![বাইডেন-ট্রাম্পের বিতর্কে তীব্র বাক্যবাণ](uploads/2024/06/29/Baiden-Trump-1719633067.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই প্রধান প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চার বছরের মধ্যে এই প্রথম তারা একে অন্যের মুখোমুখি হলেন। এ সময় একজন আরেকজনকে লক্ষ্য করে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ করেন তারা।
তাদের আলোচনায় উঠে আসে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা, গর্ভপাতসহ নানা ইস্যু। বিতর্ক চলাকালে একে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনেন, পরস্পরকে তীব্র বাক্যবাণেও জর্জরিত করেন।
অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও অধিকসংখ্যক অভিবাসীর বিষয়ে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে আদালতে ট্রাম্পের সাজার প্রসঙ্গ তুলে তাকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেন বাইডেন।
পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে এসেছিল আলোচনায়। এ সময় বাইডেন কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্পের। অন্যদিকে ট্রাম্প বাইডেনের শাসনামল প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখন নরকে বাস করছে।
বাইডেন মূল্যস্ফীতিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অভিহিত করে এটি কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি বলেন, তিনি করও কমিয়ে আনতে চান। বাইডেন দাবি করেন যে ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে কর বাড়িয়ে দেবেন।
আলোচনা থেকে বাদ পড়েনি জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের প্রসঙ্গও। হান্টার বাইডেনের বন্দুক আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টি তুলেছিলেন ট্রাম্প।
বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতেছেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিতর্ক চলাকালে বাইডেনের বয়সের বিষয়টিও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি বেশ দুর্বলভাবেই ট্রাম্পের আক্রমণ সামাল দিয়েছেন। শক্ত অবস্থান নিতে পারেননি।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক কোরউইন স্মিডট বিবিসিকে বলেন, ‘বাইডেন তার অনেক দুর্বলতা দেখিয়েছেন এবং খুব বেশি শক্তির জায়গা দেখাননি।
তিনি আরও বলেন, ‘ভিজুয়াল, কণ্ঠ ও জবাব দেওয়ার গতির কারণে তাকে অনুসরণ করাটা কঠিন ছিল। অনেক তথ্যভিত্তিক জবাব ও পয়েন্ট প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন। কিন্তু বলার ধরনের কারণে সেগুলো দ্রুত হারিয়ে গেছে।’
ট্রাম্পকেও খুব একটা দৃঢ় বলে মনে করছেন না স্মিডট। তিনি বলেন, ট্রাম্পও কিছু দুর্বলতা দেখিয়েছেন। প্রশ্নের জবাবে তার উত্তরগুলো দৃঢ় ছিল না। নির্বাচনের ফলাফল ট্রাম্প মেনে নিবেন কি না, তা নিয়ে তাকে সঞ্চালক প্রশ্ন করেছিলেন। কিন্তু তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে বলেন, ‘যদি এটি সুষ্ঠু, আইনগত ও ভালো নির্বাচন হয় তাহলে অবশ্যই।’
বাইডেনকে তার বয়স সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, একসময় সবচেয়ে কম বয়সী আইনপ্রণেতা বলে তিনি সমালোচনার শিকার হতেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প তার চেয়ে ‘তিন বছরের ছোট এবং অনেকটাই কম যোগ্য’। ট্রাম্প প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘তিনি যে ভয়ানক পরিস্থিতি রেখে গিয়েছিলেন সেখান থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, সেটির রেকর্ড দেখুন।’
অন্যদিকে ট্রাম্পকে বয়স নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তার স্বাস্থ্য ভালো এবং তিনি গলফ খেলেন। বাইডেনকে খোঁচা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি এটা করেন না। তিনি ৫০ গজ দূরেও বল পাঠাতে পারেন না।’ সূত্র: বিবিসি