![অফিসের জটিল পরিস্থিতি সামলাবেন যেভাবে](uploads/2024/07/01/----1719818660.jpg)
অফিসে কাজের চাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে কাজের চাপ এতটাই বেশি হয় যে, তা সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। তখন মনের ওপরও চাপ পড়ে। কাজের চাপের সঙ্গে যদি আবার নতুন করে যোগ হয় অফিস পলিটিক্স, তাহলে তো কথাই নেই। এসব সামলাতে গিয়ে নিজেকে ভালো রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে।
অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে সামান্য আড্ডা কিংবা গল্প হতেই পারে। কিন্তু তা কেবল কফির কাপের কফিটুকু ফুরোনো পর্যন্ত। এরপর আবার কাজের ভেতর ডুব। অফিসে কাজ করতে গিয়ে সব সময় যে আপনার পথ মসৃণ পাবেন, তা কিন্তু নয়। বরং বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় মোকাবিলা করতে হতে পারে। জেনে নিন কোন পরিস্থিতিতে কী করবেন-
কাজের ক্রেডিট অন্য কেউ নিলে
অনেক সময় দেখা যায়, আপনি খেটেখুটে একটি সফল প্রজেক্ট দাঁড় করিয়েছেন। কিন্তু সেই কাজের পুরো কৃতিত্বই বিভাগীয় প্রধান নিয়ে নিচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে আপনি কী করবেন?
আপনি বলবেন, ‘আমার পয়েন্ট স্পটলাইট করার জন্য ধন্যবাদ’। আপনি সংযমের সঙ্গে কথাগুলো বলুন। ভদ্রভাবে কথা বলে অনেককিছুই সহজ করা সম্ভব। এতে আপনাদের যিনি বস, তিনিও বুঝে যাবেন যে কাজটি আপনার। আপনি যে কাজটি করে দিয়েছেন, তার বিস্তারিত প্রমাণ নিজের কাছে রাখুন। যাতে করে পরবর্তীতে কোনো প্রশ্ন উঠলে সামাল দিতে পারেন।
অফিসে বেশি সময় থাকতে বললে
অনেক সময় দেখা যায়, সিনিয়ররা তার অধিনস্ত কর্মীদের বেশি সময় অফিসে থাকতে এক প্রকার বাধ্য করেন। এমন পরিস্থিতিতে রেগে গেলে চলবে না। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। বিনয়ের সঙ্গে বলুন, আপনার অন্য জায়গায় কাজ রয়েছে। আপনি যে এই কাজে অপারগ তা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বের হয়ে আসুন। সেই সঙ্গে যখন আপনার সিনিয়রের মন ভালো থাকে তখন তার সঙ্গে বসে কাজের সময়ের সীমা নির্ধারণ করে ফেলুন।
কোনো সহকর্মী কড়া ভাষায় কথা বললে
আপনার কোনো সহকর্মী হয়তো আপনাকে কড়া ভাষায় কথা বলেছে। আপনিও মনে মনে চাচ্ছেন তার চেয়েও কড়া ভাষায় উত্তর দিতে। এমনটা যদি করেন তাহলে ভুল করবেন। সহকর্মীর কড়া ভাষার উত্তর দিতে যাবেন না। কারণ এটি তর্ক বাড়িয়ে দেবে। অফিসে শান্তি বজায় রাখার জন্য আপনি শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। সহকর্মীটি যদি আপনার প্রিয় কেউ হন তবে তাকে বুঝতে চেষ্টা করুন। হতে পারে তিনি খুব বেশি কাজের চাপে এমনটা করছেন। মনে রাখবেন- তর্কে তর্ক বাড়ে।
সরাসরি ‘না’ বলবেন না
অফিসে কখনো কখনো এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যখন আপনাকে না চাইলেও ‘না’ বলতে হবে। তবে এটি সরাসরি বলা যাবে না। বলতে হবে সঠিকভাবে কায়দা করে। যদি মনে করেন আপনার ওপর অতিরিক্ত কাজ বা দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তবে সুন্দরভাবে জানিয়ে দিন যে, আপনি একটি টিমের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, আপনার পক্ষে একা এই কাজ করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কৌশলী হতে হবে, অনুরোধটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবেন না। অনেক বসই ‘না’ শব্দটি সহ্য করতে পারেন না।
গুরুতর সমস্যা হলে
কোনো কাজের ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি হলে মনোবল হারানো চলবে না। নিজের মনোবল শক্ত করে অন্যদের ভরসা দিন। মনে রাখবেন- সব সমস্যার সমাধান আছে। সমস্যা গুরুতর হলে শান্তভাবে বসুন এবং চিন্তা করুন এটার সমাধান কীভাবে করবেন। একজন সিনিয়রের সঙ্গে কথা বলুন, যিনি সমস্যাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। সব কাজ মেইলের মাধ্যমে করুন। মৌখিক আলোচনা গুজবের জন্ম দিতে পারে। তাই কাজের প্রমাণ রাখুন।
খোলামেলা আলোচনা করুন
আপনার যুক্তিতে ‘সঠিক’, কিন্তু বসের মতে ‘বেঠিক’- অধিকাংশ সময় এরকম দোটানায় জড়িয়েই ‘বস’-এর সঙ্গে আপনার দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। এরকম পরিস্থিতিকে কী করবেন? এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপারটি নিয়ে আপনার বসের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন। দেখবেন সমাধান বের হয়ে আসছে।
সমালোচনাকে এড়িয়ে চলুন
অফিসের সব সহকর্মী এক ধরনের হয় না। কিছু কিছু সহকর্মী পাবেন যারা আপনাকে সবসময় দমিয়ে রাখার চেষ্টা করবে। আপনি যাই করেন না কেন তারা আপনার সমালোচনা করবে। এ ধরনের ‘বস’ আপনার নিজস্ব উন্নয়নের জন্য খুব বিপজ্জনক। পারলে সমালোচনাকে এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের বসের সঙ্গে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করুন। যদি মানিয়ে নিতে না পারেন তাহলে এ ধরনের কর্মকর্তার অধীনে কাজ না করাই শ্রেয়।
কলি