![রাখাইনের রাজধানীতে শেল বিস্ফোরণ, নিহত ১২](uploads/2024/03/01/1709267788.Mayanmer.jpg)
মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তয়েতে আর্টিলারি শেল বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১২ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। মায়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নারিনজারায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের মায়োমা আউটডোর মার্কেটে গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। শেলটি শহরেরই একটি নৌঘাঁটি থেকে ছোড়া হয়েছিল, যেখানে জান্তা বাহিনীর ২০তম পদাতিক ব্যাটালিয়ন (আইবি) অবস্থান করছে।
এদিকে মায়ানমারের সরকারি টেলিভিশনের বরাতে ভিয়েতনাম প্লাস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যের মোমেইক ও মাবেইন শহরে গত বুধবার সামরিক আইন জারি করেছে জান্তা সরকার। জান্তানিয়ন্ত্রিত কাউন্সিল দাবি করেছে, রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আইনের শাসন বজায় রাখা এবং এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপর এক আদেশে এই দুই শহরের সেনা কমান্ডারদের প্রশাসনিক ও বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
রাখাইনের সিত্তয়ের এক নারী নারিনজারাকে বলেন, ‘আর্টিলারি শেলটি সরাসরি একটি সবজির গুদামে আঘাত হানে। আমি শুনেছি গুদামের মালিক নিহত হয়েছেন। আমিও এ ঘটনায় আহত হয়েছিলাম। অনেকেই আহত হয়েছেন। তবে সঠিক সংখ্যা বলতে পারছি না।’
তবে সবজি গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনাটি নারিনজারা নিউজ স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
স্থানীয় একজন সমাজকর্মী জানিয়েছেন, আহতদের স্থানীয় সিত্তয়ে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অনুমান কমপক্ষে ১২ জন মারা গেছেন ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। যদিও মায়ানমার নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় ৬ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন।
সিত্তয়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জান্তা বাহিনী অন্তত তিনবার রকেট আর্টিলারি দিয়ে হামলা চালিয়েছে। তবে পাল্টা কোনো হামলার বিষয়ে তারা নিশ্চিত কিছু জানে না। এ হামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি আরাকান আর্মি।
যদিও সিত্তয়ে শহরটি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে নেই। ফলে জান্তা বাহিনী কী কারণে এই শহরে হামলা চালাল, তা স্পষ্ট নয়। তবে আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, খুব শিগগিরই তারা সিত্তয়ে শহর দখলের মাধ্যমে রাখাইনকে জান্তামুক্ত করবে।
রাখাইনে গ্রেপ্তার শতাধিক ব্যক্তির হদিস নেই
জান্তা বাহিনীর সদস্যরা গত ২০ ফেব্রুয়ারি ইয়াঙ্গুন থেকে রাখাইন রাজ্যে রওনা দেওয়া ৩টি বাস থেকে ১০০ জনের বেশি রাখাইনের বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করেছে। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের পরিবার এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং জান্তা বাহিনীর কাছে তাদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে মায়ানমারভিত্তিক আরেক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, সিত্তয়ের বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের মধ্যে যারা বয়সে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের উপযুক্ত, তাদেরও আটক করা হচ্ছে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কাছের সেনাক্যাম্পে নেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী
আরাকান আর্মি মঙ্গলবার দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সামরিক জান্তা রাখাইন রাজ্যের মিনবিয়া শহরের মিন এইচপু সিভিল হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় বেসামরিক ব্যক্তি, চিকিৎসা কর্মীসহ যুদ্ধবন্দি জান্তা সেনারাও আহত হয়েছেন। সূত্র: মায়ানমার নাউ/নারিনজারা