ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ২৫ মার্চ

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০১:৩৯ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০২:০০ পিএম
ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ২৫ মার্চ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ থেকে আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ৪ মার্চ শুরু হওয়া অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। আগামী ১১ এপ্রিল ঈদের দিন ধরে হিসাব করে যাত্রা বিবেচনায় টিকিট বিক্রি শুরুর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। 

ঈদুল ফিতরে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। টিকিটের কালোবাজারি রোধে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী এসব তথ্য জানান। এ সময় রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ও রেলপথ সচিব হুমায়ূন কবির উপস্থিত ছিলেন।

সরদার শাহাদাৎ আলী জানান, ২৪ মার্চ থেকে যাত্রার ১০ দিন আগের আন্তনগর ট্রেনের টিকিট অগ্রিম হিসেবে বিক্রয় করা হবে। পর্যায়ক্রমে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। যাত্রীদের টিকিট ক্রয় সহজলভ্য করার লক্ষ্যে পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলরত সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টা থেকে এবং পূর্বাঞ্চলে চলাচলরত সকল আন্তনগর ট্রেনের টিকিট দুপুর ২টা থেকে ইস্যু করা হবে। উল্লিখিত সূচি অনুযায়ী ঈদ অগ্রিম ও ফেরত যাত্রার টিকিট শতভাগ অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে।

তিনি আরও জানান, ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রয় করা হবে। অগ্রিম ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ৩ এপ্রিল। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রিম ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে। ৩ এপ্রিল জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ঢাকামুখী এবং ঢাকা স্টেশন থেকে জয়দেবপুরমুখী আন্তজোনাল আন্তনগর ট্রেনের কোনো টিকিট ইস্যু করা হবে না। 
রেলওয়ে মহাপরিচালক বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে ঈদ অগ্রিম ও ফেরত যাত্রায় আন্তনগর ট্রেনের সব আসন বিক্রয় শেষে কেবলমাত্র যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ট্রেনে বরাদ্দকৃত সাধারণ শ্রেণির মোট আসনের ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট স্টেশন কাউন্টার হতে বিক্রয় করা হবে।’

একজন যাত্রী উল্লিখিত ঈদ অগ্রিম যাত্রা ও ফেরত যাত্রার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একবার করে টিকিট কিনতে পারবেন এবং প্রতিক্ষেত্রে সর্বাধিক ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন। একজন যাত্রীর সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহযাত্রীদের নাম ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। ঈদযাত্রার অগ্রিম ও ফেরত যাত্রার টিকিট রিফান্ড করা যাবে না।

ঈদে চলবে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন

ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধার্থে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিশেষ ট্রেনগুলোর মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (৪টি ট্রেন); চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে ময়মনসিংহ ঈদ স্পেশাল (২টি ট্রেন); ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (২টি ট্রেন)। এ ট্রেনগুলো ৫ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ও ঈদের পরের দিন থেকে ৫ দিন পর্যন্ত চলাচল করবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের কক্সবাজার ঈদ স্পেশালের ২টি ট্রেন চলবে। ট্রেন দুটি ঈদের আগে ৮ ও ৯ এপ্রিল; ঈদের পরের দিন থেকে ৩ দিন চলাচল করবে। ভৈরব বাজার-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (২টি ট্রেন); ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটের শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (২টি ট্রেন) শুধু ঈদের দিন চলাচল করবে।

জয়দেবপুর-পার্বতীপুর রুটে ঈদ স্পেশাল (২টি ট্রেন) ঈদের আগে ৭ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিন; ঈদের পরের দ্বিতীয় দিন থেকে তিন দিন পর্যন্ত চলাচল করবে।

এ ছাড়া বেশ কিছু ট্রেনের শিডিউল ও যাত্রা বিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটির দিন প্রত্যাহার করা হয়েছে। ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আন্তনগর নীলসাগর ও চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের পরিবর্তে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে চলাচল করবে। এই দুটি ট্রেন বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না।

ঈদুল ফিতরের দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনা কিছু মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করবে। তবে কোনো আন্তনগর ট্রেন চলাচল করবে না। আন্তদেশীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস, মিতালী এক্সপ্রেস, বন্ধন এক্সপ্রেস ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। মিতালী এক্সপ্রেস জলপাইগুড়ি থেকে ১৭ এপ্রিল চলাচল করবে। 

ঈদের ১০ দিন আগে ও ১০ দিন পরে ট্রেনে সেলুন কার সংযোজন করা হবে না। ঈদের আগে ৮ এপ্রিল রাত ১২টার পর থেকে ঈদের পরের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কনটেইনার, জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্যান্য গুডস ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। 

ঈদযাত্রার শুরুর দিন ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, চিলাহাটি, বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রা বিরতি থাকবে না। সুন্দরবন, মধুমতি, বেনাপোল এক্সপ্রেস, নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের শহরতলী প্ল্যাটফর্ম থেকে যাত্রা শুরু করবে। 

সক্ষমতা বেড়েছে রেলওয়ের, শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা

গতবছর ঈদ মৌসুমে রেলে যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা ছিল ২৯ হাজার ৭০০ জন যাত্রীর। এ বছর সেই সংখ্যা সাড়ে ৩৩ হাজার জনে উন্নীত হয়েছে। 

ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রী চাহিদা পূরণের জন্য চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৫০টি এমজি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি বিজি কোচসহ সর্বমোট ৮৬টি কোচ যাত্রীবাহী সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করছে রেলওয়ে। পূর্বাঞ্চলে ১৩২টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১১৬টি লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেনে ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

রেলওয়ে জানিয়েছে, নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য ডিভিশনাল ও জোনাল কন্ট্রোলে পৃথক পৃথক মনিটরিং সেল গঠন করে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ইমারজেন্সি ডিউটি দেওয়া হবে। রেলে যেন শিডিউল বিপর্যয় না হয়, সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন ও সিগন্যাল কেবিনে কর্মকর্তা ও পরিদর্শকদের তদারকির মাধ্যমে ট্রেন অপারেশন পরিচালনা করা হবে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ট্রেন শিডিউল অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থ রেলপথ পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। রিলিফ ট্রেন সবসময় প্রস্তুত রাখা হবে।

প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন শুক্রবার

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৬ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৬ এএম
প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন শুক্রবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

দুই দিনের ব্যক্তিগত সফরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়সহ নানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। তার এ আগমন উপলক্ষে জেলায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী জানা গেছে, শুক্রবার (৫ জুলাই) বেলা ৩টায় গণভবন থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষে এক সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন। বিকেল ৫টায় সুধী সমাবেশ শেষে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে ফাতিহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন।

দ্বিতীয় দিন শনিবার বেলা ১১টায় গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন এবং ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ শীর্ষক অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করবেন। এরপর বেলা ১২টায় টুঙ্গিপাড়া মাল্টিপারপাস পৌর সুপার মার্কেট পরিদর্শন করবেন এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে।

দুই দিনের ব্যক্তিগত সফর শেষে শনিবার বিকেল ৪টায় সড়কপথে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স এলাকার ধোয়ামোছাসহ শোভাবর্ধনের কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স ধুয়েমুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুই দিনের সফরকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। 

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবু আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর টুঙ্গিপাড়ায় আগমন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। নেতা-কর্মীদের মাঝে আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়ায় দুই দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী আসবেন। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে উৎসবমুখর ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয় সভা করেছি। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অনন্য অবদান রয়েছে: আইজিপি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৪ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৪ এএম
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অনন্য অবদান রয়েছে: আইজিপি
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অনন্য অবদান রয়েছে। শুধু মুক্তিযুদ্ধেই নয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণেও পুলিশের রয়েছে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন।’

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সাবেক আইজিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক আর্ট গ্যালারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৎপরতায় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তারই একটি অনন্য প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্থাপন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য বিভিন্ন স্মারক সংগ্রহ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি। যে কেউ এ সংগ্রহশালায় স্বাধীনতা যুদ্ধের নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারবেন।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ইমেরিটাস অধ্যাপক হাশেম খান। তিনি বলেন, শুধু ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেল দিয়ে বাঙালি পুলিশ সদস্যরা, আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান বাহিনীকে রুখে দিয়েছিলেন। মর্টার, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনী ভাবতে পারেনি ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেল দিয়ে তাদের মোকাবিলা করা হবে।’

আসকের প্রতিবেদন ৬ মাসে মামলা-নির্যাতন ও হয়রানির শিকার ১৪৫ সাংবাদিক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৪৮ পিএম
৬ মাসে মামলা-নির্যাতন ও হয়রানির শিকার ১৪৫ সাংবাদিক
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতির পরিসংখ্যানগত প্রতিবেদনে জানা যায়, বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন ১৪৫ জন সাংবাদিক। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে গত ৬ মাসে অন্তত ২ জন নারীসহ ৮ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার সংগঠন- আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৬ মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, সীমান্তে হত্যা, সাংবাদিক নিপীড়নসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা প্রদানের মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে চলেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রকাশিত আসকের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার সই করা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত এই প্রতিবেদনটি ১০টি জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ ও আসকের নিজস্ব সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।  

গত ৬ মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা, সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাসহ বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ৪৪০টি। এতে নিহত হয়েছেন ৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৩৬ জন। এ সময় কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৪৬ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২০ জন এবং হাজতি ২৬ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১৩ জন হাজতি এবং ১০ জন কয়েদির মৃত্যু হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-জুন মাসে সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১০ জন, আহত ১৪ জন। চলতি বছরের ৬ মাসে সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১১ জন নাগরিক। অন্যদিকে মায়ানমার সীমান্তে মর্টার শেলের আঘাতে ১ জন বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে আশ্রিত মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ১ জন নিহত হন। 

বছরের প্রথম ৬ মাসে ২৭টি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ২০টি বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, ৫টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও ২১টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ১টি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। 

এ সময়ে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতনসহ নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত ৬ মাসে যৌন হয়রানিকেন্দ্রিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৪৬ জন নারী-পুরুষ, যাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ১১৩ জন নারী ও ৩৩ জন পুরুষ। এর মধ্যে বখাটেরা লাঞ্ছিত করেছে ১০১ জন নারীকে, বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ৩৬ জন। যৌন হয়রানির কারণে ১ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেদের দ্বারা ৪ জন পুরুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। 

ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ২৫০ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৪ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন। এ ছাড়া ৫৮ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ২৬৯ জন নারী। এর মধ্যে ৮৪ জন নারীকে তার স্বামী হত্যা করেছেন।  পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা হয়েছেন ৯৪ জন নারী। 

এ সময়ে যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৩৩ জন নারী। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ১২ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৪ জন নারী। এ সময়কালে মোট ১০ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৫ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।  

দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ৬ মাসে হত্যার শিকার হয়েছে ২৩৯ শিশু এবং ৩ জন শিশুকে বলাৎকারের পর হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ৫০ শিশু, বিভিন্ন সময়ে মোট ৭৭ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া গত ৬ মাসে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হন মোট ৩২ জন। এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যকীয় বলে মনে করে আসক। অন্যথায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

তিথি/এমএ/

৮ জেলায় বন্যার পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
৮ জেলায় বন্যার পরিস্থিতির অবনতি
ছবি : খবরের কাগজ

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির কারণে সিলেট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ফেনীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন এসব জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বানভাসি মানুষের সংখ্যা। পাশাপাশি আশ্রয়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে দুর্গত এলাকার মানুষ।

আমাদের সিলেট ব্যুরো ও প্রতিনিধিরা জানান-

সিলেট ব্যুরো: সিলেটে ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে নদ-নদীর পানি। তবে বিভিন্ন উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীবেষ্টিত উপজেলাগুলোর নতুন এলাকা বেশি প্লাবিত হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ছয় স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, ১ হাজার ১৬০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৩ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত রয়েছে। জেলায় ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯৫১ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি 

কুড়িগ্রামে বেড়েই চলছে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি। এর ফলে বৃহসপতিবার উলিপুর, সদর, নাগেশ্বরী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পাঁচ হাজার পরিবারের মানুষ। এ নিয়ে জেলায় বন্যায় আক্রান্ত রয়েছে ১৫ হাজার পরিবারের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চরবালাডোবার মানুষ। বন্যাকবলিতদের অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাদের মাঝে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আরও দুই থেকে তিন দিন ভারী ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বানভাসিদের মধ্যে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। 

ফেনীতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হলেও ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। দুই উপজেলার এখনো অন্তত দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। এদিকে বসতবাড়ি থেকে পানি নামলেও তলিয়ে আছে ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাট। অন্যদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য।

গতকাল বুধবার রাতে সিলোনিয়া নদীতে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। এর আগে গত সোমবার রাতে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর আটটি স্থান ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর ২৮ গ্রাম প্লাবিত হয়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। পানি কমলে ভাঙনস্থলের মেরামতকাজ শুরু হবে।

গাইবান্ধার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত 

গাইবান্ধায় জেলার সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার নদী-তীরবর্তী কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া তারাপুর, হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি তিস্তামুখঘাট পয়েন্ট, ঘাঘটের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্ট, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ও তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। 

সিরাজগঞ্জে ৪০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ

সিরাজগঞ্জে যমুনা করতোয়া, হুরাসাগরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এদিকে যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে কাজীপুর, জেলা সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে বন্যা-আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া পানির তীব্র স্রোতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ও কৈজুরী দুটি ইউনিয়নে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদীতীরের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও কয়েক দিন যমুনা নদীর পানি বাড়বে। এতে করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

টাঙ্গাইলে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের নিচু এলাকা

টাঙ্গাইলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তার মধ্যে ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে নদী-তীরবর্তী চরাঞ্চলের নিচু এলাকা। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে কয়েকটি উপজেলায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

নেত্রকোনার শতাধিক গ্রাম জলমগ্ন

১০ দিন পর পুনরায় বন্যার ঝুঁকিতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, সদর ও খালিয়াজুরী উপজেলার মানুষ। এর ফলে এসব উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। কোথাও কোথাও সড়ক তলিয়ে গিয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান জানান, প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। 

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, শুকনো খাবার, ওষুধ বরাদ্দ করা হয়েছে। ৮৫টি মেডিকেল টিম দুর্গত এলাকায় কাজ করছে।

জামালপুরে পানিবন্দি ১০ হাজার 

জামালপুরে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরামসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বন্যার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাঠারবিল এলাকায় দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ৩০ মিটার অংশ বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া একই উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কে একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ভেসে যাওয়ায় খোলাবাড়ি ও গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। 

এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে না

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে না
ছবি : সংগৃহীত

মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে জানাবে কীভাবে মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট বসানো হবে। এতে করে আগামী এক মাসের মধ্যে ভাড়া বাড়ছে না মেট্রোরেলের। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বেলা আড়াইটায় সভা হয় এনবিআর ও ডিএমটিসিএলের মাঝে। জানা যায়, মূলত এই সভা ছিল মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট আরোপ কীভাবে করা হবে- তা নিয়ে। 

এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা আজ এনবিআরের সঙ্গে যে বৈঠক করেছি, তাতে মেট্রোরেলের ভাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এনবিআর ও মেট্রোরেল সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এক মাসের মধ্যে জানাবে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট কীভাবে ইনক্লুড করা যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সড়ক বিভাগ বা ডিএমটিসিএল কিন্তু কখনো বলিনি এনবিআরকে ভ্যাট দেব না। আমরা ভ্যাট দিতে চাই, তবে এ ভ্যাট ইনক্লুড করার পর যাত্রীসাধারণের ওপর যেন চাপ না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিষয় নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে আজ।’ 

এর আগে সোমবার থেকেই মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট যুক্ত হয়েছে। সেই অনুযায়ী সেদিন থেকেই মেট্রোরেলের টিকিটের মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ অর্থ দেওয়ার কথা যাত্রীদের। তবে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল এনবিআর চিঠি দিয়ে ডিএমটিসিএলকে জানায়, জুলাই থেকে মেট্রোরেলের সেবা ও টিকিটে মূসক পরিশোধ করতে হবে। এরপর ডিএমটিসিএলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন মেট্রোরেলে ভ্যাট না বসানোর অনুরোধ করে। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট মওকুফের সময়সীমা ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ওই সুবিধা দিচ্ছে এনবিআর। 

মূলত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ট্রেনের টিকিটের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। একইভাবে মেট্রোরেলের ভাড়া থেকেও ভ্যাট আদায় করতে কঠোর অবস্থানে আছে এনবিআর। যাত্রীদের বিদ্যমান ভাড়া থেকেই ভ্যাট পরিশোধ করতে বলেছে প্রতিষ্ঠানটি। ভ্যাট পরিশোধের পর বাকি টাকা পাবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ভ্যাট যোগ করে এখনই ভাড়া বাড়াতে রাজি না ডিএমটিসিএল। এ ক্ষেত্রে তারা ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ আরও বাড়িয়ে যা ভাড়া আছে তাই রাখতে আগ্রহী। 

এদিকে মেট্রোরেলের টিকিটের বর্তমান ভাড়া থেকে ভ্যাট হিসেবে টাকা কেটে সেটা এনবিআরকে দিলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আয় কমে যাবে বলে এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের একাধিক কর্মকর্তা। হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট যোগ করা হলে যাত্রীদের ১০০ টাকার টিকিটের দাম বেড়ে হবে ১১৫ টাকা। অন্যদিকে ভ্যাটের টাকা যাত্রীর বর্তমান ভাড়া থেকে কেটে নেওয়ারও আইনি সুযোগ আছে। ১০০ টাকার টিকিট থেকে ১৫ টাকা এনবিআরকে দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে ভাড়া না বাড়লেও মেট্রোরেলের আয় কমবে।