![পাঁচ গ্রামের হাজারও মানুষ পানিবন্দি, নিষ্কাশনের পথ বন্ধ](uploads/2024/06/29/joypur-hat-1719630150.jpg)
জয়পুরহাট সদরের বম্বু ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের অন্তত চার হাজার মানুষ জলাবদ্ধতার সমস্যায় পড়েছে। স্থানীয় এক প্রভাবশালী পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ময়লা পানির কারণে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। কোনো যানবাহনে করে গ্রামে ঢোকার সুযোগ অনেক আগে থেকেই বন্ধ। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হলেও অভিযুক্ত শাহ আলম মণ্ডলের দাবি, ‘আমার জায়গা দিয়ে পানি যেতে দেব না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের ধারকী আকন্দপাড়া, বড়াইলপাড়া, ফকিরপাড়া, মণ্ডলপাড়া ও প্রধানপাড়া গ্রামের ইট বিছানো সড়কগুলো গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। খড়ের পালা, বাড়ির আঙিনা, কারও কারও বাড়ির সীমানাপ্রাচীরের নিচ পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশেছে নর্দমার নোংরা পানি। স্থানীয়দের বাধ্য হয়ে ওই নোংরা পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাড়ির আঙিনায় পানি ওঠায় অনেকে রান্না পর্যন্ত করতে পারছেন না।
আকন্দপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মোজাহার বলেন, ‘অনেক দিন ধরে দেখছি গ্রামের বৃষ্টির পানি নির্দিষ্ট পথে ড্রেনের মাধ্যমে অপসারিত হতো। কিন্তু প্রায় তিন বছর আগে গ্রামের প্রভাবশালী শাহ আলম মণ্ডল পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেন। সেই থেকে সমস্যায় পড়েছি।’ দেলোয়ার নামে আরেকজন বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ করতে গেলেই শাহ আলম মামলার ভয় দেখান। তার নাকি অনেক ক্ষমতা, তাই কেউ কিছু বলতে পারেন না।’
মাসুদ নামে ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই গ্রামগুলোর পানি স্থানীয় দুটি পুকুর দিয়ে ড্রেনের মাধ্যমে নিষ্কাশন হয়ে আসছিল। শাহ আলম মণ্ডল পুকুর দুটি দখলে নিয়ে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। পরে উপজেলা পরিষদ থেকে ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হলেও শাহ আলম সেই ড্রেনও ভেঙে পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ করে দেন।’
ধারকী বড়াইলপাড়া গ্রামের মাহমুদুল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাগুলোতে পানি থাকায় আমরা ধান বিক্রি করতে পারছি না। গ্রামবাসী অটোরিকশা বা ভ্যান নিয়ে গ্রামে ঢুকতে পারছে না। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। আমরা খুব কষ্টে আছি।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শাহ আলম মণ্ডল বলেন, ‘আমার জায়গা দিয়ে আমি পানি যেতে দেব না। নিউজ করে কোনো লাভ হবে না।’
জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের গতিপথ বন্ধ করার অধিকার কারও নেই। ক্ষতিগ্রস্তরা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৩৩ ধারায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট আদালতে অভিযোগ দিলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’