![মমতার আপত্তি খারিজ করল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার](uploads/2024/06/26/Tista-Ganga-1719393448.jpg)
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির জবাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই চিঠিতে মমতা যে আপত্তি জানিয়েছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তা খারিজ করে দিয়েছে।
শেখ হাসিনার সঙ্গে গঙ্গা এবং তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গত ২২ জুন বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল, এই অভিযোগ তুলে গত সোমবার দিল্লিতে একটি ঝাঁঝাল প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছিলেন খোদ মমতা ব্যানার্জি। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যদিও মোদি সরকারের তরফে পাল্টা কোনো চিঠি দেওয়ার কথা এখনো শোনা যায়নি।
এদিকে গতকাল ঢাকায় বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লিকে কলকাতার মধ্যে চিঠি দেওয়ার একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
চিঠিতে মমতা বলেন, ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই চুক্তি নবায়নের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনো রকম পরামর্শ ছাড়া নবায়নের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রের এই একতরফা সিদ্ধান্ত মানবে না।
তবে মমতার এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তিস্তার পানি বণ্টন এবং ফারাক্কা চুক্তি, দুটি বিষয়েই অনেক আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে জানানো হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত বছরের ২৪ জুলাই ভারত-বাংলাদেশ ফারাক্কায় গঙ্গার পানি ভাগাভাগি চুক্তির অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা সম্পাদনের জন্য গঠিত কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধি চাওয়া হয়েছিল। পরে ওই বছরের ২৫ আগস্ট রাজ্য সরকার সেচ ও জলপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে (নকশা ও গবেষণা) মনোনয়ন দিয়েছিল।
এ ছাড়াও চলতি বছরের ৫ এপ্রিল রাজ্য সরকারের সেচ ও জলপথ বিভাগের যুগ্ম সচিব (কর্ম) ফারাক্কা ব্যারাজের প্রসারিত নিম্নধারা থেকে পরবর্তী ৩০ বছরের জন্য রাজ্যের মোট পানির চাহিদা জানিয়েছিলেন।
সুতরাং গঙ্গা তথা তিস্তার পানি বণ্টনে ভারত-বাংলাদেশের চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে পাশ কাটিয়ে কেন্দ্র কোনো কিছু করছে না উল্লেখ করে মমতার দাবি খারিজ করেছে মোদি সরকার।
উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ফারাক্কার পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। এই চুক্তি মোতাবেক নদীর উপরিভাগে থাকা ভারত এবং নিম্নভাগে থাকা বাংলাদেশ, উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছিল যে দুটি দেশই পানির ভাগ পাবে। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ভাগীরথী নদীর ওপর ফারাক্কা ড্যাম তৈরি করা হয়েছিল।