ঢাকা ২ চৈত্র ১৪৩১, রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫
English

স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা, এমপির পিএসকে শোকজ

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১৮ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা, এমপির পিএসকে শোকজ
অভিযুক্ত শ্যামল সিদ্দিকী। ছবি : সংগৃহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধানের গণসংযোগে হামলা, গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস) শ্যামল সিদ্দিকীকে সশরীরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে ওই উপজেলার গড্ডিমারী মেডিকেল মোড় এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে আতাউরের ওপর হামলা চালায় ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ও তার লোকজন। এ সময় তার গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। 

লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি আতাউর রহমানের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হায়াত খান জানান, ওই এলাকায় নির্বাচনি গণসংযোগে গেলে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলসহ আওয়ামী লীগ, যুব ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী তাদের পথরোধ করে গণসংযোগে বাধা দেয়। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সফরসঙ্গীদের ওপর হামলাসহ গাড়ি ও অফিস ভাঙচুর করা হয়। 

হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমানের গণসংযোগ বাধা, গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি চলছে।’ 

এদিকে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস) আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। লালমনিরহাট-১ নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২১ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে লালমনিরহাট-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধান গড্ডিমারী বাজার এলাকায় তার নির্বাচনি অফিস উদ্বোধন করতে গেলে আপনার লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে উক্ত কাজে বাধা দিয়েছে মর্মে সংবাদ প্রচার হয়। প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে আপনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১(ক) (৩) ধারার বিধান ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ১১ (গ) ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন।

আইন ভঙ্গের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে না এই মর্মে ২৩ ডিসেম্বর শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১(ক) এর ৫(ক) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্দেশ দেওয়া হলো।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। তার দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থী গণসংযোগের নামে নৌকার বিরুদ্ধে কথা বললে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে পড়ে। 

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।

মাহফুজুল/সাদিয়া/সালমান/

আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল জামায়াত

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৪ পিএম
আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৫:১২ পিএম
আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

রবিবার (১৬ মার্চ) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ কথা জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

ফেসবুক পোস্টে জামায়াতের আমির লেখেন, ‘মাগুরার শিশু আছিয়ার পরিবার নিতান্তই একটি অসহায় পরিবার। তার পিতা একজন মানসিক রোগী। এ পরিবারে অন্য কোনো পুরুষ সদস্য নেই। মানবিক কারণে এই পরিবারের দায়িত্ব মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইনশাআল্লাহ নিচ্ছে। ’

তিনি আরও লেখেন, ‘ইতোমধ্যে বিষয়টি মজলুম এই পরিবারের সদস্যদের অবহিত করা হয়েছে। সবার কাছে দোয়ার আবেদন, আল্লাহ তাআলা যেন সঠিকভাবে এ দায়িত্ব পালনে আমাদের তাওফিক দান করেন। আমিন।'

এর আগে শনিবার (১৫ মার্চ) মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে যান জামায়াত আমির।  তার সঙ্গে ছিলেন জেলা জামায়াতের আমির এম এ বাকেরসহ দলের নেতা-কর্মীরা।

শফিকুল/মেহেদী/

শহিদ এবং আহত সাড়ে ৮০০ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৩ পিএম
আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম
শহিদ এবং আহত সাড়ে ৮০০ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন
ছবি: খবরের কাগজ

জুলাই বিপ্লবে শহিদ এবং আহত সাড়ে আটশ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। শহিদ এবং আহত পরিবারের সদস্যদের হাতে ঈদ সামগ্রিক তুলে দেওয়া হবে। আগামী ১৮ মার্চ থেকে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ কার্যক্রম শুরু হবে। 

রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। 

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহিদ এবং আহতদের সরকারের দেওয়া তালিকা সাড়ে আটশত পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এসব পরিবারকে ঈদ সামগ্রি দেওয়া হবে।

ডোনার বলেন, 'শুরুতেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জুলাই আগস্ট বিপ্লবে আত্মদানকারি অকুতোভয় ছাত্রজনতাকে। যাদের দুর্বার প্রতিরোধে অবসান হয়েছে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের। সহমর্মিতা জানাই যারা এখনও স্বৈরশাসকের পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার দাবি জানাই যারা দুচোখ হারিয়ে একেবারে অন্ধ কিংবা এক চোখ হারিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন তাদের। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমাদের চিকিৎসকরা ইতোমধ্যেই আহতদের সু-চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েছেন এবং সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে এই যোদ্ধাদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবে ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকরা।'

তিনি বলেন, আর কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আমরা যারা সুস্থ আছি ভাল আছি তারা হয়ত আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করব। কিন্তু জুলাই বিপ্লবে আমরা যাদের চিরদিনের জন্য হারিয়েছি তারা কেউ আমার ভাই কেউ আমার সন্তান। সেই ভাইহারা এবং সন্তানহারা স্বজনদের পাশে দাঁড়াতে চায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। ভাগাভাগি করে নিতে চায় তাদের আনন্দ-বেদনা। সীমিত সামর্থ নিয়ে আমরা পৌঁছে যেতে চাই প্রতিটি শহিদ পরিবারের কাছে। ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের নির্দেশনায় শহিদ পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছে যাবে সংগঠনের সদস্যরা।' 

ডা. ডোনার বলেন, 'জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের চাঁদা এবং অনুদান আর্ত মানবতার সেবায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যা খরাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ দুর্বিপাকের সময় এই প্রতিষ্ঠান দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনে ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের সদস্যরা যেকোনো বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়াবে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।'

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফ পরিচালক ও ঈদ সামগ্রিক বিতরণ আয়োজনের সদস্য সচিব ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন, পরিচালক প্রফেসর মোর্শেদ হাসান খান, ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, ডা. শাহ মো. আমান উল্লাহ,ডা.আবুল হাসনাত মো. শামীম, ডা. শেখ মনিরুদ্দিন জুয়েল, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সাঈদ খান প্রমুখ। 

শফিকুল/মেহেদী/

খোন্দকার দেলোয়ার ও মওদুদ আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১২:১৭ পিএম
খোন্দকার দেলোয়ার ও মওদুদ আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ

বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৬ মার্চ। এ উপলক্ষে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিএনপি। এ দুই নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে বাণী দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একুশে পদকপ্রাপ্ত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন বিএনপির ষষ্ঠ মহাসচিব। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেবর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আমৃত্যু মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ২০১১ সালের ১৬ মার্চ ৭৮ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন। এ তথ্য জানিয়েছেন তার বড় ছেলে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু। তিনি জানান, মানিকগঞ্জের ঘিওর পাঁচুরিয়া জামে মসজিদ (কবরস্থানসংলগ্ন) এবং নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে আগামী মঙ্গলবার।

অন্যদিকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে তার কবর জিয়ারত করবেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

মওদুদ আহমেদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২১ সালের ১৬ মার্চ মারা যান।

রুহুল আমিন হাওলাদারের দখল করা জমি সুরক্ষার দায়িত্বে বিএনপি নেতা!

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
রুহুল আমিন হাওলাদারের দখল করা জমি সুরক্ষার দায়িত্বে বিএনপি নেতা!
রুহুল আমিন হাওলাদার

পটুয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের কুয়াকাটায় দখল করা জমির সুরক্ষা দায়িত্ব নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসল্লির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি রুহুল আমিনের দখল থেকে উদ্ধার হওয়া জমি পুনরায় দখল নেওয়ায় কুয়াকাটা বিএনপির অধিকাংশ নেতা-কর্মীর সমালোচনার মুখে পড়েন আজিজ মুসল্লি। তাই তার নিজের দোষ ঢাকতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ ভিত্তিহীন মিথ্যা ও অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন। এদিকে আজিজ মুসল্লি রুহুল আমিন হাওলাদারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আবুল কালাম নামের ওই জমির অপর এক মালিক। 

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বুধবার দুপুরে (১২ মার্চ) কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসল্লির নেতৃত্বে তার সহযোগী ও তার ভাতিজা জয় বাংলা ক্লাবের সেক্রেটারি মিজান মুসল্লি, জাহাঙ্গীর শেখ, শাহজাহান মুসল্লি, জাহাঙ্গীর খাঁ এবং রুহুল আমিন হাওলাদারের হোটেল গ্র্যান্ড কুয়াকাটার কয়েকজন কর্মচারী কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়কের কুয়াকাটা পেট্রল পাম্পসংলগ্ন জমির সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড উপড়ে ভ্যানযোগে নিয়ে যান।

এ সময়ে জমির মূল মালিক আবদুল রসিদ মোল্লা ও তার ছেলে মঞ্জু মোল্লাসহ এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করেন। ওই ভিডিওতে আজিজ মুসল্লিকে বলতে শোনা যায়, রুহুল আমিনের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের বসিয়ে মীমাংসা দেওয়ার। এ জন্য তার সঙ্গে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। ভিডিওটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, গত ১৭ বছরে রুহুল আমিন হাওলাদার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কুয়াকাটাসহ সাগরপাড় এলাকায় কয়েক শ একর জমি দখল করেছেন। ৫ আগস্টে দেশের পটপরিবর্তনের পর তার দখল করা বেশ কিছু জমি প্রকৃত মালিকরা বুঝে নেন। জমিগুলো পুনঃদখল এবং অন্যান্য সম্পদের সুরক্ষা দিতে পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসল্লিকে দায়িত্ব দেন রুহুল আমিন হাওলাদার। 

রুহুল আমিনের অবৈধ সম্পদের সুরক্ষার দায়িত্ব পাওয়ার পর গত ৯ মার্চ লতা চাপিলা এলাকার আবদুল রসিদ মোল্লা গংয়ের জমি পুনরায় দখল নেন আজিজ মুসল্লি। এ ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই জমির অপর এক মালিক কাজী মো. আবুল কালাম। 

তিনি জানান ২০০৬, ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে লতাচাপলী মৌজায় এসএ ৯৬৪ নম্বর খতিয়ানের জমির মালিক আবদুর রসিদ মোল্লার কাছ থেকে ২ একর ৩১ শতক জমি কিনে ভোগদখলে ছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসর পরে ২০১০ ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার জমি জবরদখল করে রাখেন। 

তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে আমাদের জমি পুনরুদ্ধার করি। গত শনিবার (৮ মার্চ) জমির সীমানা নির্ধারণ করিয়া পিলার এবং সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। পরের দিন রবিবার পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজ মুসল্লি ও তার সহযোগীরা জমির পিলার ও সাইনবোর্ড উঠিয়ে নেয়। ওই সময়ে স্থানীয়রা দখলদারত্বের ভিডিও ধারণ করেন। ওই ফুটেজ সংরক্ষিত আছে।’

এ ঘটনার প্রচার হওয়ার পরে পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসল্লি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরসহ রসিদ মোল্লার পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করেছেন।

গত শুক্রবার বিকেলে এ বিষয়ে পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসল্লি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিএনপির কুয়াকাটা পৌর শাখার সভাপতি হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো অপরাজনীতি করিনি। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপির কিছু লোক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের জমিতে সাইনবোর্ড ও পিলার স্থাপন করে বিএনপির সুনাম নষ্ট করছেন।’

একইভাবে রুহুল আমিন হাওলাদারের ওই জমিতে একটি পক্ষ সাইনবোর্ড ও পিলার স্থাপন করায় তাদের সঙ্গে রাগারাগি করেছি এবং কয়েকটি পিলার ও সাইনবোর্ড অপসারণ করেছি। তাদের এও বলেছি, ‘রুহুল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে কোনো ঝামেলা থাকলে ঢাকায় চল, আমি নিজে থেকে সব কিছু ঠিকঠাক করে দেব। সহজ বিষয়টি একেক জন একেকভাবে রং লাগাচ্ছে। এখানে রুহুল আমিন হাওলাদারকে সুরক্ষা দেওয়ার কিছু নেই।’

ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম
আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:১১ এএম
ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মঞ্জুরুল করিম সুমন

জামালপুর সদরে জমি দখলে বাঁধা দেওয়ার ঘটনায় জান্নাতুল ফেরদৌস বন্যা নামের এক নারীকে গলা চেপে ধরে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়।

ওই ছাত্রদল নেতার নাম মঞ্জুরুল করিম সুমন (৪০)। তিনি জামালপুর জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আরিফুল ইসলাম চিকু (৩০), রবিন আহম্মেদ (৪২) ও জাহিদুল ইসলাম রাজু (৪৫)। তারা সহোদর ভাই এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন শাহপুর এলাকায় জান্নাতুল ফেরদৌস বন্যার অসুস্থ বাবা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে জমি দখলের উদ্দেশ্যে যুবলীগ নেতা আরিফুল আলম চিকুসহ তার ভাই রবিন, জাহিদুল ও ছাত্রদল নেতা মঞ্জুরুল করিম সুমনসহ তাদের পক্ষের লোকজন অতর্কিতভাবে হামলা করে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে সেখানে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় বন্যা ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দিলে বন্যাকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

এসময় খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চিকুকে আটক করে। পরে তাকে পুলিশভ্যানে উঠিয়ে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে চিকুর মামাত ভাই জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম সুমন লোকজন নিয়ে চিকুকে ছিনিয়ে নেয়। তখন সুমন বন্যাকে গলা চেপে ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেন এবং গালমন্দ করেন। পরে পুলিশ তাদের গাড়ি করে বন্যাকে অন্যত্র সরিয়ে নেন।

ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস বন্যা বলেন, আমার ক্রয়করা জমি যুবলীগ নেতা চিকু ছাত্রদল নেতাকে তার পক্ষে নিয়ে অবৈধ বেদখল করে সীমানাপ্রাচীর নিমার্ণের চেষ্টা চালান। পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করার পর তারা চিকুকে আটক করে থানায় আনার চেষ্টা করে। এ সময় তাকে ছিনিয়ে নেয় সুমন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

যুবলীগ নেতা আরিফুল আলম চিকু বলেন, আমি শুধু বিরোধপূর্ণ জমিতে গিয়েছিলাম। এতেই আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে থানায় খবর দিয়ে পুলিশ নিয়ে আসে। এসময় পুলিশ আমাকে ধরলে এলাকার লোকজন বাধা দিয়ে ছিনিয়ে নেয়।

বক্তব্য জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম সুমন বলেন, জমি নিয়ে চিকু এবং বন্যার মধ্যে বিভেদ চলছিল। ঘটনার দিন পুলিশ এসে চিকুকে আটক করলে স্থানীয়রা তাকে ছিনিয়ে নেয়। আমি শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমি বন্যার গলা চেপে ধরে তাকে হত্যার চেষ্টা করিনি, তাকে গালমন্দও করা হয়নি। মামলা তুলে নিতে কাউকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে না।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, জমি নিয়ে মারামারির ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গাড়ি থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তখন চিকুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ছিল না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। এসময় তাকে ছাড়াতে অনেক লোকজন আসলে হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। এখন চিকুসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/মাহফুজ