![বিরোধী দলে থাকতে চাই : জি এম কাদের](uploads/2024/01/10/1704894483.GM-Kader.jpg)
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে শপথ গ্রহণের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা বিরোধী দলে ছিলাম, বিরোধী দলে থাকতে চাই।’
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসা জাতীয় পার্টি এবার ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টি জানিয়েছিল, দলটির নবনির্বাচিত এমপিরা বুধবার শপথ নেবেন না, বৃহস্পতিবার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন। পরে রাতে সেই সিদ্ধান্ত বদলে যায়। বুধবারই শপথ নিতে সংসদ ভবনে হাজির হন ভোটে জয়ী জাতীয় পার্টির ১১ সদস্য।
এবার আওয়ামী লীগ-সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ে ছয় গুণ বেশি আসনে স্বতন্ত্ররা জয় পাওয়ায় দ্বাদশ সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে কারা বসবে, সেই আলোচনা হচ্ছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বতন্ত্ররা জোট করে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন করতে পারবেন। দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ এবং নিক্সন চৌধুরীও বলেছেন, স্বতন্ত্ররা আলাদা জোট করবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন- স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোট বেঁধে বিরোধী দলের আসনে বসলে কপাল পুড়বে জাতীয় পার্টির।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জি এম কাদের বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, নিয়মটা কী। তবে আমরা বিরোধী দলে ছিলাম এবং বিরোধী দলে থাকতে চাই। আমরা জনকল্যাণমুখী, যেটি জনগণের ভালো হয় সেটিই আমরা করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের বিরোধী ভূমিকায় যেহেতু সংসদে আছি, সেহেতু সরকারের সমালোচনা করা, সরকারের ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া- এটির জন্য গ্রুপ লাগে না, ইনডিভিজুয়ালি আমরা করতে পারি। গত সংসদে আমি ইনডিভিজুয়ালি অনেক কথা বলেছি, এবারও বলব। এতে তো কোনো বাধা নেই। গ্রুপ থাকলেই যে কথা বলা যাবে, তা তো না। এটি হচ্ছে ইচ্ছা ও দায়িত্ববোধ। বিরোধী দলের একজন এমপি, কেউ স্বতন্ত্রে যদিও থাকেন, তিনি যদি সরকারের ত্রুটি নিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলতে চান, অবশ্যই পারেন।’
রংপুর সদর-৩ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য জি এম কাদের বলেন, ‘সংসদে আসার বিষয়টি আমার জন্য সব সময়ই আনন্দের। সেদিক দিয়ে বলতে গেলে, আবার সংসদে এলাম সেটি বেশ আনন্দের অনুভূতি।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসে নিজেদের দায়িত্ব পালন করার কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। শপথ গ্রহণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কোনো শরিক না। আমরা সংসদে অপজিশনে বসে নিজেদের দায়িত্ব পালন করব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সংসদে জনগণের পক্ষে যদি ভূমিকা রাখতে হয়, তবে গ্রুপওয়াইজ হওয়া লাগবে; তা তো কোনো কথা না। নিজে থেকে দায়িত্ব নিয়েই আমরা কথা বলতে পারব বিরোধীদলীয় এমপি হিসেবে। আমরা যে কটি আসন পেয়েছি, সেটি নিয়েই আমরা সংসদে আমাদের ভূমিকা পালন করব।’
সংসদে বিরোধী দল হতে ২৫টি আসনের প্রয়োজন জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, ‘এটি একটি টেকনিক্যাল বিষয়। আমাদের পার্লামেন্টারি পার্টির মিটিংয়ে স্বতন্ত্ররা মিলে যদি আমরা ২৫ জন বসতে পারি, তাহলে সেটি সম্ভব। আরও কোনো ফাঁক আছে কি না, সেটি আমরা দেখব। বিষয়টি কী হবে, এখনো সিদ্ধান্ত আমাদের হয়নি। আমরা স্পিকারের সঙ্গে আবার বসব। তারপর আপনাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’