চীন- সূচক ৮, সিঙ্গাপুর- সূচক ১৩, দক্ষিণ কোরিয়া- সূচক ১৪, ইন্দোনেশিয়া- সূচক ২২, মালয়েশিয়া- সূচক ৩৫।

তার অর্থ এশিয়ার দেশগুলো পর্যটনে অনেক পিছিয়ে রয়েছে ইউরোপ ও আমেরিকার তুলনায়। কেবল দক্ষিণ এশিয়া নয়, এশিয়ার সর্বশেষ সূচকে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের পরে এশিয়ার আর কোনো দেশ নেই। কিন্তু কেন বাংলাদেশ পর্যটন সূচকে এতটা পিছিয়ে? কেন সম্ভাবনা থাকার পরও বাংলাদেশের পর্যটন খাতের বিকাশ হচ্ছে না। বাংলাদেশের পর্যটনে মূল সমস্যা কোথায়?

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটক এসেছে ৬ লাখ ৫৫ হাজার। ২০২২ সালে এসেছিল ৫ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৬ জন। ২০২১ সালে ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৬, ২০২০ সালে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮, ২০১৯ সালে ৬ লাখ ২১ হাজার ১৩১ এবং ২০১৮ সালে ছিল ৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ জন।

বিদেশি পর্যটক যে হারে বাড়ছে, তাতে একটা সংশয় রয়ে যায়। সংশয়টা কী? ২০৪১ সাল নাগাদ দেশে ৫৫ লাখ বিদেশি পর্যটক আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও ট্যুরিজম বোর্ড। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিদেশি পর্যটক বাড়ার হার মোটেও সন্তোষজনক নয়। 
পর্যটনের সঙ্গে কিছু বিষয় ওতোপ্রোতভাবে জড়িত- পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার সড়ক, যানবাহন, নিরাপত্তা, বিশ্রাম, বিনোদন, টয়লেট, খাবারের মান ও মূল্য, থাকার জায়গা ইত্যাদি।

যদিও পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, আপাতত দেশের পাঁচটি পর্যটন কেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ চলছে। এরপর আরও কিছু স্পটকে উন্নত করা হবে।

দেশের ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে ভারত থেকে। এরপর এশিয়ার মধ্যে চীন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জাপানের পর্যটকরা আসেন বাংলাদেশে। এশিয়ার বাইরে থেকে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, তুরস্ক এবং রাশিয়া থেকে পর্যটক বেশি আসেন।

অন্যদিকে ২০২১ সালে ৩ হাজার ৯২৩ বাংলাদেশি গিয়েছিলেন মালদ্বীপ ভ্রমণে। আর ২০২২ সালে মালদ্বীপ বেড়াতে যান ১৬ হাজার ৮০৭ জন বাংলাদেশি। ২০২৩ সালে ২৮ হাজার ৩৩৬ বাংলাদেশি। মালদ্বীপের ১৫তম পর্যটক উৎস এখন বাংলাদেশ। যদিও বছরে কতজন বাংলাদেশি বিদেশে ঘুরতে যান, সেটার চূড়ান্ত হিসাব নেই। তবে স্থলবন্দর দিয়ে বছরে ২০ লাখ বাংলাদেশি যাচ্ছেন ভারতে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পর্যটন খাতে সবচেয়ে বেশি জিডিপি আসে মালদ্বীপের- দেশটির জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার সাড়ে ১২ শতাংশ, নেপালের ৬ শতাংশ, ভুটানের সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ভারতের সাড়ে ৪ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশের ৩ থেকে ৪ শতাংশ। তবে দেশের পর্যটনের বড় আয় আসে দেশের ভেতরে থাকা পর্যটক থেকে- বিদেশি পর্যটক থেকে নয়।

অথচ কোনো বিদেশি পর্যটক যদি ১ হাজার ডলার নিয়ে বাংলাদেশে আসেন, তিনি ৮০০ ডলারই খরচ করেন আবাসন, খাবার ও ভ্রমণের কাজে। বাকি ২০০ ডলার শপিংয়ে খরচ করেন। এই শপিংয়ে তিনি বাংলাদেশি পণ্যই কেনেন। ফলে ১ হাজার ডলারের প্রায় সবটাই রয়ে যায় দেশে।

মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশের অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। ‘দেউলিয়া’ হয়ে পড়া শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত পর্যটনের ওপর ভর দিয়ে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অথচ কী নেই বাংলাদেশে? পাহাড়, সমুদ্রসহ পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো সবই আছে। নেই প্রচার, নেই পরিকল্পনা, নেই বিদেশি পর্যটকদের জন্য সুযোগসুবিধা, নেই পর্যাপ্ত বিনোদনের ব্যবস্থা এবং নেই পর্যটনবান্ধব নীতি। এত নেইয়ের মধ্যে থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে বছরে ৫৫ লাখ বিদেশি পর্যটক কি আমরা আনতে পারব?

জাহ্নবী

তোমার নাকি ইটালিতে ঘোরার আছে প্ল্যান: রোমেন রায়হান

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
তোমার নাকি ইটালিতে ঘোরার আছে প্ল্যান: রোমেন রায়হান

তোমার নাকি ইটালিতে ঘোরার আছে প্ল্যান!
কী বললে! নাই একদম ইটালিয়ান জ্ঞান!

ইটালিয়ান ভাষা শেখার পাচ্ছ না ইশকুল!
সত্যি বলি, ভাষা নিয়ে টেনশনটাই ভুল। 

ইটালিয়ান ভাষা লাগে বলেছে কোন লোক! 
যাও তো সুখে ঘুরে বেড়াও, জুড়াও নিজের চোখ! 

কোথায় যাবে? ফ্লোরেন্স, ভেনিস, মিলান, নাকি রোম!
বুঝবে গেলেই, ইটালি তো নিজের বাড়ি, হোম!

খুঁজছ কিছু? কিনবে কিছু? কোথায়? পথের ধার!
বাংলাভাষায় কথা বলে সব ঝামেলা পার।

খাবার হোটেল, ছোটো বড় মনোহারী শপ
ঢুকে গিয়ে বাংলাভাষায় করতে পারো গপ! 

মনে হবে বাংলা ছাড়া কোনো ভাষাই নাই। 
ইটালিতে পা বাড়ালে শুধুই দেশি ভাই।

এরপরে আর ভাষা নিয়ে করো না ঘ্যানঘ্যান 
যাও তো বাপু ঘুরে এসো, টেনশন নাও ক্যান!

জাহ্নবী

সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম
আপডেট: ১৯ জুন ২০২৪, ০৭:৫২ এএম
সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে টানা বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ২০ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয় দফা বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় জেলার দুই উপজেলার সবকটি পর্যটনকেন্দ্র সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে দুই উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় সবকটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, মায়াবী ঝর্ণা, বিছানাকান্দি, রাতারগুল জলাবন, পান্থুমাই এবং কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর, উৎমা ছড়াসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আপাতত যেতে পারবেন না পর্যটকরা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘সিলেটের গোয়াইনঘাটে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়, জনস্বার্থে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিৎ কুমার সিংহ বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় জননিরাপত্তার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পর্যটন কমিটির সভায় উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে।’

শাকিলা ববি/অমিয়/

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম
আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ
ছবি: খবরের কাগজ

সুনামগঞ্জে গত কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন।

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার দুর্গাপুর, শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় তাহিরপুরের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সড়ক পথে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে।

গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ তাহিরপুরের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন।

তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন জানান, সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যদিও এখনও তাহিরপুরের বন্যা পরিস্থিতি ততটা খারাপ হয়নি। তারপরও যেকোনো সময় পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। আবার বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রচুর বজ্রপাত হয়।

তিনি জানান, পাহাড়ি ঢলে যাদুকাটাসহ নদ-নদীতে প্রবল স্রোত থাকে। এই খারাপ পরিস্থিতিতে এসে পর্যটকেরা বিপদে না পড়েন এবং পর্যটক যাতে বন্যা পরিস্থিতিতে এসে তাহিরপুরের আটকা না পড়েন তাই পর্যটকের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার খুলে দেওয়া হবে।

এদিকে সুনামগঞ্জের সব উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, আগামী ২৪ ঘন্টায় বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এখন পর্যন্ত ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গতের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী/অমিয়/