একে অপরকে সালাম দেওয়া: সাহাবায়ে কেরামের কেউ কেউ শুধু সালামের সাওয়াব লাভের উদ্দেশ্যেই বাজারে যেতেন। তোফায়েল ইবনে উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর কাছে আসতেন এবং সকালে তার সঙ্গে বাজারে যেতেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা সকালে বাজারে যেতাম, তখন তিনি প্রত্যেক খুচরা বিক্রেতা, স্থায়ী ব্যবসায়ী, মিসকিনসহ যেকোনো ব্যক্তির কাছ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তাকে সালাম দিতেন। এরপর তোফায়েল বলেন, আমি একদিন (অভ্যাসমতো) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি আমাকে তার সঙ্গে বাজারে যেতে বললেন। আমি বললাম, আপনি বাজারে গিয়ে কী করবেন? আপনি তো বেচাকেনার জন্য কোথাও থামেন না, কোনো পণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেসও করেন না, দরদাম জানতে চান না এবং বাজারের কোনো মজলিসেও বসেন না। তিনি বললেন, ‘হে ভুঁড়িমোটা, (তোফায়েলের ভুঁড়ি মোটা ছিল) আমরা সকালবেলা বাজারে একমাত্র সালাম দেওয়ার উদ্দেশ্যে যাই। যার সঙ্গেই সাক্ষাৎ হয়, আমরা তাকেই সালাম দিই।’ (মুয়াত্তায়ে মালেক, ৮৫০)
ক্রয়-বিক্রয়ে সত্য কথা বলা: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বিক্রেতা ও ক্রেতা যদি ব্যবসার সময় সত্য কথা বলে, তা হলে আল্লাহতায়ালা তাদের ব্যবসায় বরকত দেবেন। আর যদি তাদের কোনো একজনও কিছু গোপন করে, তা হলে আল্লাহতায়ালা বরকত নষ্ট করে দেবেন।’ (বুখারি, ২০৮২)
বাজারে কঠোর, রূঢ় ও নির্দয় না হওয়া: আতা ইবনে ইয়াসার (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.)-কে বললাম, আপনি তাওরাতে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর গুণাবলি বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আচ্ছা। আল্লাহর কসম! কোরআনে বর্ণিত তাঁর কিছু গুণের কথা তাওরাতেও উল্লেখ করা হয়েছে, হে নবি, আমি আপনাকে সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে প্রেরণ করেছি এবং উম্মিদের রক্ষক হিসেবেও। আপনি আমার বান্দা ও আমার রাসুল। আমি আপনার নাম মুতাওয়াক্কিল (আল্লাহর ওপর ভরসাকারী) রেখেছি। এরপর তিনি বললেন, তিনি বাজারে কঠোর, রূঢ় ও নির্দয় স্বভাবের ছিলেন না।’ (বুখারি, ২১২৫)
প্রয়োজন শেষে দ্রুত বাজার ত্যাগ করা: অযথা অতিরিক্ত সময় বাজারে না কাটানো। কারণ বাজার হচ্ছে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দের জায়গা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দের জায়গা হলো মসজিদ আর সবচেয়ে অপছন্দের জায়গা হলো বাজার।’ (মুসলিম, ৬৭১)
লেখিকা: অনুবাদক ও গবেষক