![শিবগঞ্জে জোড়া হত্যাকাণ্ডের ‘মূল পরিকল্পনাকারী আশরাফ চেয়ারম্যান’](uploads/2024/06/29/arrest-1719642446.jpg)
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম ও তার বন্ধু আব্দুল মতিন মাস্টারকে গুলি করে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক আশরাফের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৮ জুন) নিহত আব্দুস সালামের স্ত্রী ফেরদৌসী খাতুন বলেন, আমার স্বামীর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আশরাফ চেয়ারম্যান। এর আগে বহুবার আশরাফ ফোন করে আমার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সত্যি সত্যি হত্যা করেই ছাড়ল। এ জন্য তিনি হত্যাকাণ্ডের কঠোর শাস্তি দাবি করে বলেন, যারা তার তিন সন্তানকে এতিম করে দিল সে জন্য কঠোর শাস্তি পায়।
অন্যদিকে নিহত আব্দুস সালামের বোন মনোয়ারা বেগম বলেন, গত রোজার ঈদের সময় তার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গাড়িতে বোমা হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় মামলা করা হলেও পুলিশ কার্যকর কোনো ভূমিকা না নেওয়ায় তার ভাইকে সন্ত্রাসী আশরাফের হত্যার শিকার হতে হলো। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আশরাফুল হক আশরাফের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। তবে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার বাড়ি গিয়েও দেখা যায়, ঘরের দরজায় তালা দেওয়া।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নয়ালাভাঙ্গা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সালাম ও আশরাফের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং এলাকার অবস্থা এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে রানীহাটি কলেজের সামনের আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাছে বসেছিলেন নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম ও তার বন্ধু আব্দুল মতিন মাস্টারসহ অন্যরা। ওই সময় মুখে গামছা বাঁধা ১৫-২০ জন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিতে মারা যান আব্দুস সালাম ও আব্দুল মতিন মাস্টার। এ সময় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। এদিকে সন্ত্রাসীদের ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর সালাম সমর্থকরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের রানীহাটি কলেজের সামনে রাস্তায় আগুন দিয়ে ব্যারিকেড দেয়। এতে করে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর পুলিশ আব্দুস সালামের লাশ উদ্ধার করে আড়াই শ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এর আগে রাত ৯টার দিকে আব্দুল মতিন মাস্টারের লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।