বিতর্ক আশানুরূপ না হওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তিনি বলেছেন, রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচনে পরাজিত করবেনই তিনি। গতকাল শুক্রবার (২৮ জুন) নর্থ ক্যারোলাইনার এক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি। ওই অঙ্গরাজ্যটি ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট হিসেবে পরিচিত।
এ সময় ৮১ বছর বয়সী বাইডেনকে বলতে শোনা যায়, ‘জানি যে আমি তরুণ বয়সী নই, স্পষ্টভাবে যদি বলতে চাই। আগের মতো করে আর হাঁটতে পারি না, আগের মতো করে মসৃণভাবে আর কথা বলতে পারি না। আমি আগের মতো ভালো করে আর বিতর্কও করতে পারি না।’
তার সামনে থাকা জনতাকে এ সময় ‘আরও চার বছর’ স্লোগান দিতে শোনা যায়। বাইডেন বলেন, ‘আমি আবার দাঁড়ানোর কথা ভাবতাম না, যদি না আমি অন্তরের অন্তস্তল থেকে বিশ্বাস করতাম যে এই দায়িত্ব আমি সামাল দিতে পারব। হিসাবটা এখানে অনেক বড়।’
বয়সের কারণে বাইডেনের কথা অনেক সময়ে জড়িয়ে যায়। অনেক সময় তার পাল্টা জবাব ততটা জোরালো হয় না। বিষয়গুলোকে প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির থেকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বলা হয়, তিনি আরও চার বছর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ততটা যোগ্য না। অনেক ডেমোক্রেট বাইডেনের স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া যায় কি-না, তা নিয়েও ভাবছেন– এমন গুঞ্জনও শোনা গেছে।
তবে বাইডেনের প্রচার শিবিরের মুখপাত্র মাইকেল টাইলার বলেছেন, এ রকম কোনো কিছু নিয়ে কোনো আলোচনা চলছে না। বাজে চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্যের প্রার্থীর চেয়ে আমরা একটি খারাপ রাত মেনে নিতে রাজি আছি।
গত বৃহস্পতিবার হয়ে যাওয়া বিতর্কে ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প অনেক মিথ্যা তথ্য দিলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান করে নেন বাইডেন, বিশেষ করে ডেমোক্রেট শিবিরে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেট পার্টি নেতা হাকিম জেফরিসকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর দেননি। তিনি বলেন, ‘আমি মনোনয়ন সমর্থন করি। আমি সিনেটে ডেমোক্রেট সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে সমর্থন করি। নভেম্বরে আবার হাউসের দখল নিতে যা যা করা প্রয়োজন, তার সবই আমরা করব।’
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও বারাক ওবামাসহ ডেমোক্রেট শিবিরের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাই জানিয়েছেন, তারা বাইডেনকে সমর্থন দেবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা লিখেছেন, ‘বাজে বিতর্ক হয়েই থাকে। আমার কথা বিশ্বাস করুন, কারণ আমি জানি। কিন্তু এই নির্বাচন এখনো এমন একটি লড়াই, যেখানে একজন মানুষ সারাজীবন সাধারণের জন্য লড়েছেন, আর আরেকজন শুধু নিজের কথা ভেবেছেন।’
মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতেও বাইডেনের কড়া সমালোচনা হচ্ছে। ২০২০ সালে বাইডেনের প্রতি সমর্থন জানানো নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তেও বলা হয়েছে, ‘বাইডেন পুনরায় নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় জনসেবাটি করতে পারেন।’ সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি