![ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে আবারও তোপ রাজ্যের](uploads/2024/06/27/momota-modi-1719466358.jpg)
বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা ও তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে দিল্লির মোদি সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মধ্যে কাজিয়া। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, একজন স্টেক হোল্ডার হিসেবে তাকে অন্ধকারে রেখে দুটি নদীর পানি বণ্টন নিয়ে গত ২২ জুন আলোচনা করেছেন ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠিও লেখেন।
ওই চিঠির প্রতিক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে দাবি করা হয়, গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছিল।
সেই বক্তব্য নাকোচ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে আবার দাবি করা হয়েছে, দুই দেশের সরকারের মধ্যে ওই সময়ের চিঠি চালাচালি, আর মাত্র কয়েক দিন আগে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট বোঝা যাবে কীভাবে ওই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাইডলাইনে রাখা হয়েছিল।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে (মুখ্যমন্ত্রীর অফিস) জানান, পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ২০২৩ সালে দিল্লির পানি মন্ত্রণালয় একটি ১২ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছিল। তাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে রাখা হয়েছিল। গত ১১ জুন সেই কমিটি কেন্দ্রীয় পানি কমিশনকে তাদের রিপোর্ট দেয়, যা জলশক্তি মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে। কিন্তু সেখানে দু-একটি পদ্ধতিগত খুঁটিনাটি ছাড়া রাজ্যের মত নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পানি বণ্টন নিয়ে যেসব গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন সেসবের কিছুই পানি মন্ত্রণালয় নজরে ছিল না। তারা সে সম্পর্কে রাজ্য সরকারকে কোনো কিছুই জানায়নি।
আলাপন বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের নীতিনির্ধারক কোনো কমিটিতেই ভারত-বাংলাদেশ পানি চুক্তি নিয়ে কোনো কথা বা আলোচনা হয়নি। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক লেখা চিঠিতে যেভাবে উত্তর ও মধ্যবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে যাওয়া নদী এবং নদীর পানি বণ্টনসংক্রান্ত কয়েকটি সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। গত ২৪ জুন লেখা চিঠির আগে ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর, ওই বছরেরই ২১ ফেব্রুয়ারি এবং তারও আগে ২০১৭ সালের ২৫ মে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সবকটি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছিলেন, ভারত-বাংলাদেশ পানি বণ্টন বহু বছরের পুরোনো একটি বিষয়। যার ওপরে নির্ভর করে কোটি কোটি মানুষের পানি পাওয়ার বিষয়টি। এর ওপর নির্ভর করছে গঙ্গার ভাঙনজনিত সমস্যাগুলো। এ ছাড়া এর ওপর নির্ভর করে আমাদের কৃষি, সেচ, পানীয় জল প্রভৃতি বিষয়। তা এই রিপোর্টে বিন্দুবিসর্গ নেই বলে জানান আলাপন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, পানি মন্ত্রণালয় এই কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কোনো চিঠি দেয়নি। কোনো যোগাযোগ করেনি। কোনো আলোচনাও করেনি।