
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধানের গণসংযোগে হামলা, গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস) শ্যামল সিদ্দিকীকে সশরীরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে ওই উপজেলার গড্ডিমারী মেডিকেল মোড় এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে আতাউরের ওপর হামলা চালায় ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ও তার লোকজন। এ সময় তার গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি আতাউর রহমানের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হায়াত খান জানান, ওই এলাকায় নির্বাচনি গণসংযোগে গেলে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলসহ আওয়ামী লীগ, যুব ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী তাদের পথরোধ করে গণসংযোগে বাধা দেয়। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সফরসঙ্গীদের ওপর হামলাসহ গাড়ি ও অফিস ভাঙচুর করা হয়।
হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমানের গণসংযোগ বাধা, গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি চলছে।’
এদিকে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস) আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। লালমনিরহাট-১ নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২১ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে লালমনিরহাট-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধান গড্ডিমারী বাজার এলাকায় তার নির্বাচনি অফিস উদ্বোধন করতে গেলে আপনার লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে উক্ত কাজে বাধা দিয়েছে মর্মে সংবাদ প্রচার হয়। প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে আপনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১(ক) (৩) ধারার বিধান ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ১১ (গ) ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন।
আইন ভঙ্গের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে না এই মর্মে ২৩ ডিসেম্বর শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১(ক) এর ৫(ক) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্দেশ দেওয়া হলো।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। তার দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থী গণসংযোগের নামে নৌকার বিরুদ্ধে কথা বললে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে পড়ে।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।
মাহফুজুল/সাদিয়া/সালমান/