চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আউটফিল্ডের ঘাসের দিকে তাকালে দেখা যায় কিছু কিছু অংশ হয়ে আছে লালচে। খালি চোখে দূর থেকে বোঝা যাচ্ছিল মাঠের পরিচর্যায় ঠিকঠাক পরিমাণ পানি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরে এক মাঠকর্মীকে জিজ্ঞাসা করে নিশ্চিত হওয়া যায়, বঙ্গোপসাগর পাড়ের সাগরিকায় পানি সরবরাহ অনিয়মিত।
চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে নিয়মিত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মাঠে ঠিকঠাক পানি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান, মাঠে কাজ করা এক মাঠকর্মী। কেন মাঠে নিয়মিত বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না সেটাও খবরের কাগজকে জানান তিনি। এর দায় অবশ্য বিসিবি কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নয়। চট্টগ্রামে থাকা বিশুদ্ধ পানির সংকটের কারণে তৈরি হয়েছে এই সমস্যা।
ক্রিকেট মাঠে সাধারণত ব্যবহার করা হয় উন্নত জাতের ঘাস। একেক দেশে একেক জাতের ঘাস ব্যবহার করা হয়। এই ঘাসের পরিচর্যার জন্য দরকার হয় বিশুদ্ধ পানি। লবণাক্ত পানিতে বেঁচে থাকার উপযোগী নয় এই ঘাসগুলো। ফলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পরিচর্যায় দরকার হয় বিশুদ্ধ পানির। বিশুদ্ধ পানি দেওয়া না হলে ঘাস বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। সে কারণে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম পরিচর্যায় নির্ভর করতে হয় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির ওপর। সেই বিশুদ্ধ পানি নিয়মিত সরবরাহ না হওয়ায় মাঠের সঠিক পরিচর্যা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান চট্টগ্রামের এই মাঠের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু।
গত ১৩ মার্চ থেকে সাগরিকায় নিয়মিত পানি সরবরাহ করছে না চট্টগ্রাম ওয়াসা। গতকাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ তিন-চার দিন মাঠে পানি সরবরাহ করা হয়েছে। কেন চট্টগ্রাম ওয়াসা নিয়মিত পানি সরবরাহ করছে না? এই প্রশ্নের জবাবে জাহিদ রেজা বাবু খবরের কাগজকে বলেন, ‘১৩ মার্চ থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। এরমধ্যে এক-দুই দিন পানি পেয়েছি। ওয়াসাতে পানি সাপ্লাই নেই। বিল নিয়ে সমস্যা নাই। পানির সংকট চট্টগ্রামে। বৃষ্টি না হইলে ওরা পানি সাপ্লাই করতে পারে না।’ বৃষ্টির পানি ছাড়া পানি সরবরাহ করলে সেখানে লবণ চলে আসেও বলে জানান এই কিউরেটর।
চট্টগ্রামের মাঠ পরিচর্যার জন্য দিনে প্রায় দুই লাখ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। এত বিশাল পরিমাণ পানির পুরোটাই সরবরাহ করা হয় চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে খানিকটা বৃষ্টি হলেও কেন তারা নিয়মিত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না- এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চট্টগ্রাম ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সেখান থেকে কোনো ধরনের উত্তর পাওয়া যায়নি। এই দিকে জাহিদ রেজা বাবু মাঠে পানি সরবরাহ না থাকায় কী সমস্যা হয় সেটা জানিয়ে বলেন, ‘ঘাস তো একটু লালচে হয়ে যায়।’ এছাড়া নিয়মিত সঠিক পরিমাণ পানি সরবরাহ করা সম্ভব না হলে উইকেটেও ঠিকঠাকভাবে প্রস্তুত করা সম্ভব হয় না বলে জানান তিনি।
পানিসংকটের মাঝেই আজ সকাল থেকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট। ম্যাচের আগের দিন মাঠে পানি দেওয়ার দৃশ্য নিয়মিত দেখা গেলেও গতকাল চট্টলার এই মাঠে সেটি দেখা যায়নি। মাঠকর্মীরা রোলিং মেশিন দিয়ে উইকেট প্রস্তুতেই বেশি সময় ব্যয় করেছেন। তবে আশার বাণী হলো, গতকাল বৃষ্টি হওয়ায় সেই সমস্যার খানিকটা সমাধান হতে পারে।