![মিরসরাইয়ে ভারতীয় চোরাই চিনির রমরমা ব্যবসা](uploads/2024/06/29/Cini-kando-1719638810.jpg)
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে চিনি দেশে এনে রমরমা ব্যবসা করছে চোরাচালানিরা। সীমান্ত থেকে এসব চোরাই চিনি বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে চলে যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। দেশের বাজারে এখন দেশি কোম্পানির মোড়কে বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় চিনি।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের আমলীঘাট এলাকায় মেরকুম সীমান্তে চোরাই পথে চিনি দেশে প্রবেশ করার সময় গত সোমবার রাতে বিএসএফের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় এক কিশোর নিহত হয়। এরপর বেরিয়ে এল থলের বিড়াল।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস ধরে করেরহাট ইউনিয়নের মেরকুম এলাকায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ভারত অংশে একটি ছড়া দিয়ে ভারতীয় চিনি স্লুইস গেটে (ছোট পুল) নিয়ে আসা হয়। স্লুইস গেটের একটি গেট খোলা রাখা হয়। এর ভেতর দিয়ে তারকাঁটা পার করে দেন ভারতীয় শ্রমিকরা। এরপর সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা চোরাই চিনি নৌকায় আমলীঘাট এলাকায় নিয়ে আসে। চোরাকারবারের কর্মযজ্ঞ শুরু হয় সন্ধ্যা নামার পর। সুযোগ বুঝে কখনো ভোররাত পর্যন্ত চলে এই চোরাই চিনি প্রবেশ। দৈনিক প্রায় এক হাজার বস্তা ভারতীয় চিনি প্রবেশ করে এই রুটে।
চিনি চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত কারও নাম প্রকাশে অপারগতা জানান তারা। তবে মফিজ, জামাল মাঝি, রাইফুল ও জসিম নামের ব্যক্তিরা এলাকার কিশোরদের এসব কাজে জড়িত করেন বলে জানা যায়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই এলাকার প্রায় সবাই চোরাই চিনি বহনের কাজ করে। সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতি বস্তা চিনি বহন করে বাংলাদেশে আনলে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পান শ্রমিকরা। এতে দৈনিক প্রায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পান এসব শ্রমিক। তবে এসব শ্রমিকের বেশির ভাগ তরুণ এবং উঠতি বয়সী।
নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন কিশোরকে কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা এসব কাজ করে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, ‘টাকার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিই। এখানে প্রতিদিন দুই হাজার টাকা কামানো যায়। আর ওপর থেকে বিজিবিকে বলা থাকে, তারা কিছু বলে না।’
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আজাদ উদ্দিন বলেন, ‘চিনির ঘটনা আগে জানতাম না। তবে জাহেদ নামে এক ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে এই ঘটনা শুনেছি।’
এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অলিনগর বিওপি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার খোরশেদ আলমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘চিনি চোরাচালান নিয়ে কিছু জানি না। আমরা সীমান্তে নিখোঁজের খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসি।’
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘চিনি চোরাচালান বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে সেখানে গত ২৪ জুন রাতে একটি ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা শুনেছি।’