![বুয়েটে নিরাপত্তা চান রাজনীতির পক্ষের শিক্ষার্থীরা](uploads/2024/04/30/buetkk-1714414967.jpg)
সামাজিক অবমাননা-কালচারাল র্যাগিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগের তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি এবং ক্যাম্পাসে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনীতির পক্ষে অবস্থানকারী ১৭ শিক্ষার্থীর একটি দল। এদিকে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। এবার সেই সব পরীক্ষা পুনর্নির্ধারণে আজ মঙ্গলবার সব বিভাগের শ্রেণি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বুয়েট প্রশাসন।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা বুয়েটের শহিদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনলাইন ও সরাসরিভাবে হেনস্তা ও অপমানের শিকার এবং জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। উপাচার্যকে এ বিষয়ে অবগত করার পরও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত রিপোর্ট বা দোষীদের ওপর শাস্তি আরোপ করা হয়নি। যার ফলে বেড়েই চলেছে নিপীড়ন ও সামাজিকভাবে হেনস্তা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাগর বিশ্বাস, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নীল এবং মিশুদত্ত চাঁদ। পরে শিক্ষার্থীরা বুয়েট উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবর সামাজিক অবমাননা ও কালচারাল র্যাগিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগের তদন্ত এবং ক্যাম্পাসে তাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনপত্র জমা দেন।
এদিকে স্নাতক পর্যায়ের জুলাই ২০২৩ টার্মের স্থগিত করা পরীক্ষা এবং ৩০ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষাগুলোর তারিখ পুনরায় নির্ধারণের বিষয়ে বিভাগীয় প্রধানসহ শ্রেণি প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ডিন, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং রেজিস্ট্রার নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) এক সভার আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ১১টায় উপাচার্য সভাপতিত্বে কাউন্সিল ভবনের দোতলায় এ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশের অভিযোগে ছয় দফা দাবি তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত ১ এপ্রিল এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ ২০১৯ সালে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে কর্তৃপক্ষের জারি করা সেই প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেন। তবে আদালতের আদেশ হাতে পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বলে জানিয়েছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। গত ৩০ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর গত বুধবার ১৩ দিনের পরীক্ষা শেষে বুয়েটে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হলেও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরেননি।