![নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ছাড়া জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না : বাম গণতান্ত্রিক জোট](uploads/2024/01/27/1706364538.cpbkk.jpg)
পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রহসনের নতুন মাত্রা দেখাল। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নীতিহীন রাজনীতির চেহারা জনসম্মুখে আরেকবার ফুটে উঠেছে। এ অবস্থা থেকে রাজনীতি বাঁচাতে নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক জোটের রাজনীতির পতাকাতলে সচেতন দেশবাসীকে সমবেত হতে হবে। এছাড়া মানুষের মুক্তি আসবে না।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে ‘দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশে’ সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদমন্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদ মার্কসবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, যে নির্বাচনে এক শতাংশ মানুষ ভোট দিলে ওই ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বৈধ বলা হয়। যে নির্বাচনি ব্যবস্থায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলেও তাকে বৈধ বলা হয়, যে নির্বাচনি ব্যবস্থায় নির্বাচন টাকাওয়ালা ও ক্ষমতাধরদের হাতে বন্দি থাকে সেই নির্বাচনি ব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া ভালো নির্বাচন এবং যোগ্যতম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আশা করা যায় না।
সমাবেশে বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দেশে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির মূল্যবৃদ্ধির নানা প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি, ‘ডামি’ নির্বাচন বাতিল, জাতীয় সংসদে সংখ্যাানুপাতিক পদ্ধতির প্রবর্তন সহ নির্বাচন ব্যবস্থা আমূল সংস্কার এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান।
সমাবেশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, অধিকাংশ মানুষের হাতে টাকা নেই, কম খেয়ে বেঁচে আছেন, ঠিকমতো শিক্ষা, চিকিৎসা করতে পারছে না। অন্যদিকে একাংশ মানুষ টাকার পাহাড় গড়ছে। টাকা পাচার হচ্ছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। প্রতিটি মানুষের কাঁধে বিদেশি ঋণের বোঝাও বেড়ে চলছে। নির্বাচনি হলফনামায় দেখা যাচ্ছে নির্বাচিত এমপি বা ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যেই বেশি ব্যস্ত। হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য অনুসন্ধান এবং এর বাইরে আরও কোন সম্পদ আছে কিনা তা তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্ডারে বিজিবি সদস্যকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকারের নতজানু নীতির কারণে এ ধরনের সীমান্ত হত্যা ঘটেই চলেছে। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ও অন্যায় আবদার মেনে নিয়ে সরকার দেশ পরিচালনা করছে। যা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রতি হুমকি।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে থেকে ২৮ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে মতবিনিময়সহ সভা-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সরকার জনগণের দাবি উপেক্ষা করে মূল্যবৃদ্ধি, লুটপাট অব্যাহত রাখলে আগামীতে ঘেরাওসহ নানা ধরণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন।
সফিক/এমএ/