ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

পর্যটন কর্মীদের প্রশিক্ষণে মালয়েশিয়ার সহযোগিতাকে স্বাগত জানানো হবে: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
আপডেট: ২৬ মে ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
পর্যটন কর্মীদের প্রশিক্ষণে মালয়েশিয়ার সহযোগিতাকে স্বাগত জানানো হবে: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে কর্মরত কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে  মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতাকে স্বাগত জানানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।

রবিবার (২৬ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে তার দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, পর্যটন শিল্পের কর্মীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ প্রদান করা যেতে পারে। পর্যটন শিল্পে পারস্পরিক সহযোগিতা দুই দেশের জনগণের  সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। জনশক্তি রপ্তানিসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গত ১৫ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নেও আমাদের যৌথভাবে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

ফারুক খান বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা অসীম। পর্যটনের এই অফুরন্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প সম্পর্কিত ব্যবসায় অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ার পর্যটন শিল্পের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা রয়েছে। তারা চাইলে তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। সরকার পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগকারীদের সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।

সাক্ষাৎকালে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে টেলিকমিউনিকেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ করার বিষয়টিও আমি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে দুই দেশের যৌথভাবে কাজ করতে পারাটা হবে আনন্দের। এছাড়াও মালয়েশিয়া ইতোমধ্যেই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে বৃত্তি প্রদান করে থাকে যার মধ্যে পর্যটন সম্পর্কিত বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পর্যটন সম্পর্কিত বিষয়ে বৃত্তি যেন আরও বৃদ্ধি করা হয় সে বিষয়ে আমি চেষ্টা করবো।

হাইকমিশনার আরও বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো শ্রমবাজার। আমরা আশা করব বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত কর্মী মালয়েশিয়া গমন করবেন তারা যথাযথ ভিসা নিয়ে আইনানুগ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে সেখানে যাবেন এবং আইনগতভাবে অবস্থান করবেন। কর্মীদের দক্ষতা এবং সুনাম যত বাড়বে তত বেশি এই শ্রমবাজারের ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশ।

তিথি/এমএ/

শাহজালালে সাড়ে ৪ কেজি স্বর্ণ জব্দ

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
শাহজালালে সাড়ে ৪ কেজি স্বর্ণ জব্দ
ছবি : সংগৃহীত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওমানের মাস্কাট থেকে আসা একটি ফ্লাইট থেকে ৪ কেজি ৪২০ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দারা।

বুধবার (৩ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সালাম এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট থেকে এই স্বর্ণ জব্দ করা হয়। জব্দ করা স্বর্ণের বাজার মূল্য চার কোটি ৫০ লাখ টাকা।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এ-শিফট) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সহকারী পরিচালক প্রদীপ কুমার সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দর কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল এ-শিফটের সদস্যরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন। এ সময় মাস্কাট থেকে আসা সালাম এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট নং ওভি-৪৯৭ আনুমানিক ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে রামেজিং করা হয়। এ সময় বিমানের সিট নং ২ (ডি-ই-এফ) এর ওপরে লাগেজ রাখার কেবিনে কালো স্কচটেপ মোড়ানো দুটি ভারী বস্তু পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে কালো স্কচটেপ কেটে ৩৮ পিস (প্রতি পিস ১০ তোলা) গোল্ডবার পাওয়া যায়, যার ওজন চার কেজি ৪২০ গ্রাম।

জব্দ করা স্বর্ণগুলো কাস্টমস হাউসের শুল্ক গুদামে জমা করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

অমিয়/

সাবেক অতিরিক্ত আইজিপির বিপুল সম্পদের সন্ধান

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ এএম
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপির বিপুল সম্পদের সন্ধান
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার এবং তার স্ত্রীর নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের দুজনের অবৈধ সম্পদ অন্তত ৩০ কোটি টাকার। এর মধ্যে শামসুদ্দোহার ২ কোটি ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের প্রায় ২৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। 

এ-সংক্রান্ত দুটি মামলার তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে। কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতে পৃথক দুটি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। শামসুদ্দোহা দুই চার্জশিটেই আসামির তালিকায় আছেন। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও হুলিয়া জারির আবেদন জানানো হয়েছে। গতকাল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক (বর্তমানে পিআরএল ভোগরত) শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ পৃথক দুটি মামলা করেন। তিনি মামলার তদন্ত শেষে ২০২২ চার্জশিট দাখিলের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। 

এরপর গত বছর মে মাসে কমিশন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলমকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। খোরশেদ আলম পুনরায় তদন্ত করে সম্প্রতি চার্জশিট দাখিলের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিশন এই প্রতিবেদন অনুমোদন করলে গতকাল আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এদিকে শামসুদ্দোহা গুলশানে সরকারি বিলাসবহুল বাড়ি অবৈধভাবে দখলে রেখে ৮ বছর ধরে বসবাস করছেন বলে জানা গেছে। 

একটি চার্জশিটে শামসুদ্দোহার বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলক্ষেত ও ঢাকার নবাবগঞ্জে ৩৫টি দলিলে ৫৬৩ শতক জমির মালিকানার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংক করপোরেট শাখায় ০৩৯১২১০০২০৫৭০১ অ্যাকাউন্টে জমা ১৪ কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫৫ টাকা পাওয়া যায়। তিনি অর্গানিক অ্যাগ্রো ফার্মস নামে একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দেখিয়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে অন্তত ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা ঋণ নেন। 

এ ছাড়া তার নামে ২৫ লাখ টাকা করে তিনটি অ্যাকাউন্টে মোট ৭৫ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। এভাবে তার নামে ২১ কোটি ৫ লাখ ৯ হাজার ৭৩৭ টাকার সম্পদ রয়েছে। তিনি দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে ১২ কোটি ৬০ লাখ ৯৯ হাজার ৫১৬ টাকার সম্পদের মালিকানা দাবি করেন। ফলে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এর মধ্যে অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৫৭ লাখ ৩ হাজার ৩৭৮ টাকা। 

শামসুদ্দোহার বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে ৩৪টি নথি ও দালিলিক তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে এবং তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। 

অপর চার্জশিটে শামসুদ্দোহার গৃহিণী স্ত্রী ফেরদৌসীর নামে রাজধানীর নিকুঞ্জে ৫ শতক, খিলক্ষেতে ৩৭ শতক, গুলশানের বিভিন্ন মৌজায় ৮৮ শতক, গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় ৪.৬৪ একর ও নবাবগঞ্জে ১২.৮৭ একর জমিতে ওয়ান্ডারেলা গ্রিন পার্ক জমির বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। তার নামে এক্সিম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও প্রাইম ব্যাংকসহ বিভিন্ন অ্যাকেউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। 

সব মিলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৪১ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার ৩১ টাকা জমা ও উঠানো হয়েছে। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক করপোরেট শাখায় ০৩৯১২১০০০৭৯৭৯১ অ্যাকাউন্টে জমা ৩৫ কোটি ২৭ লাখ ১২ হাজার ২৪৮ টাকা পাওয়া যায়, যা ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি উত্তোলন করেন। 

তার নামে মোট ৩১ কোটি ৪৯ লাখ ১ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে তিনি ৩ কোটি ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকার সম্পদের মালিকানা দাবি করেন। ফলে তিনি ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এর মধ্যে ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জিত বলে দুদকের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

ফেরদৌসীর বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে ৩৪টি নথি ও দালিলিক তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে এবং তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। 

সরকারি বাড়ি দখল: গুলশান ১৩৫ নম্বর রোডের এসইএস (এ)৬ নম্বর প্লট। এক বিঘা জমির ওপর নির্মিত সরকারি ডুপ্লেক্স বাড়ি। গত আট বছর এই সরকারি বাড়িতে আছেন শামসুদ্দোহা। এ সময়ে তিনি কোনো ভাড়া দেননি। উল্টো বাড়িটি এককালীন বরাদ্দ চেয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তবে পূর্বাচলে আরেকটি প্লট পাওয়ায় আবেদন নাকচ হয়। 

তবু তিনি বাড়িটি ছাড়েননি। তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে একবার ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেয় আবাসন পরিদপ্তর। তবে পুলিশের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় সে প্রক্রিয়া থেমে যায়। এর পর আবাসন পরিদপ্তর আর কখনো তাকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেনি।

বিলাসবহুল ওই বাড়িতে একসময় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ থাকতেন। তিনি অবসরে যাওয়ার পর ২০০৮ সালে আবাসন পরিদপ্তর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শামসুদ্দোহা খন্দকারকে বসবাসের জন্য ওই বাড়ি বরাদ্দ দেয়। ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর শামসুদ্দোহা খন্দকার প্রেষণে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

ওই বছরের ৪ মার্চ তিনি অবসর-উত্তর (পিআরএল) ছুটিতে যান। পিআরএলে থেকেও তিনি বাড়িটির দখলে থাকেন। এরপরও তিনি বাসাটি ছাড়েননি। ঢাকায় থাকার মতো তার কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট না থাকার কারণ উল্লেখ করে ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাড়িটি এককালীন বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেন। পূর্ত মন্ত্রণালয় আবেদনটি নাকচ করলে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। 

প্রত্যয় স্কিম দ্বিতীয় দিনেও অচল ঢাবি-জবি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
দ্বিতীয় দিনেও অচল ঢাবি-জবি
কর্ম বিরতিতে লাইব্রেরী বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে। গতকাল মঙ্গলবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করেন।

এদিকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার পাশাপাশি লাইব্রেরিও বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে অন্যান্য দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এটা সবার জন্য দুঃখজনক ঘটনা। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে না নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা আশা করব, আমাদের দাবি যখন পূরণ হবে, তখন পর্যন্ত যে সেশনজট বা যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তা আমরা স্পেশাল ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়ে পূরণ করতে পারব।'

সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। এ আন্দোলন নিয়ে অনেক ধরনের অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ আন্দোলন করা হচ্ছে। মূলত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যই এ আন্দোলন করছেন। আর প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিম্মি করা হচ্ছে।

এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঢাবির কর্মচারী সমিতির সভাপতি সারোয়ার মোর্শেদ বলেন, ‘এই আন্দোলন সফলভাবে শেষ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। প্রধানমন্ত্রীকে কে বা কারা এমন ভুলভাল বুঝিয়েছে, আমরা জানি না। বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য আন্দোলন করে ছাত্রত্ব হারিয়েছিলেন। তাদের প্রতি এই অন্যায় স্কিম মেনে নেওয়ার মতো নয়। প্রত্যয় স্কিম বাতিল করা না হলে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাবিকে অচল করে দেব, পুরো বাংলাদেশ অচল করে দেব।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও বিজ্ঞান লাইব্রেরি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির মূল ফটকে ঝুলছে কর্মবিরতির ব্যানার। যেখানে লেখা, ‘পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে ১লা জুলাই ২০২৪ হইতে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি’।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পেনশনসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। এর ফলে সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমসহ দাপ্তরিক সব কার্যক্রম। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ফটকে তালা দেওয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তরগুলোতেও একই অবস্থা। শিক্ষকরা দুপুর ১২টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও কর্মকর্তারা সকাল থেকেই কর্মবিরতি দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই আন্দোলনে নেমেছি। যাতে আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আকাশ-পাতাল বৈষম্য তৈরি না হয়। একটি মহল এ আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছানোর জন্য গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আন্দোলন আমাদের স্বার্থে। কিন্তু আসলে এ আন্দোলন ভবিষ্যতে যারা শিক্ষকতায় যোগদান করবে তাদের জন্য।’
পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চলবে

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপত্তি জানানোর পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। তবে এটিতে গোঁজামিল রয়েছে উল্লেখ করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে তিন দফা দাবি আদায়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নং পয়েন্টের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ৮ নং পয়েন্টে যা সংখ্যা দেখিয়েছে সব ঠিক। 

কিন্তু এটার মধ্যে চরম জালিয়াতি রয়েছে। ২০২৪ সালে টাকা জমা করে ৩০ বছর পরে ২০৫৪ সালে পেনশন পাবেন। তাদের হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা পাবেন প্রতি মাসে। এই ৩০ বছরে বেতন বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্ট, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় তার পেনশন হওয়া উচিত ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এটা আমরা বুঝিয়ে দিতে পারব। প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শনির আখড়ার পাটেরবাগ এলাকায় একটি চারতলা ভবনের ছাদের লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে মো. রবিউল হাসান ওসমান (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। 

সোমবার (২ জুন) রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা নিহতের বন্ধু ইসমাইল জানান, ওসমান পাশের আরেকটি বাসায় থাকতেন। রাতে বন্ধু সৈকতের বাসার ছাদে ওঠার সময় তিনি ছাদের লিফটের ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ওসমানের বড় ভাই রাকিবুল বলেন, ‘বাসার পাশেই সে সন্ধ্যার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বের হয়েছিল। পরে খবর পাই ওসমান ছাদ থেকে পড়ে গেছে। পরে আমরা ঢামেক হাসপাতালে এসে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, নিহতের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।

নিহত ওসমান পেশায় দর্জি। যশোর কোতোয়ালি থানার হুসতলা গ্রামের থাই অ্যালুমিনিয়াম দোকানের ব্যবসায়ী হাফিজ মোল্লার ছেলে।  তিনি শনির আখড়ার পাটেরবাগ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

এমপি আনার হত্যা: এবার মোস্তাফিজুরের দায় স্বীকার

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:১১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:০৭ এএম
এমপি আনার হত্যা: এবার মোস্তাফিজুরের দায় স্বীকার
ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে (আনার) হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে করা মামলার অন্যতম আসামি মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) এই জবানবন্দি দেন তিনি। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় পুলিশ এদিন আদালতে তাকে হাজির করেন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তা রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত। এ নিয়ে এই মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিলেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল গত ২৬ জুন আনার হত্যায় জড়িত  ফয়সাল আলী সাহাজী ও মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে। পরের দিন ২৭ জুন আদালত তাদের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।