চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ওই বিভাগের ও তারই তত্ত্বাবধানে স্নাতকোত্তর থিসিস করা এক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। টানা ১৩ দিন তদন্ত করার পর জমা দেওয়া হলে প্রতিবেদনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে এক সভা হয়। সভায় তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেট মিটিংয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের সদস্যসচিব ও আইন অনুষের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘আজকের সভায় তদন্ত প্রতিবেদনে উনার (অভিযুক্ত) শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য হস্তান্তর করা হয়। টানা ১৩ দিন তদন্তের পর গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
এর আগে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে গত ৩১ জানুয়ারি উপাচার্য বরাবর যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণচেষ্টার জন্য লিখিতভাবে অভিযোগ করেন একই বিভাগের এক ছাত্রী। অভিযোগে বলা হয়, থিসিস চলাকালীন সুপারভাইজার (অধ্যাপক) কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হন তিনি। ল্যাবে একা কাজ করার সময় এবং কেমিক্যাল দেওয়ার বাহানায় নিজ কক্ষে ডেকে দরজা আটকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বহিষ্কার ও যথাযথ বিচার চেয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিচার সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান ও ক্লাস বর্জন করবে শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ পাওয়ার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শুভ্র/এমএ/