নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণের নৌকার সমর্থকদের হামলায় ঢাকা থেকে আসা দুই সাংবাদিকসহ ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদের ১২ কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় এটিএন বাংলার গাড়িসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের মাইজদী-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কের গাবুয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নোয়াখালী-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদ ট্রাক মার্কার গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে গাবুয়া বাজারে পৌঁছলে নৌকা প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণের লোকজন লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় এটিএন বাংলার গাড়িসহ গণসংযোগের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
হামলায় এটিএন বাংলার রিপোর্টার মো. নাজিবুর রহমান ও ক্যামেরাম্যান এইচএম এহসান স্বজনসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ফররুখ আহমেদ, হুমায়ুন কবির, তোফাজ্জল হোসেন রিপন, ইফাজ, ইসমাইল, রুবেল, মো. রাশেদ, রায়হান, আপন ও প্রান্ত আহত হয়েছেন। তাদের বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদ খবরের কাগজকে জানান, আমরা একলাশপুরের তুলাবাড়ি এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে দেখা করে চৌমুহনী ফেরার পথে গাবুয়া বাজারে পৌঁছলে নৌকা মার্কার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দুই সাংবাদিকসহ আমার ১০ জন কর্মী মারাত্মক আহত হয়েছেন। এখন তারা আমাকেও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।
এটিএন বাংলার সাংবাদিক মো. নাজিবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তাদের গাড়িবহরে একদল লোক হামলা করে। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে তার লোকজন পার করে দিলে হামলাকারীরা আমাদের গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এতে আমাদের গাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। এটি মিডিয়ার গাড়ি বলার পর হামলাকারীরা বলেন- মিড়িয়ার গাড়ি ভাঙলে কি হয়?’
বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনি অ্যাজেন্ট ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ খবরের কাগজকে বলেন, ‘জনসমর্থন হারিয়ে নৌকার প্রার্থী বেসামাল হয়ে গেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট-উৎসব করতে কিন্তু মামুনুর রশিদ কিরণ আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করব। প্রতিকার না পেলে আমরা ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হব।’
ঘটনার সংবাদ পেয়ে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজমুল হাসান রাজিব, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান, বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজমুল হাসান রাজিব খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণসহ তার লোকজনকে বারবার ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেননি। তাই হামলার বিষয়ে নৌকা সমর্থক কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইকবাল হোসেন/সাদিয়া/অমিয়/