![ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রশ্নে আদেশ আজ](uploads/2024/06/12/younus-03-1718162029.jpg)
অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার (১২ জুন) দিন ধার্য আছে। এ সংক্রান্ত শুনানি শেষে আদেশের দিন ধার্য করে গত ২ জুন আদালত এই নির্দেশ দেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
ওই দিন আদালত থেকে বের হওয়ার পর ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া এই মামলার আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম এবং এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম এবং জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক মো. কামরুল হাসান। তাদের মধ্যে কামরুল হাসানের নাম তদন্তের পর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদের নাম এজাহারে ছিল।
কমিশনের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এক বছর আগে গত বছর ৩০ মে মামলাটি করেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ। কমিশন এই মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসসহ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের মে মাসে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতিতে ব্যাংক হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৮ মে একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয় বলে জানানো হয়। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনার লভ্যাংশ বিতরণে শ্রমিক ইউনিয়ন ও গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে একই বছরের ২৭ এপ্রিল একটি চুক্তি সই হয়েছিল। তবে চুক্তিতে ৮ মে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে বলে দেখানো হয়, যা বাস্তবে অসম্ভব। কাগজপত্র নকল করে এটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ পত্রে কমিশন আরও বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী এবং ১০৮তম বোর্ড সভার (গ্রামীণ টেলিকম) সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। কর্মচারীদের লভ্যাংশের টাকা বিতরণ না করে তাদের না জানিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
কমিশনের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কর্মীরা লভ্যাংশের ভাগ বাবদ পাওনা চেয়ে আদালতে গেলে তাদের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের সমঝোতা হয়। এর ভিত্তিতে আইনজীবীদের খরচ বাবদ কর্মীরা ওই ২৫ কোটি টাকা অগ্রিম চেয়েছিলেন, তা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কর্মীদের লিখিত সম্মতিও আছে। তারা ব্যাংক হিসাব খুলতে দেরি করায় চুক্তিতে সেই জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছিল। দুই পক্ষ সেখানে পরে ব্যাংক হিসাব নম্বর বসায়। সেটিও সম্মতির ভিত্তিতে হয়েছে।’
মামলাসূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ টেলিকমের ১৭৬ কর্মী লভ্যাংশ বাবদ পাওনা টাকা চেয়ে শতাধিক মামলা করেছিলেন। উচ্চ আদালতেও গিয়েছিলেন তারা। পরে তাদের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের সমঝোতা হয়। আবদুল্লা আল মামুন বলেন, ‘সমঝোতার মাধ্যমে পাওনা পেয়ে কর্মীরা ২০২২ সালের মে মাসে মামলাগুলো প্রত্যাহার করেন। পরে পাওনা পরিশোধের বিষয়টিকেই অর্থ আত্মসাৎ ধরে মামলা করে কমিশন।’
আইনজীবী বলেন, ‘এই বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। তবে আইনত এটি তারা পারে না। ড. ইউনূস যখন এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন, তখন তড়িঘড়ি করে দুদক তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে। এর মাধ্যমে তাকে হেয়-প্রতিপন্ন করা হয়েছে।’