ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

পাহাড়বিধ্বংসী ইটভাটা

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
পাহাড়বিধ্বংসী ইটভাটা
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার একটি অবৈধ ইটভাটার আগুন নিভিয়ে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি : খবরের কাগজ

দেশের এক-দশমাংশ অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রামের সবুজ পাহাড় এখন লোভের আগুনে পুড়ছে। উজাড় হচ্ছে আরণ্যক প্রকৃতি। বিবর্ণ ধূসর হচ্ছে পরিবেশ। অনেকটাই হুমকিতে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

দ্রুত অর্থ লাভের অসুস্থ দৌড়ে পরিবেশবিধ্বংসী প্রতিযোগিতায় অনেক স্থানেই আস্ত পাহাড় কেটে স্থাপন করা হচ্ছে ইটভাটা। এসব ভাটায় ইট তৈরির কাঁচামাল মাটির জোগান দিতে দেদার কাটা হচ্ছে পাহাড়। আর বনাঞ্চলের কচি গাছ কেটে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে এই ইট। ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি। এসব ইটভাটা স্থাপনে জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও মানা হচ্ছে না। নেই পরিবেশ ছাড়পত্রও।

পার্বত্য তিন জেলার পাহাড়ি এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ১২৪টি ইটভাটা। এর মধ্যে বান্দরবান জেলায় ৫৯, খাগড়াছড়িতে ৪০ ও রাঙামাটিতে রয়েছে ২৫টি ইটভাটা। বছরের পর বছর ধরে এসব ইটভাটায় কোটি কোটি ইট যেমনি পোড়ানো হচ্ছে, তেমনি বছর বছর বাড়ছে ইটভাটার সংখ্যাও। হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য পাঠানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়েছে চিঠি।

শীত মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে নভেম্বর থেকে মার্চ-এপ্রিল বর্ষা শুরুর আগ পর্যন্ত একটানা চলে ইট উৎপাদন। মাটির জোগান দিতে কাটা হচ্ছে পাহাড়-কৃষিজমি। জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে বনের গাছ। ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি। স্থানীয় প্রশাসনের অভিযানে মিলেছে এর সত্যতা। ফলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অনেককেই গুনতে হচ্ছে অর্থদণ্ড। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে অনেক ইটভাটার কার্যক্রম।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর প্রণীত ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩’-এ আইন লঙ্ঘনে এক বছর থেকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ আইনের ১৪ থেকে ১৮ পর্যন্ত ধারায় জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তুত করলে অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছে। কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা কাটার দায়ে অনধিক দুই বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। আবার জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর দায়ে অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছে। নিষিদ্ধ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। 

চলতি মৌসুমে গত দুই মাসে তিন জেলায় ৩১টি ইটভাটায় পাহাড় কাটা ও জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর অপরাধে ১৭ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রামমাণ আদালত। এদের মধ্যে রাঙামাটির চার উপজেলায় ৯টি ইটভাটাকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২০ জানুয়ারি কাউখালীর দুই ইটভাটাকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং নতুন কাঁচা ইট সম্পূর্ণ ধ্বংস করে নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে ইটভাটার আগুন।

একই দিন বাঘাইছড়িতে তিন ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং ১৫ হাজার কাঁচা ইট ধ্বংস করে যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২১ জানুয়ারি লংগদু উপজেলার দুই ইটভাটাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায়সহ ইটভাটার ড্রাম চিমনি ভেঙে দিয়ে সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৫ জানুয়ারি কাপ্তাইয়ের রাইখালীর ভালুকিয়া এলাকায় চালুর উদ্যোগ নেওয়ায় একটি বন্ধ ইটভাটাকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩০ নভেম্বর লংগদুর আটারকছড়ায় একটি ইটভাটাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ড্রাম চিমনি ধ্বংস করে ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

খাগড়াছড়িতে ১৬টি ইটভাটায় ৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও চার হাজার ঘনফুট জ্বালানি কাঠ জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদের মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি রামগড়ে তিন ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা, ২৯ জানুয়ারি মাটিরাঙ্গায় পাহাড় কাটার দায়ে এক ব্যক্তিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি রামগড়ে চারটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে চার হাজার ঘনফুট জ্বালানি কাঠ জব্দ করা হয়। ৯ ডিসেম্বর রামগড়ে জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর অপরাধে দুটি ইটভাটাকে ১ লাখ টাকা, ৬ ডিসেম্বর মাটিরাঙ্গায় আদর্শগ্রাম ও ইসলামপুরে দুই ইটভাটায় দেড় লাখ টাকা এবং ৩০ নভেম্বর গুইমারায় পাঁচটি ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বান্দরবানে ছয়টি ইটভাটায় ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা ও একটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদের মধ্যে ২৫ জানুয়ারি লামা উপজেলার আজিজনগরে অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। ১৫ জানুয়ারি থানচি উপজেলার একমাত্র এসবিএম ইটভাটাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর আগে ১৮ ডিসেম্বর বান্দরবানে জেলা সদরের কুহালং ইউনিয়নের গুংগুরু পাড়ায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চারটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটির সব লাইসেন্সবিহীন ইটভাটার কার্যক্রম সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি রুলসহ এ আদেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিন জেলার বিভিন্ন ইটভাটার মালিকরা রিট পিটিশন করলে তা খারিজ ও আপিল বিভাগে দুটি আপিল করলে আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দেন চেম্বার কোর্ট, স্থিতাবস্থা বৃদ্ধি করেননি।

হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও পাহাড়ে অবৈধ ইটভাটা চালু থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসায় সর্বশেষ গত ৯ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটির সব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করতে তিন জেলা প্রশাসককে নোটিশ পাঠানো হয়। অন্যথায় জেলা প্রশাসকদের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ অনুসারে অসদাচরণের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এইচআরপিবির পক্ষে এ নোটিশ পাঠান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এর পরই এ অভিযানে নামে মাঠ প্রশাসন।

রাঙামাটির সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বিজয় কুমার জোয়ার্দার বলেন, জেলায় ২৫টি ইটভাটা আছে। এদের কোনোটিরই লাইসেন্স নেই। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ইতোমধ্যে জেলার বেশ কিছু উপজেলায় কয়েকটি অবৈধ ইটভাটাকে আর্থিক জরিমানাসহ তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য জেলার সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

 

নরসিংদীতে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
নরসিংদীতে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
ছবি : খবরের কাগজ

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় তিন মাসের ওভারটাইম ও বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাকশ্রমিকরা। ওই সময় তারা কাঠের আসবাবপত্র দিয়ে সড়কের ওপর অগ্নিসংযোগ করেন। 

রবিবার (৩০ জুন) ৩ ঘণ্টাব্যাপী কারারদী এলাকায় আদুরী গার্মেন্টসের শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করেন। এদিকে অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই প্রান্তে সাত কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

শ্রমিকরা জানান, তিন মাস ধরে ওভারটাইমের বকেয়া পরিশোধ করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগে থেকে দিচ্ছি দিচ্ছি করছে কর্তৃপক্ষ। তবে তা এখনো পরিশোধ করেনি। বকেয়া পরিশোধের দাবি করলে নানা অজুহাতে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়। এসবের প্রতিবাদে রবিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির সামনের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। 

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করছি।’

পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে ২ ব্যবসায়ী আহত

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে ২ ব্যবসায়ী আহত
ইয়াকুব আলী (বাঁয়ে) ও নুরুল আবসার। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে পঙ্গু হতে বসেছেন ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী। একই ঘটনায় আহত হন নুরুল আবসার (৪৩) নামের আরেক দোকানি। 

গত ২৪ জুন বেলা ২টার দিকে হাটহাজারীর মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হন তারা। এরই মধ্যে ইয়াকুব আলীর পায়ে গুরুতর জখম হয়। অন্যদিকে নুরুল আবসার হাতে আঘাত পান। 

মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে টেণ্ডলেরঘাটা বাজারে ইয়াকুব আলীর একটি কুলিং কর্নার রয়েছে। অন্যদিকে নুরুল আবসার করতেন মুরগির ব্যবসা। 

গুলিতে আহত হওয়ার পর দুই দিন চিকিৎসা শেষে গত ২৬ জুন দুজনই হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। ইয়াকুব আলীর বাড়ি বুড়িশ্চর ইউনিয়নের তালুকদারপাড়ায়। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলের বয়স ১৫ বছর। পুরো পরিবার চলে ইয়াকুব আলীর আয়ে। 

বাড়িফেরার পর ইয়াকুব আলী বলেন, ‘যখন আমার পায়ে গুলি লাগে, আমি ব্যথায় চিৎকার করতে থাকি। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন এগিয়ে আসেন। তারাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ডাক্তার আমাকে কমপক্ষে ছয় মাস বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। আমি এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছি। অথচ আমি ছাড়া সংসারে আয়ের কোনো লোক নেই। আমার বড় ছেলেরও ব্যবসা সামলানোর মতো বয়স বা সামর্থ্য নেই। সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে আমি চরম দুশ্চিন্তায় সময় পার করছি।’ 

এদিকে ইয়াকুব আলীর পাশেই আহত আরেক ব্যবসায়ী নুরুল আবসারের বাড়ি। তার তিন সন্তান। বড় ছেলের বয়স আট বছর।

নুরুল আবসার বলেন, ‘আমার ডান হাতে দুটি গুলি লেগেছে। বেশ ক্ষত হয়েছে। চিকিৎসা নিয়েছি। পুরোপুরি সুস্থ হতে ছয় মাস লাগতে পারে। আমি মুরগি বিক্রি করে সংসার চালাতাম। এখন দোকান বন্ধ। পরিবার কীভাবে চালাব সেটা ভাবলেই বুক কেঁপে উঠছে।’ 

গত ২৪ জুন বেলা ২টার দিকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শটগান পুলিশ ফাঁড়িতে এনে গুলি ছোড়ার কাজ পরীক্ষা করছিলেন এক কনস্টেবল ও ব্যাংকের এক নিরাপত্তা কর্মী। তাদের আকাশের দিকে ছোড়া গুলিতে আহত হন ওই দুই ব্যবসায়ী। এদিকে ঘটনাটি তদন্তে গত ২৬ জুন কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। গুলিবিদ্ধ দুই দোকানির চিকিৎসার ব্যয় পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
 
মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন সুমন জানান, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আহত দুই ব্যক্তিকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

চোরকে বাড়িতে ডেকে হত্যার শিকার গৃহবধু!

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
চোরকে বাড়িতে ডেকে হত্যার শিকার গৃহবধু!
ছবি: খবরের কাগজ

নাটোরের লালপুর উপজেলার কামারহাটি তেনাচুরা গ্রামের দুবাই প্রবাসী সোহানুর রহমান শুভ'র স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের শিকার শিউলি খাতুন (২৩) নিজেই তার হত্যাকারীকে বাড়ির ঠিকানা দেয় বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম। আসামি আগে থেকেই চোর। তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা রয়েছে। হত্যাকারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয় ঢাকার গাজীপুর কোনাবাড়িতে।

এসপির দাবি, কোনাবাড়িতে শিউলীর বোন ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে কাজ করেন। পাশের রুমেই ভাড়া থেকে এক হোটেলে কাজ করতেন আসামি। বেনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। শিউলী মেবাইল ফোনে ওই হত্যাকারীকে বাড়ির ঠিকানা দেয়। ট্রেনে লালপুরের আব্দুলপুর স্টেশনে নেমে অটোরিক্সাযোগে শিউলীর বাড়িতে পৌঁছে আসামি।

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ভিকটিম আনুমানিক একমাস আগে তার বোন সোনালী খাতুন এর ভাড়া বাসা গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী বেড়াতে গেলে সেখানে আসামির সঙ্গে পরিচয় এবং পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৬ জুন  আসামি জাকির হোসেন পরকীয়া প্রেমের সূত্রে গাজীপুর থেকে ট্রেনে ভিকটিমের বাড়িতে মামা পরিচয় দিয়ে বেড়াতে আসে। ভিকটিমের সঙ্গে টাকা পয়সা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ২৯ জুন ভোর ৫টার দিকে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য হলে আসামি ভিকটিমের গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মো. রফিকুল ইসলাম (৩৪) লালপুর থানায় এজাহার দায়ের করলে মামলা হয়।

গতরাতে বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের মাড়িয়া এলাকায় স্থানীয়দের সহায়তায়,আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় আসামির কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোন, ২ জোড়া রূপার নুপুর, ১টি স্বর্ণের চেইন, ১টি স্বর্ণের নাকফুল, ২টি রূপার আংটি ও ১ জোড়া কানের দুল উদ্ধার করাহয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

আসামি জাকির হোসেন (৩৫) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার গচিয়া গ্রামের বিলাল মিয়ার ছেলে। সে বিবাহিত। এর আগে আসামির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে চট্রগ্রামে একটি মামলা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে এসপি জানান, ভুক্তভোগীর বাবার বাড়ি দিনাজপুর, স্বামীর বাড়ি নাটোর। আর আসামির বাড়ি সুনামগঞ্জ। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগীর সঙ্গে আসামির আত্মীয়তার সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে কী কারণে শিউলী তাকে মামা পরিচয় দিয়েছে তা তদন্তের পরই জানা যাবে।

লালপুর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ এবং আইও হিমাদ্রি হালদার জানান আসামিকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে।

কামাল মৃধা/এমএ/

কবরস্থানে মিলল ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
কবরস্থানে মিলল ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি
জব্দকৃত ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি। ছবি : খবরের কাগজ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের রূপনগর গ্রামের কবরস্থান থেকে ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে। 

রবিবার (৩০ জুন) বিকেলে বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের সাকিন বেরবেরী হাওরের কবরস্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এই চিনি জব্দ করা হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সাকিন বেরবেরী হাওরের পাশের একটি কবরস্থানে অভিযান চালানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কবরস্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ১০০ বস্তা চিনি পাওয়া যায়। তবে অভিযানের সময় কাউকে পাওয়া যায়নি।

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন চিনি জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল
পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল। ছবি : খবরের কাগজ

শারীরিকভাবে সক্ষম দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বাবা-মা যেখানে সন্তানকে পড়ালেখায় মনোযোগী করতে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় ভুগছেন, তাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে নাটোরের সিংড়া উপজেলার প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা। সে সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে ও শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। 

রবিবার (৩০ জুন) দেশব্যাপী শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সে আলিম পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছে নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকায় আল মাদ্রাসাতুল জমহুরিয়া কেন্দ্রে।

সরেজমিনে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের শিক্ষার্থীরা হাতে কলম নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখতে ব্যস্ত। পাশেই সিটবেঞ্চে বসে বাঁ পায়ের আঙুলে কলম ধরে উত্তর লিখছে রাসেল মৃধা। দেখা যায়, রাসেলের দুই হাত নেই। নেই ডান পা-ও। বাঁ পা থাকলেও তা স্বাভাবিক আকারের চেয়ে ছোট।

২০২২ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.৮৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় রাসেল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভাব-অনটনের মধ্যেও প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে খুশি তার বাবা। তাইতো শত অভাব অনটনের মধ্যেও তারা রাসেলকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।

রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন, দিনমজুরি করে রাসেলকে পড়াশোনা করাচ্ছি। লেখাপড়া শিখে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে এমন আশা রয়েছে। শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোতাররফ হোসেন বলেন, বিগত পরীক্ষাগুলোতেও সে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছে। রাসেল এবারও ভালো ফল অর্জন করবে বলে আমরা আশাবাদী।