![কারাগারে নির্যাতনের শিকার ফিলিস্তিনিরা](uploads/2024/07/02/Lead-1719891503.jpg)
ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের দিনরাত নির্যাতন করা হয় বলে জানিয়েছেন গাজার আল-শিফা হাসপাতালের পরিচারলক মুহাম্মাদ আবু সালমিয়া। ইসরায়েলে আট মাস বন্দি থাকার পর মুক্তি পেয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
আবু সালমিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতন সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, অনেক ফিলিস্তিনিরই জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে মৃত্যু হয়। ইসরায়েলি ডাক্তার ও নার্সরাও আটকদের ওপর নির্যাতন চালায় এবং এমনভাবে তাদের শরীরকে ব্যবহার করে যেন তারা জড়বস্তু।
ইসরায়েলি বন্দিদের ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয় না। ইসরায়েলের কারাগারে থাকে প্রতিটি বন্দির প্রায় ৩০ কেজি করে ওজন কমেছে। কোনো অভিযোগ ছাড়াই বিচার পরিচালনা করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেন আবু সালমিয়া।
সালমিয়া বলেন, দখলদাররা আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি, কিন্তু তারপরও তিনবার আমাকে বিচারের মুখোমুখি করেছে। তার অর্থ হচ্ছে, তারা আমাকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার করেছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা আইনজীবী পাইনি, কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাও আমাদের দেখতে আসেনি। প্রায় দুই মাস কোনো বন্দিই দিনে এক টুকরার চেয়ে বেশি রুটি পাননি।
ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য বেনি গান্টজ আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক আবু সালমিয়াকে আটক অবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তিই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে সরিয়ে দেওয়া উচিত।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর বলছে, কারাগার পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সালমিয়াসহ ৫৫ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গান্টজ নেতানিয়াহুকে কিছু সরকারি দপ্তর খালি করে জায়গা ও বন্দিদের জন্য বাজেট বের করার আহ্বান জানান।
এদিকে, গাজায় এখনো হামলা ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার সিটির শুজাইয়াতে আবারও তীব্র লড়াই হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে। লড়াইয়ের মধ্যে আটকা পড়েছিলেন অনেক বেসামরিক বাসিন্দা।
আল-জাজিরার হাতে আসা বিশেষ ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ফিলিস্তিনি বন্দিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে গাজায় বিস্ফোরক খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
লেবাননের সঙ্গেও ইসরায়েলের উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের ১৮ জন সেনা আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। লেবানন সীমান্তের গোলান মালভূমিতে অবস্থান করার সময় ওই ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ করে হামলা হয়, এতে তারা আহত হন।
গাজার যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৭ হাজার ৮৭৭ জন মারা গেছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধের মতো বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৯৬৯ জন। আরও বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে, গাজার ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে তাদের মরদেহ। ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে গোটা গাজাই পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। সূত্র: রয়টার্স