ঢাকা ২০ আষাঢ় ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

রাজনীতিতে কী হচ্ছে সামনে!

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০০ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪১ এএম
রাজনীতিতে কী হচ্ছে সামনে!

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন ঘনিয়ে আসছে। আগামী ৭ জানুয়ারি এ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। ওই দিন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের মাঠে নামার প্রক্রিয়ায় আছেন। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তাদের সতীর্থরাও আছে নির্বাচনী দৌড়ে। তবে এর উল্টো দিকে নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো আছে ধারাবাহিক আন্দোলনে। মাঠের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ ও সতীর্থরা দফায় দফায় অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি পালন করছে। 

রাজনীতির এই দ্বিমুখী অবস্থানের প্রভাবে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে নানা ধরনের সহিংস ঘটনা। বাসে আগুন, রেললাইন কেটে ফেলাসহ সংঘাত-সংঘর্ষও চলছে বিভিন্ন এলাকায়। সরকারি দল থেকে যেমন নির্বাচন বানচালের দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তের অভিযোগ তুলছে, তেমনি নির্বাচন বর্জনকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে নিপীড়ন-নির্যাতন, হামলা-মামলা, জেল-জুলুমের। প্রতিদিনই আদালতে পুরোনো মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের। ধরপাকড়ও চলছে। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এমন সহিংস ঘটনায় পুলিশসহ এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েক শ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সামনে ‘ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে’। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘বিএনপি সন্ত্রাস করলে আমরা হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকব না।’ আরেক দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ছাড়া নির্বাচনী কাজে বাধা হতে পারে বা ভোটাররা ভোট দিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন এ ধরনের কোনো সভা-সমাবেশ বা অন্য কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন না করতে বলা হয়েছে। বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হচ্ছে শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের কথা। এমন পরিস্থিতিতে সামনে কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। নির্বাচন ঘিরে সামনের দিনগুলোতে পরিবেশ কী শান্তিপূর্ণ থাকবে নাকি ২০১৪ সালের মতোই সহিংস পথে যাবে দেশ সেই শঙ্কাও দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।

এদিকে বুধবার গাজীপুরের রেললাইনের স্লিপার কেটে ফেলার বিষয়টি নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। ভোটের আগে এই ধরনের আরও ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা করছে তারা। তবে তারা সহিংসতা রোধে কাজ করছে। পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে এক পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। আর ২৮ অক্টোবর থেকে গত ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৩৭৬টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি এ সময় দুর্বৃত্তরা ২৪১টি যানবাহন ভাঙচুর করেছে। এই সময়ে প্রায় ৬৪৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের আশঙ্কা, নির্বাচনকে ঠেকানোর নামে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আরও বেশি সক্রিয় হবে। এতে বাড়বে আরও সহিংসতা। 

এ বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকা ও সারা দেশে ত্রিমুখী নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলছে। তিন দিন আগে পুলিশ সদর দপ্তরে মাসিক অপরাধ সভায় আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জেলার এসপিদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের জেলা শহর থেকে শুরু করে থানা শহরের প্রত্যেক মোড়ে টহল বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

বিএনপির সূত্র থেকে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত ১১ দফায় ২৩ দিন অবরোধ এবং তিন দফায় চার দিন হরতাল করেছে বিএনপি। এ ছাড়া ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মহাসমাবেশের চার-পাঁচ দিন আগে থেকে আজ পর্যন্ত মোট ২১ হাজার ৬১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মোট মামলা ৬১৪টি, এ সময়ে ২১ জনের (সাংবাদিক ১ জন) মৃত্যু ও ৬ হাজার ২৩৩ জনের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত দেড় মাসে ঢাকার আদালতে বিএনপির অন্তত ৯২৫ জনের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের রায় আসে। মোট ৭২টি মামলায় এই রায় হয়। এসব মামলার প্রায় সবগুলোই একাদশ ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় করা হয়।

এদিকে গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘সরকার হয়তো পুলিশ দিয়ে, বোমা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, আগামী প্রজন্মের কাছে আপনারা কোন বাংলাদেশ রেখে যাচ্ছেন? আসুন, সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি ব্যবহার নিশ্চিত করি। তা না হলে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।’

আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে আওয়ামী লীগের প্রায় ২৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ২৮ অক্টোবরেই শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৫ জন যুব মহিলা লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী রয়েছেন। ২৯ অক্টোবর বিএনপির হরতালের দিন লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া- পাল্টাধাওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা জাহাঙ্গীর আলম নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১০ জন।

সামনের দিনগুলোতে বিএনপি কঠোর কর্মসূচি দিলে দলীয় অবস্থান কী হবে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দলীয় কর্মসূচি পালন করতেই পারে। তবে তাদের কর্মসূচি যদি মানুষ পোড়ানো হয়, মানুষকে লক্ষ্য করে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ হয়, বাস পোড়ানো হয়, মানুষের জানমালের ক্ষতির কারণ হয়, তারা যদি সহিংসতা-সন্ত্রাস করে, তাহলে সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগ হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে না। দলের সব নেতা-কর্মী সতর্ক থাকবেন। আগুন সন্ত্রাসকারীদের দেখলেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেবেন।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হাবিবুল হাসান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ছাড়া নির্বাচনীকাজে বাধা হতে পারে বা ভোটাররা ভোট দিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন এমন কোনো সভা-সমাবেশ বা অন্য কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা থেকে সবাইকে বিরত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় খবরের কাগজকে জানান, নির্বাচন ঘিরে যাতে দেশে সহিংসতা না বাড়ে এ জন্য পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে টহল টিমকে আরও জোরদার ডিউটি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, যারা নাশকতার সঙ্গে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া নাগরিকরা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য কাজ করছে পুলিশ। 

অবরোধের কারণে ঢাকাসহ সারা দেশে বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে গত ৭ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয় যে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচির মধ্যে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকারীদের ব্যাপারে তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়। 

পুলিশ সদর দপ্তরের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকেও এমন ঘোষণা দেওয়া হয়। ডিএমপি কমিশনার বাসে আগুন দেওয়া দুর্বৃত্তদের ধরার জন্য কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পুরস্কার দিয়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে দেখা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে বাসে আগুন ও বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এতে চারদিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। গত বুধবার ঢাকায় তিনটি গাড়িতে আগুন লেগেছে। ওই দিনই গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের একটি অংশ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। ওই পথে যাওয়ার সময় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় পাঁচজন। 

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকাসহ সারা দেশের থানাগুলোকে আরও সতর্ক হতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে দেশের প্রতিটি থানায় কুইক রেসপন্স টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। সহিংসতার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে দ্রুতই ঘটনাস্থলে যাওয়া যায়, এ জন্য পুলিশকে বহুমুখী নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। 

অতি প্রয়োজন ছাড়া পুলিশের ছুটি দেওয়া থেকে এসপিদের মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সহিংসতাকারীরা যাতে কেপিআইভুক্ত এলাকায় কোনো ধরনের সহিংসতা চালাতে না পারে সে জন্য কাজ করছে পুলিশ। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে পার্বত্য এলাকা পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত না হতে পারে সেই দিকে নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অন্যদিকে জানতে চাইলে বিএনপির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন মেসবাহ খবরের কাগজকে বলেন, প্রতিদিন নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে, যার সংখ্যা এখন পর্যন্ত এক হাজারের ঊর্ধ্বে। নিম্ন আদালতে বিচারের ক্ষেত্রে এ রকম চলতে থাকলে বিচারপ্রার্থীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। দেশের মানুষের নিম্ন আদালতের প্রতি আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে।

হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে বরগুনার নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে বরগুনার নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ
ছবি : সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বরগুনা জেলার স্থানীয় পর্যায়ে নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। 

বুধবার (৩ জুলাই) বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবনে তারা সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় বেতাগী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান, পৌর মেয়র এবি এস গোলাম কবীর ও পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সালমান/

সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের ওপর আক্রমণ: রিজভী

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের ওপর আক্রমণ: রিজভী
নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুকে দেখতে হাসপাতালে রুহুল কবির রিজভী

সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সরকারপ্রধানের নির্দেশেই এই বর্বরোচিত আক্রমণটা করা হয়েছে বাচ্চুর ওপর। কারণ বিএনপি নেতাদের রক্ত দেখলেই সরকারপ্রধান আনন্দিত ও খুশি হন। এই কারণেই একটি দোয়ার অনুষ্ঠান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে। এই হামলা শুধু ন্যক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত নয়, আওয়ামী লীগ যে একটি বর্বর সংগঠন সেটির বহিঃপ্রকাশ।’

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন গুরুতর জখম নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু একজন বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। যাকে গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষ সজ্জন হিসেবেই চেনেন। জেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এমনকি জেলার তিনি প্রধান নেতা। তার গায়ে আদিম বন্য হিংস্রতায় এভাবে আক্রমণ করে তার হাত, পা, শরীর ক্ষতবিক্ষত করেছে। আজকে তাকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়ে কী আনন্দ পেলেন সেখানকার আওয়ামী লীগ এবং এমপি শিমুল সাহেব?’ শহীদুল ইসলাম বাচ্চুর সুস্থতা কামনা করেন তিনি।

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গতকাল বুধবার (৩ জুলাই) কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাটোর জেলা বিএনপির সমাবেশ ঘিরে হামলায় গুরুতর জখম হন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু। 

মিজানুর রহমান/সালমান/

 

দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিচ্ছে সরকার : মান্না

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিচ্ছে সরকার : মান্না
ছবি : খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, ‘আজ পত্রিকায় দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতকে ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী? আপনি তো ট্রানজিট দেননি, দিয়েছেন তো করিডোর। তাদের দেশ থেকে ট্রেন ঢুকবে, সেই ট্রেন আবার তাদের দেশে যাবে। সেখানে কী থাকবে আমরা জানি না।’ 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে ‘সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর পুলিশি হামলার ১৪ বছরেও বিচার না হওয়ায় দোষীদের বিচারের দাবিতে’ এ প্রতিবাদ সভা হয়। 

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকার কিছু কিছু মানুষকে হঠাৎ করে সামনে আনেন। খুব রসিকতা করে, হাসি-ঠাট্টা করে তাকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব দিয়ে দেন। আজ রাষ্ট্রের প্রধান, এক নম্বর ব্যক্তি রসিকতা করতে করতে খুনিদের মুক্তির সনদে স্বাক্ষর করে দেন। রসিকতা করতে করতে তাদের আত্মীয়স্বজনদের আরও প্রমোশন দিয়ে দেন। এরা জালিম সরকার, প্রতারক সরকার।’

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।’ কিন্তু তিনি বেনজীর আহমেদ, আজিজ আহমেদ, মতিউরসহ তাদের প্রথম দেখেছেন? আজিজের ভাইদের তিনি প্রথম দেখেছেন? তাকে তিনি প্রমোশন দেননি, প্রশ্রয় দেননি আর আমাদের ডেপুটি স্পিকারের ছেলে ২০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছে। এ নিয়ে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে পরিবার থেকে বলা হয়েছে, বেড়াতে গেছে। এই ২০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকির মামলা কি আছে? এই নিয়ে কোনো মামলা হয়েছে কি? এই নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম নিউজও করেছে। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল বলেছেন, ‘এরা আমাদের দলের কেউ নয়’।”

মান্না বলেন, ‘পুলিশের একটি সিপাহি পদে চাকরি দিতে গেলে আগে তার পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে। তার পরিবারের কেউ, দূর সম্পর্কের কেউ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে থাকলে তার চাকরি হয় না। কিন্তু সরকার একজন মানুষকে সামরিক বাহিনী থেকে ধীরে ধীরে বাহিনীপ্রধান বানিয়ে দিলেন, তার পরিবারের খোঁজ নেননি। তার আপন ভাই জেলে আছে এটা জানতেন না?’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার আমার-আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারে না। কিন্তু কোর্টকে দিয়ে কোটা তুলে দিতে পারে। কোর্টকে দিয়ে এমন এমন কাজ করে যাতে জনগণের অধিকার খর্ব হয়। জনগণের অধিকার খর্ব করতে সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে।’ 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘এই সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে না। এই সরকার জিনিসের দাম কমাতে পারে না, জনগণের ভরণপোষণ দিতে পারে না, ভোট দিতে দেয় না, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় না, মানুষের ওপর অত্যাচার করে, নির্যাতন করে, এখন পর্যন্ত জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলার বিচার করা হয়নি। এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। ভরসা রাখেন, আজ হোক, কাল হোক এর বিরুদ্ধে সেরকম আন্দোলনই গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’ 

মিজানুর রহমান/সালমান/

বিতর্কিত কারিকুলাম ও সিলেবাস মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি করবে: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
বিতর্কিত কারিকুলাম ও সিলেবাস মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি করবে: চরমোনাই পীর
ছবি : সংগৃহীত

বিতর্কিত কারিকুলাম ও পাঠ্যসিলেবাস মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। 

তিনি বলেন, ‘নতুন কারিকুলাম ১০০ শতাংশ কারিগরিনির্ভর হওয়ায় শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। শুধু তাই নয়, এই কারিকুলামের পাঠ্যসিলেবাস লজ্জাহীন প্রজন্ম উপহার দিতে চলেছে।’ 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লার লাকসামে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর।

রেজাউল করীম বলেন, ‘ধর্মীয় ও ইসলামী শিক্ষার অভাবে মানুষ বিপথগামী হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ ও উঠতি বয়সীদের কিশোর গ্যাংসহ ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে।’

চরমোনাই পীর বলেন, “৯ম শ্রেণির ‘জীবন- জীবিকা’ বইয়ে ‘নারীরূপী পুরুষের অন্তর্বাসে ভরপুর ছবি সম্বলিত কিউআর কোড ব্যবহার’ করে যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইচ্ছাকৃতভাবেই এসব করা হলেও কর্তৃপক্ষ বেখবর। প্রয়োজনে এসব পাঠ্যপুস্তক বাতিল করে আবারও অভিজ্ঞ, দক্ষ, রুচিশীল স্কলারদের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। যেন ধর্মীয় চেতনায় বেড়ে উঠা আমাদের সন্তানরা চরিত্রহীন হয়ে না যায়।”

তিনি বলেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্রে ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জালিমদের কবল থেকে আলেমদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ওলামায়ে কেরামকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’ 

জেলা সভাপতি মুফতি শাসছুদ্দোহা আশরাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াসের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীশ আবরার, কেন্দ্রীয় নেতা ও কুমিল্লা জেলা উত্তর সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফী।

এনাম আবেদীন/সালমান/

আ.লীগের রাজনীতির পুঁজি নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও রসিকতা : আলাল

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
আ.লীগের রাজনীতির পুঁজি নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও রসিকতা : আলাল
প্রতিবাদ সভায় কথা বলছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল

নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও রসিকতা আওয়ামী লীগের রাজনীতির পুঁজি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি। 

জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ২০১১ সালের ৬ জুলাই সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর পুলিশি হামলার ১৪ বছরেও দোষীদের বিচার না হওয়ায় তাদের বিচারের দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম (জিসফ)।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা অকৃতজ্ঞ। ২০০৭ সালে সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে বিদেশ পাঠিয়ে দিয়েছিল। খালেদা জিয়াকেও দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেদিন খালেদা জিয়া দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘দেশের ১৬ কোটি মানুষ আমার সন্তান। আমি এই মাটি ছেড়ে কোথাও যাব না।’ এমনকি শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার সুযোগ দিতে তিনি সেসময় বিবৃতি দিয়েছিলেন। তাকে আটকে রাখা অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক। সুতরাং আজ খালেদা জিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ তো দূরের কথা শেখ হাসিনা তাকে জেলে রেখে তার সাধারণ সম্পাদক দিয়ে খেলা হবে, খেলা হবে বলছেন।” 

তিনি বলেন, ‘সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে যারা অমানবিকভাবে টানাহেঁচড়া করেছেন তারা আসলে পুলিশের লোক নয়, তারা পুলিশ লীগের লোক। এই লীগ করতে করতে আজকে দেশটাকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আবারও নাকি খেলা হবে। তাদের এতই খেলাধুলার ইচ্ছা যে সংসার টিকে না। চলে যায়। তাদেরকে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতে হয়। আমি বলব, খেলার ইচ্ছা থাকলেই রাষ্ট্রকে নিয়ে খেলবেন না। সাধারণ মানুষের জীবনকে নিয়ে বারবার খেলবেন না।’

আলাল আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। বাজারে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে। সব প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ করেছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামীতে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি আসবে। আপনারা সবাই সেই আন্দোলনে আগের মতো শামিল হবেন। কারণ আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে না পারলে দেশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক চাই না। তবে ট্রানজিট ও করিডোরের নামে তাদের গোলামিও করব না।’ এ সময় তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা দেওয়ার আহ্বান জানান।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মনজুর রহমান ভুইয়ার সভাপতিত্বে ও ফোরামের নেতা সোহেল রানা ও এইচএম স্বপন রানার পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/