![৫টি সারমর্ম ও সারাংশ লিখন- এইচএসসি বাংলা ২য় পত্র](uploads/2024/05/29/বববব-1716984722.jpg)
সারমর্ম ও সারাংশ
প্রশ্ন: সারমর্ম লেখ-১
দৈন্য যদি আসে আসুক, লজ্জা কিবা তাহে,
মাথা উঁচু রাখিস
সুখের সাথী মুখের পানে যদি নাহি চাহে
ধৈর্য ধরে থাকিস।
রুদ্ররূপ তীব্র দুঃখ যদি আসে নেমে
বুক ফুলিয়ে দাঁড়াস,
আকাশ যদি বজ্র নিয়ে মাথায় পড়ে ভেঙে
ঊর্ধ্বে দুহাত বাড়াস।
উত্তর: সারমর্ম: মানব জীবন পুষ্পশয্যা নয়। দুঃখ-দৈন্য যা-ই আসুক, কোনো কিছুতেই ভেঙে পড়লে চলবে না। বরং সাহসের সঙ্গে হাসি মুখে এসব মোকাবিলা করতে হবে। জীবনে সব বাধা দূর করার জন্য প্রয়োজনে সংগ্রাম করতে হবে। এর মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত পৌরুষ ও বীর্যবত্তা।
প্রশ্ন: সারমর্ম লেখ-২
দণ্ডিতের সঙ্গে
দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার। যার তরে প্রাণ
কোনো ব্যথা নাহি পায় কোনো, তারে দণ্ডদান
প্রবলের অত্যাচার। যে দণ্ড বেদনা
পুত্রেরে পার না দিতে, সে কারেও দিও না।
যে তোমার পুত্র নহে, তারও পিতা আছে
মহা অপরাধী হবে তুমি তার কাছে।
উত্তর: সারমর্ম: মানুষই অপরাধ করে। আর তার ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই বিচারক কর্তৃক কোনো অপরাধীকে দণ্ড দেওয়ার আগে নিজেকে দণ্ডিত ব্যক্তির আপনজন ভাবতে হবে। সেই সঙ্গে হতে হবে আন্তরিক সহমর্মী। তাহলেই তা হবে সর্বশ্রেষ্ঠ বিচার।
প্রশ্ন: সারাংশ লেখ-১
প্রকৃত জ্ঞানের স্পৃহা না থাকলে শিক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তখন পরীক্ষা পাসটাই বড় হয়। এতে পরীক্ষায় পাস করা লোকের অভাব না থাকলেও জ্ঞানীর অভাব দেখা দেয়। পরীক্ষা পাসের মোহ যদি ছাত্রছাত্রীদের উৎকণ্ঠিত রাখে, তবে জ্ঞান নির্বাসনে চলে যায়। পৃথিবীতে অক্ষয় আসন লাভের জন্য তরুণ সমাজকে জ্ঞানের প্রতি উৎসাহী করে তুলতে হবে। পরীক্ষা পাসের মোহ থেকে মুক্ত না হলে তরুণ সমাজের সামনে কখনোই জ্ঞানের দিগন্ত উন্মোচিত হবে না।
উত্তর: সারাংশ: শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন। উদ্দেশ্যবিহীন শিক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জ্ঞানের পিপাসা ছাড়া প্রকৃত জ্ঞানী তৈরি হয় না। পরীক্ষার শৃঙ্খল প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করে। পরীক্ষার মোহ থেকে মুক্ত করে তরুণদের জ্ঞানচচর্চায় উৎসাহী করতে হবে।
প্রশ্ন: সারাংশ লেখ-২
অপরের জন্য তুমি তোমার প্রাণ দাও, আমি বলতে চাই নে। অপরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুঃখ তুমি দূর করো। অপরকে একটুখানি সুখ দাও। অপরের সঙ্গে একটুখানি মিষ্টি কথা বলো। পথের অসহায় মানুষটির দিকে একটা করুণ কটাক্ষ নিক্ষেপ করো। তাহলেই অনেক হবে। চরিত্রবান মনুষ্যত্ব সম্পন্ন মানুষ নিজের চেয়ে পরের অভাবে বেশি অধীর হন, পরের দুঃখকে ঢেকে রাখতে গৌরব বোধ করেন।
উত্তর: সারাংশ: পরের জন্য প্রাণ না দিয়েও ছোট ছোট উপকার করে মানুষকে সুখী করা যায়। সুন্দর ব্যবহার ও সহানুভূতির মাধ্যমেই অনেক উপকার করা যায়। ভালো মানুষ অন্যের দুঃখে-বেদনা বোধ করেন। তাই তারা পরের দুঃখ দূর করতে চায়।
প্রশ্ন: সারাংশ লেখ-৩
আজকের দুনিয়াটা আশ্চর্যভাবে অর্থের বা বিত্তের ওপর নির্ভরশীল। লাভ ও লোভের দুর্নিবার গতি কেবল আগে যাওয়ার নেশায় লক্ষ্যহীন প্রচণ্ড বেগে শুধুই আত্মবিকাশের পথে এগিয়ে চলেছে। মানুষ যদি এই মূঢ়তাকে জয় করকে না পারে ,তবে মনুষ্যত্ব কথাটাই হয়তো লোপ পেয়ে যাবে। মানুষের জীবন আজ এমন একপর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, যেখান থেকে আর হয়তো নামার উপায় নেই, এবার উঠার সিঁড়িটা না খুঁজলেই নয়।
উত্তর: সারাংশ: বর্তমান বিশ্ব অর্থ-বিত্তের ওপর বড় বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এখন মানুষের জীবনের মূল্য নির্ধারিত হয় অর্থের মাপকাঠিতে। ফলে এক দুর্নিবার লোভ মানুষকে অর্থের পেছনে তাড়া করে ফিরছে। এতে মনুষ্যত্ব বিপর্যস্ত হচ্ছে। আমাদের এখন দরকার মনুষ্যত্ব অর্জনের পথের সন্ধান লাভ।
মঈনউদ্দিন আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ,
সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, গোপালগঞ্জ/ আবরার জাহিন