ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক তথ্য জানালেন ডিবিপ্রধান

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম
আপডেট: ২৩ মে ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম
এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক তথ্য জানালেন ডিবিপ্রধান
ডিবি কার্যালয়ে কথা বলছেন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার একটি বাড়িতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার শরীর টুকরো টুকরো করে হাড্ডি ও মাংস আলাদা করা হয়। পরে তাতে হলুদ মিশিয়ে ব্যাগে ভরা হয়। তবে খণ্ডিত অংশ কোথায় ফেলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ‘দুই-তিন মাস আগে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। হত্যাকারীরা পরিকল্পনা করেছিল ঢাকায় হত্যা করবে। কিন্তু পুলিশের নজরদারি ও ঢাকায় হত্যাকাণ্ডের পরে সব হত্যার ক্লু পুলিশ বের করে নেবে বলেই তারা কলকাতায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

ডিবিপ্রধান বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে অপরাধ করলে বাংলাদেশ পুলিশের নজরে আসবে না বলেই অপরাধীরা কলকাতা বেছে নেয়। বাংলাদেশে অপরাধ করার সাহস পায়নি। তবে হত্যার পর অপরাধীরা পালিয়ে থাকতে পারেনি। আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি, আরও কয়েকজন নজরদারিতে আছে।’

গত ১২ মে এমপি আজীম চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। সেখানে বরাহনগরের মণ্ডলপাড়ায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেছিলেন। পরদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। বুধবার (২২ মে) জানা যায় তিনি খুন হয়েছেন।

আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সালমান/

ভারী বর্ষণের সতর্কতা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ পিএম
ভারী বর্ষণের সতর্কতা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রবিবার (৩০ জুন) আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (২৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবল রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে ও বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

লাগাতার কর্মবিরতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২৮ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৫ পিএম
লাগাতার কর্মবিরতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা
বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: খবরের কাগজ

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।

সোমবার (১ জুলাই) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা একযোগে এই কর্মসূচি পালন করছেন।

ফলে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। 

রবিবারও (৩০ জুন) দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। নতুন কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

এ সময় ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রস্তাবিত এই স্কিম বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাও এর ভুক্তভোগী হবেন। আমাদের আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষার পক্ষে এবং উচ্চশিক্ষা-ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে। তাই দেশ ও জাতির প্রয়োজনে সবাইকে এক হতে হবে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান জানাব, তারা যেন দল-মত নির্বিশেষে এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

সংগঠনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি আমাদের আত্মমর্যাদার লড়াই। আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছি বিষয়টি সুরাহা করার জন্য। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাইনি। দেশের ৩৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। একযোগে তারাও এই কর্মসূচি পালন করবে।’ 

প্রত্যয় স্কিম থেকে অন্তর্ভুক্তি বাতিল ছাড়া আরও দুটি দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। সেগুলো হলো- শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন এবং প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি।

ঢাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনে ৯ কর্মসূচি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের জন্য ৯টি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। সেগুলোর হলো- সব বিভাগের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা; অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস বন্ধ রাখা; সব পরীক্ষা বর্জন করা (মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষা); বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখা এবং সব ধরনের সভা বন্ধ (একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা); ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখা এবং নবীনবরণ-সিলেকশন বোর্ডের সভা বন্ধ রাখা। এ ছাড়া ইনস্টিটিউট ও গবেষণা সেন্টারের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ, হলের প্রাধ্যক্ষ অফিস এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ রাখা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান। তিনি বলেন, ‘বিভাগগুলোকেও আমরা জানিয়ে দিয়েছি। সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাসও বন্ধ থাকবে। সব পরীক্ষা বর্জন করা হবে। মিডটার্ম, ফাইনাল পরীক্ষা কিছু অনুষ্ঠিত হবে না। কোনো দপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কাজ করবেন না।’

সেবা না দেওয়ার ঘোষণা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় অচলের হুমকি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা মো. আব্দুল মোতালেব। রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা হলে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হবে। পানি, বিদ্যুৎ থাকবে না; টয়লেট পরিষ্কার, ময়লা পরিষ্কার করার কেউ থাকবে না, গাড়ি চলবে না, অফিস চলবে না, কোনো কিছু চলবে না, সব বন্ধ হয়ে যাবে। কিছু ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী সরকারকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্রত্যয় নামে একটা স্কিম ঘোষণা করেছে। অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

আন্তবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মহিউদ্দীন খন্দকার খবরের কাগজকে বলেন, ‘দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে ৭ জুলাই কমিটির সঙ্গে বসে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত: শিক্ষামন্ত্রী
কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হলে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। 

রবিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এইচএসসি পরীক্ষার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশনের আওতায় কারা আসবেন, সেটা সরকারের নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটার সঙ্গেই আছে। শিক্ষকরা দাবি-দাওয়া সরকারের কাছে জানাচ্ছেন, সরকারই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখানে কিছু করার নেই।

পর্যায়ক্রমে সবাই আসবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনা হচ্ছে সেটাও নয়। সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এ পেনশনের আওতায় আসবেন। হয়তো এ বছর শিক্ষকরা আসছেন, আগামী বছর অন্যরা আসবেন। 

ঢাবির অধিভুক্ত-উপাদানকল্প কলেজের পরীক্ষার সূচি অপরিবর্তিত
কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজের পরীক্ষাগুলো পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও কার্জন হল পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষাগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো। উল্লেখ্য, অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজের পরীক্ষাসমূহ পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন ঢাবি ও জবি প্রতিনিধি]

ভুল চিকিৎসায় জীবন গেল ঐশীর, ২ চিকিৎসকের শাস্তি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
ভুল চিকিৎসায় জীবন গেল ঐশীর, ২ চিকিৎসকের শাস্তি
অধ্যাপক কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) ডা. মো. নুরুল আজিম ও ডা. তানজিমা তাজরিন

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) গত বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকত হোসেনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুজন চিকিৎসকের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। ছোট একটু জায়গাজুড়ে হলুদ রঙের ওপর কালো কালিতে ছাপানো কতগুলো অক্ষর। পত্রিকায় ছাপানো আরও গা-শিউরে ওঠা খবরের আড়ালে হয়তো খেয়ালও করে ওঠা হয়নি অনেকের। তবে এই বিজ্ঞপ্তি একজন বাবা ও মায়ের তিন বছরের অপেক্ষা ও সংগ্রামের ফল। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্নেল ডা. অধ্যাপক মো. নুরুল আজিমের (অবসরপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে অভিযোগকারী আহমেদ রশীদ ও শর্মিষ্ঠা আহমেদ ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাকে তাদের একমাত্র মেয়ে শ্রেয়সী আহমেদ ঐশীর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে কাউন্সিলে অভিযোগ করেছিলেন। কাউন্সিলের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, চিকিৎসক নুরুল আজিম অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অবহেলা করেছেন।

বিএমডিসি আরও বলেছে, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক তানজিমা তাজরিন মূলত নুরুল আজিমের তত্ত্বাবধানে কাউন্সেলিংয়ের কাজ করতেন। এ ক্ষেত্রে অদক্ষতা, অপেশাদার আচরণ করার পাশাপাশি তিনি পেশাগত কাঠামো মেনে চলেননি। এ ছাড়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে তার ব্যবস্থাপনাবিষয়ক জ্ঞানেও উল্লেখযোগ্য ঘাটতি প্রমাণিত হয়েছে। কাউন্সিলের ২০১০ সালের আইনের আওতায় বিএমডিসি নুরুল আজিম ও তানজিমা তাজরিনের রেজিস্ট্রেশন যথাক্রমে পাঁচ বছর ও এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে; যা চলতি বছরের ২৮ জুন থেকে কার্যকর হবে। এ সময়ে চিকিৎসক হিসেবে কোথাও চিকিৎসাসেবা দিতে পারবেন না তারা। এমনকি তারা নিজেদের চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতে পারবেন না।

ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মাত্র ১৭ বছর বয়সে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক রাস্তা বেছে নেন প্রাণচঞ্চল ঐশী। পুরো নাম শ্রেয়সী আহমেদ ঐশী। ঐশীর মৃত্যুর পর ফেসবুকে মেয়েকে নিয়ে তার বাবা আহমেদ রশীদের আবেগঘন পোস্ট স্পর্শ করেছিল গোটা দেশবাসীকে। কলিজার টুকরো মেয়ের মৃত্যুর পর মুষড়ে পড়েছিলেন বাবা আহমেদ রশীদ ও মা শর্মিষ্ঠা আহমেদ। তবে মেয়ের আত্মহত্যাকে কখনোই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি তারা। তারা বরাবরই বলে আসছিলেন, ঐশী আত্মহত্যা করেনি, তাকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ঐশীর মৃত্যুর দুই বছর পর পোক্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে ২০২১ সালের ১১ মার্চ এই ঘটনার বিচার চেয়ে বিএমডিসিতে অভিযোগ করেছিলেন তারা। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন বিএমডিসি। তদন্তের রিপোর্টে অবশেষে সত্যতা মেলে বাবা-মায়ের অভিযোগের। দোষী সাব্যস্ত করা হয় সেই দুই চিকিৎসককে যাদের তত্ত্বাবধানে ঐশী চিকিৎসায় ছিলেন প্রায় আড়াই মাস। 

ঢাকার দিল্লি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল ঐশী। মাত্র কয়েক মাস পর ছিল ‘ও’ লেভেলের পরীক্ষা। পড়াশোনায় চেষ্টার অন্ত ছিল না। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই বাবা-মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে বলছিল তার পড়াশোনা মনে থাকছে না। পরীক্ষার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, দুশ্চিন্তা বাড়ে ঐশীর। তাই মেয়েকে সাইকিয়াট্রিস্ট কর্নেল ডা. অধ্যাপক মো. নুরুল আজিমের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। 

ঐশীকে দেখে তিনি সেদিন কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসিভ ওষুধ লিখে দেন। সঙ্গে তারই তত্ত্বাবধানে তরুণ চিকিৎসক ডা. তানজিমা তাজরিনের কাছে কাউন্সিলিং নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওষুধ সেবনের মাত্র ১২ দিনের মাথায় প্রথমবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে ঐশী। তারপর তাকে আবারও ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ওষুধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন তিনি। ওষুধ সেবনের আড়াই মাসের মাথায় আত্মহত্যা করে ১৭ বছর বয়সী ঐশী। আত্মহত্যার মাত্র কিছু সময় আগেও তার বাবাকে ইউনিমার্ট থেকে চেরি নিয়ে আসতে বলেছিল।

মেয়ের মৃত্যুকে বরাবরই ‘মেডিকেল ইনডিউসড সুইসাইড’ বলে দাবি করেছেন তার বাবা আহমেদ রশীদ। মেয়ের মৃত্যুর পর পর এক আত্মীয়ের কাছে জানতে পারেন ঐশীকে দেওয়া একটি ওষুধের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্রেককারী উপাদান রয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেন আহমেদ রশীদ। এবার মেয়েকে দেওয়া সব ওষুধ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি। কথা বলেন দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। তিনি জানতে পারেন কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে, এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ওষুধগুলোই মেয়েটিকে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। শুধু একটি নয়, বরং ঐশীকে দেওয়া চারটে ওষুধের মধ্যেই ছিল আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্রেককারী উপাদান। এসব ওষুধের নির্দেশিকায় স্পষ্ট উল্লেখ ছিল এই ওষুধ বয়সন্ধিকালে প্রয়োগের উপযোগী নয়। তবুও ডাক্তার এই ওষুধের হাই ডোজ দিয়েছিলেন ঐশীকে। ঐশীর বাবা-মা মেয়ের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের অবহেলা আর অপেশাদারত্বকেই দায়ী করেন।

খুচরায় চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২-৩ টাকা

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:১০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:১০ এএম
খুচরায় চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২-৩ টাকা
ছবি: খবরের কাগজ

রাইস মিলমালিকরা বলছেন, বোরোর মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। তারপরও ঈদের পর তেমন বাড়েনি চালের দাম। পাইকারি বিক্রেতারাও বলছেন, ঈদের সময় পরিবহন খরচ বাড়লেও পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়েনি। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। 

রবিবার (৩০ জুন) রাজধানীর কৃষিমার্কেট, কারওয়ানবাজার, বাদামতলীসহ বিভিন্ন বাজারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে। 

দামের ব্যাপারে কৃষিমার্কেটের খুচরা চাল বিক্রেতা সৈকত আলী খবরের কাগজকে বলেন, ‘ধানের দাম বেশি। ঈদের পরে চালের দাম কেজিতে ২/১ টাকা বেড়েছে। মোজাম্মেল চাল ৭২ টাকা, রশিদসহ অন্যান্য মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকা, পাইজাম ৫৪-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানি ঈদের সময় পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। তার প্রভাব চালের বাজারেও পড়েছে।’ 

একই তথ্য জানান, কারওয়ানবাজারের হাজি রাইস এজেন্সির মালিক মো. মাঈনুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ঈদের পর বস্তায় ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকা, আটাশ ৫২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৭৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মিল থেকে বাড়ার কারণে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ জন্য বিক্রিও বেশি দামে করতে হচ্ছে। মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা আনোয়ার রাইস স্টোরের আব্দুল মান্নানও একই সুরে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ডায়মন্ড চাল ৭৫ টাকা কেজি। অন্য মিনিকেটেরও বাড়তি দাম। ঈদে বেড়েছে। আর কমে না। মিল থেকে না কমালে আমরা কীভাবে কমাব। অন্য মিনিকেট ৬৮-৭০ টাকা কেজি। কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। 

তাদের কথার সত্যতা যাচাই করতে চালের পাইকারি মোকাম কৃষিমার্কেটে দেখা যায় বিভিন্ন আড়তে সারি সারি বস্তায় ঠাসা প্রায় দোকান। পাইকারি বিক্রেতা শাপলা রাইস এজেন্সির মালিক শিপন বলেন, ‘মানুষ কোরবানি ঈদ করে ঢাকা এসেছেন। ঈদের পর বিক্রিই নেই। একেবারে কম। বাড়েনি দাম। বর্তমানে মিনিকেট ৬৫-৬৮ টাকা, আটাশ চাল ৫২ টাকা ও মোটা চাল ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগেও এই রেট ছিল। কোনো দাম বাড়েনি।’ একই তথ্য জানান, বাদামতলীর বাবু বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সলিমুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘ঈদের পর বিক্রিই নেই। মানুষ বাড়িতে গিয়েছিল। ঢাকায় এলেও চাল কেনা শুরু করেনি। চাহিদা একেবারে নেই। তাই চালের দামও বাড়েনি। বস্তায় ৫০ টাকা বাড়লেও এটা তেমন বৃদ্ধি না। কারণ অনেক জিনিসের দাম হঠাৎ করে ৫-১০ টাকা বেড়ে যায়। সেটাকে বৃদ্ধি বলা হয়।’

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন চালের দাম বেড়েছে। কিন্তু পাইকারিতে বাড়েনি। আসলে বেড়েছে কী চালের দাম? জানতে চাইলে বাংলাদেশ রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও রশিদ গ্রুপের কর্নধার আব্দুর রশিদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঈদের পর পরিবহন ব্যয় যেভাবে বেড়ে গিয়েছিল, চালের দাম তেমন বাড়েনি। বস্তা প্রতি ৫০ টাকাও বাড়েনি। খুচরায় কত বাড়ল তা আমাদের দেখার বিষয় না। আমরা পাইকারি বাজারে চাল বিক্রি করি। বোরো মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। আমন ধান বাজারে উঠলে আর বাড়বে না। সামান্য বেশি দামে বর্তমানে ধান কিনতে হচ্ছে। এ জন্য একটু বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এই বাড়তি দাম বস্তায় ৫০ টাকাও না। এটা বাড়তি বলা যায় না। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে ৫০ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে এ ধানের আবাদ হয়েছে। এবার বোরোতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ কোটি ২২ লাখ টন। উৎপাদনও তার কাছাকাছি। তারপরও বিনা ছুতায় বাড়ছে চালের দাম।

মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট বসছে আজ

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ এএম
মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট বসছে আজ
ছবি : খবরের কাগজ

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর সোমবার (১ জুলাই) থেকে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বসছে। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে ভ্যাট মওকুফ রয়েছে। যার সময়সীমা রবিবার (৩০ জুন) পর্যন্ত ছিল।

ভ্যাট বসার কারণে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়বে কি না তা জানতে চাওয়া হলে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক খবরের কাগজকে বলেন, ‘১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের কারণে মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর যেন কোনো প্রভাব না পড়ে, এর জন্য আমরা সড়ক মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি। সড়ক মন্ত্রণালয় সেই চিঠি এনবিআরকে দিয়েছে। কিন্তু এনবিআর থেকে এখনো কোনো উত্তর পাইনি। তাই মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।    

সূত্র জানায়, মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ কর হলে দুইভাবে এনবিআরকে ভ্যাট পরিশোধ করার সুযোগ আছে। চলমান ভাড়া থেকে ভাড়া কেটে এনবিআরকে দেওয়া হতে পারে। আবার ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাব কষে ভাড়ার সঙ্গে যোগ করে আদায় করা যায়। এতে ভাড়ার সঙ্গে যোগ হবে। ফলে ভাড়া বাড়বে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমটিসিএলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন,  ১ জুলাই থেকে ভাড়া বাড়ার বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশ পাইনি। নিয়ম মতো, ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি ডিএমটিসিএলের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত হতে হবে। কিন্তু এর আগে এনবিআর থেকে কীভাবে ভ্যাট আদায় করবে তা স্পষ্ট করতে হবে। যে ভাড়া থেকে কেটে নিবে, না কি ভাড়ার সঙ্গে যোগ করে ভাড়া বাড়িয়ে আদায় করা হবে।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ওই সুবিধা দিয়ে আসছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু এই জুনের পরে ওই ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা বাতিল করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ কারণে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১ জুলাই থেকে মেট্রোরেল সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট কর্তন ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে ঢাকা দক্ষিণ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

ঢাকা দক্ষিণ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার শওকত আলী সাদীর সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে ৩০ জুন। এনবিআর গত ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবার ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পুনরায় আলোচনা হলেও মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়ার অপারগতা জ্ঞাপন করে এনবিআর। 

এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর আদায় করতে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা পরিপালন যেমন ১৫ শতাংশ মূসকসহ টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করে মূসক আদায় এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পর্কে বিভাগীয় দপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

গত ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেল চলাচল মতিঝিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস নেই। সব যাত্রী একই ভাড়ায় নির্ধারিত গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে পারেন। 

এ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিন ফুট উচ্চতার শিশুরা বিনা ভাড়ায় এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্টে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারেন। কিন্তু সবার জন্য মেট্রোরেল ও মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস না থাকায় মেট্রোরেলের সেবার ওপর এই মুহূর্তে কোনো ধরনের মূসক বা ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল না এতদিন।