আগামীকাল ৯ অক্টোবর কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
কমরেড ফরহাদের স্মৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে সিপিবিসহ বিভিন্ন দল-সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। স্মরণসভায় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনাকে বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই কমরেড ফরহাদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
বিবৃতিতে নেতারা কমরেড ফরহাদের মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য জেলা, উপজেলা ও শাখা সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কমরেড ফরহাদ ১৯৩৮ সালের ৫ জুলাই পঞ্চগড়ের বোদায় জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র ফরহাদ মহান ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে প্রথম সারির নেতৃত্বে ভূমিকা পালন করেন।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুবার জেল-জুলুম-হুলিয়া, নির্যাতন ভোগ করেন। ৩৫ বছরের ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনে তিনি পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়া-এরশাদের আমলে কারাবরণসহ দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর আত্মগোপন বা কারান্তরালে ছিলেন।
১৯৫৪ সালে তাকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের কুখ্যাত নিরাপত্তা আইনে বিনা বিচারে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখা হয়। ১৯৫৫ সালে ১৭ বছর বয়সে মোহাম্মদ ফরহাদ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় কমরেড ফরহাদ ১৯৫৯ সাল থেকে গোপনে ছাত্রদের সংগঠিত করতে থাকেন।
১৯৬২ সাল থেকে প্রায় এক বছর হুলিয়া মাথায় নিয়ে গোপনে ছাত্র গণআন্দোলন সংগঠন ও শ্রমিক শ্রেণির পার্টির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে কমরেড ফরহাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি-ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর প্রধান সংগঠক ছিলেন তিনি।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের ক্ষমতা দখলের পর সামরিক শাসনবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য তথা ১৫ দলীয় ঐক্যজোট গঠন; জাতীয় দাবি পাঁচ দফা প্রণয়ন ও যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি বলিষ্ঠ ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) নির্বাচনি এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সালমান/