ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

এমপি আনার হত্যা আদালতে শিলাস্তির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ১১:৫৬ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৪, ১১:৫৭ পিএম
আদালতে শিলাস্তির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার শিলাস্তি রহমান (২২) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার (৩ জুন) এই জবানবন্দি দেন তিনি। ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, সোমবার বেলা ৩টার দিকে জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন শিলাস্তি। মাঝে আদালত বিচারিক অন্য কাজ করে আবার জবানবন্দি নেওয়া শুরু করেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে জবানবন্দি রেকর্ড শেষ হয়। এরপর শিলাস্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, রিমান্ড চলাকালে শিলাস্তি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শিলাস্তির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। 

আদালতের একটি সূত্র জানায়, শিলাস্তি আদালতকে বলেছেন, তাকে স্ত্রী পরিচয়ে ভারতে নিয়ে যান আক্তারুজ্জামান শাহীন।

এদিকে ঢাকার আরেকটি আদালত এই মামলার প্রধান আসামি মো. আক্তারুজ্জামানসহ ১০ জনের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের তথ্য সরবরাহ করার আদেশ দিয়েছেন। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আস্সামছ জগলুল হোসেন সোমবার এই আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১০ জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য সরবরাহ করার আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল পুলিশ। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। যার ফলে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এসব ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) সরবরাহ করবে।

শিলাস্তি রহমান ছাড়া এই মামলায় ঢাকায় গ্রেপ্তার অপর আসামিরা হলেন সৈয়দ আমানুল্লাহ (প্রকৃত নাম শিমুল ভূঁইয়া) ও ফয়সাল আলী। তারা দুজন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছেন।

এদিকে এমপি আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের এই মামলায় নেপালে অবস্থান করা মো. সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার আরেকটি আদালত। সোমবার একই কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন এই তথ্যও নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত রবিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি সিয়ামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এ আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলাটি করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। মামলার অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই। ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি খুদে বার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত শাহের কাজে নিউ টাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেব।’ এ ছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। খুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।

ডরিন আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে বাবাকে অপহরণ করেছে।

প্রসঙ্গত, এমপি আনার ভারতে খুন হয়েছেন বলে দেশটির গণমাধ্যমে এরই মধ্যে পুলিশের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনায় সেখানে বর্তমানে একটি হত্যা মামলা বিচারাধীন আছে।

এমএ/

এনবিআরের প্রথম সচিবের সম্পদ ক্রোক, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
এনবিআরের প্রথম সচিবের সম্পদ ক্রোক, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল, তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যসহ তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ১৫ জনের স্থাবর সম্পদ ক্রোক (অ্যাটাচ) এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। 

ফয়সাল ছাড়াও আদেশের আওতায় আছেন তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন, আফতাব আলী, মমতাজ বেগম, আহমেদ আলী, ফারহানা আক্তার, কাজী খালিদ হাসান, মাহমুদা হাসান, খন্দকার হাফিজুর রহমান, কারিমা খাতুন, শেখ নাসির উদ্দিন, রওশন আরা খাতুন, ফারহানা আফরোজ, মাহফুজা আক্তার ঊর্মি ও ময়নুল হাসান।

আদেশে ফয়সাল, স্ত্রী আফসানা জেসমিনসহ ১৫ জনের মোট ৮৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে সর্বশেষ ৬ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৮ টাকা স্থিতি রয়েছে। ফয়সাল ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ সাতজনের নামে ১৫টি সঞ্চয়পত্র ফ্রিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া তাদের নামে থাকা সব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের নিদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফয়সালের স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে থাকা রাজধানীর ভাটারায় ৫ কাঠা করে দুটি ও পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পে একটি প্লট এবং চারটি ব্যাংকে মোট ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রোক ও ফ্রিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফয়সালের নামে শান্তিনগরে (হোল্ডিং-১, ফ্ল্যাট- বি-১১) বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৩ থেকে ৬ কাঠার চারটি প্লট এবং দুইটি ব্যাংকে ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রোক ও ফ্রিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া আফতাব আলীর নামেও রয়েছে অঢেল সম্পদ। এর মধ্যে রয়েছে দুইটি ব্যাংকে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। আহমেদ আলীর নামে কিনেছেন সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় কার পার্কিংসহ ৩ হাজার স্কয়ার ফুটের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, মমতাজ বেগমের নামে খিলগাঁওয়ে রয়েছে ১০ কাঠার প্লট। এগুলো সবই ক্রোক ও ফ্রিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলমান আছে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে ক্রোক ও ফ্রিজের আদেশ চাইবে দুদক।

অবৈধ উপায়ে অন্তত হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ফয়সালের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অনুসন্ধান শুরু করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজ। অনুসন্ধান চলাকালে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ও তার স্ত্রী জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে তাদের ২ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের ৫ কাঠার প্লট বিক্রি করেন। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট অর্থসম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করতে আদালতে আবেদন করা হয়। 

আবেদনে বলা হয়, অপরাধলব্ধ আয়ের অভিযোগসংশ্লিষ্ট বর্ণিত সম্পদ/সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তা বেহাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিধায় রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ মানিলন্ডারিং আইনের ১৪ ধারা মতে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন এবং তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য ব্যক্তির নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রি বা মালিকানাস্বত্ব বদল রোধে ব্যাংক হিসাব, ব্যাংকে রাখা সঞ্চয়পত্র ও নন ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের আমানতসমূহ থেকে অর্থ উত্তোলন অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) এবং স্থাবর সম্পদ ক্রোক (অ্যাটাচ) করা একান্ত প্রয়োজন।

শুনানিতে আবেদনের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন দুদকের প্যানেল আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল। 

দুদক সূত্র বলছে, আবু মাহমুদ ফয়সাল সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ লেনদেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের উদ্দেশ্যে শাহজালাল ব্যাংক কারওয়ান বাজার শাখায় তার নিজ নামে অনেকগুলো এফডিআর হিসাব খোলেন। মেয়াদপূর্তির পর এফডিআর ভাঙানো টাকা ও নতুন করে নগদ আনয়ন করে ফারহানা আক্তার, মমতাজ বেগম, মাহমুদা হাসান, খন্দকার হাফিজুর রহমান, কারিমা খাতুনের নামে বিভিন্ন এফডিআর স্কিম খোলেন। পরে এসব টাকা এবি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় আহম্মেদ আলী, আফতাব আলী ও শেখ নাসির উদ্দিনসহ অন্য ব্যক্তিদের নামে ৭০০-এর বেশি অ্যাকাউন্ট খুলে গচ্ছিত রেখেছেন।

দুদকের অনুসন্ধানকালে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ২৪তম বিসিএস (কর) ক্যাডারে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে ২০০৫ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব (কর) হিসেবে কর্মরত আছেন। চাকরিতে যোগদানের পর এ পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলেন।

বেনজীর পরিবারের ৮ ফ্ল্যাট ও ২৫ একর জমির তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম
বেনজীর পরিবারের ৮ ফ্ল্যাট ও ২৫ একর জমির তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা ৮টি ফ্ল্যাট এবং ২৫ একর ২৭ কাঠা জমি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) আদালত এ নির্দেশ দেন। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর বাড্ডা ও আদাবরে থাকা এই ফ্ল্যাটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৪ কাঠা জমি, বান্দরবানে ২৫ একর জমি ও উত্তরায় ৩ কাঠা জমিরও তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। তবে কোন কোন সংস্থাকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আদালতের পূর্ণাঙ্গ আদেশ পাওয়ার পর তা জানা যাবে।’ 

পিপি জানান, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আস্সামছ জগলুল হোসেন এ নির্দেশ দেন। এর আগে ১২ জুন আদালত এসব জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছিলেন। 

আদালত এর আগে বেনজীর ও তার পরিবারের নামে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে ৬২১ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন। তা ছাড়া ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়ে আদালত এসব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তত্ত্বাবধায়কও নিয়োগ দেন। এসব সম্পদের মধ্যে গুলশানের ফ্ল্যাটগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালে আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরের কৃষিজমিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুই জেলার কৃষি কর্মকর্তাদের। আর বেনজীর আহমেদের পরিবারের মৎস্য ও প্রাণীর খামার দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলার প্রাণিসম্পদবিষয়ক কর্মকর্তাকে।

উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ আইজিপি থাকার আগে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ধর্ষণ মামলায় ফের জামিন পেলেন মামুনুল হক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
ধর্ষণ মামলায় ফের জামিন পেলেন মামুনুল হক
মামুনুল হক

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হক ফের জামিন পেয়েছেন।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিব উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, জান্নাত আরা ঝর্ণার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় সম্প্রতি মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান। জামিনে শর্ত ছিল আদালতের হাজিরার সময় সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। তবে গত মঙ্গলবারের শুনানিতে তিনি হাজির না হয়ে শর্ত ভঙ্গ করায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে বুধবার দুপুরে মামুনুল হক আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে ১ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এ ছাড়া বিচারিক আদালতে বর্তামানে এ মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রয়েছে।

মামুনুল হকের আইনজীবী এ কে এম ওমর ফারুক নয়ন জানান, মামুনুল হক অসুস্থ থাকায় সেদিন তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি। বিষয়টি আদালতকে জানানো হলেও আমাদের আবেদন গ্রহণ না করে ওয়ারেন্ট জারি করেন। তাই অসুস্থতা নিয়েই আজ (গতকাল) হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করা অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা রিসোর্টে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে নিয়ে চলে যান। এ ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ বছরের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামের ওই নারী মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে মামুনুল হক দাবি করেছিলেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তবে এমন দাবির পক্ষে মামুনুল হক এখনো পর্যন্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করতে পারেননি।

কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১০ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ০৪:১৪ পিএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ০৪:১৪ পিএম
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১০ জনের যাবজ্জীবন
আদালতে হত্যা মামলার আসামিরা। ছবি : খবরের কাগজ

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে নুরুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার করে টাকা জরিমানা, অনাদায় আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছোট ধুশিয়া গ্রামের মৃত আ. আজিজের ছেলে মো. মাছুম (৩৫), মৃত আ. লতিফের ছেলে তাজুল ইসলাম (৩২), আবদুল কাশেমের ছেলে মো. মোস্তফা (২৪), ডা. মনু মিয়ার ছেলে মো. কাইয়ুম (২৫), আবদুল ছাত্তারের ছেলে মো. কাইয়ুম (২৮), মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. তবদুল হোসেন (৪০)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ওই গ্রামের মৃত ওয়াব আলীর ছেলে মো. নান্নু মিয়া (৪০), মৃত আলী মিয়ার ছেলে আ. মতিন মিয়া (৪০), মৃত আ. খালেকের ছেলে সাইদুল ইসলাম (২৪), সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে বাবুল মিয়া (২৫), মৃত আ. লতিফের ছেলে সফিকুল ইসলাম (৩৫), মৃত নায়েব আলীর ছেলে মো. মোসলেম মিয়া (৪৫), নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সফিকুল ইসলাম (২৮), মৃত আ. বাতেনের ছেলে মো. হেলাল মিয়া (২৫), সরু মিয়ার ছেলে মো. আউয়াল মিয়া (৩০) ও মৃত আ. মতিন মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩০)।

রায় ঘোষণার সময় মো. কাইয়ুম, মো. তবদুল হোসেন, নান্নু মিয়া, মতিন মিয়া, বাবুল মিয়া, সফিকুল ইসলাম, মোসলেম মিয়া, সফিকুল ইসলাম, মো. হেলাল মিয়া ও মো. আ. আউয়াল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, নুরুল হক হত্যা মামলার এজাহারে মোট ২২ জন আসামি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। রায় ঘোষণার সময় ১১ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ৭ আসামি পলাতক রয়েছেন। মামলার বিচার চলাকালীন দুই আসামি মারা যান এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুইজনকে খালাস দেন। এ মামলায় মোট ৯ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। 

মামলার বাদী নুরুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সালিশের রায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মামলার এক নম্বর আসামি মো. মাসুমসহ অন্যরা মিলে ২০১১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এ রায়ে আমরা খুশি।’

জহির শান্ত/সালমান/

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড বাবুকে নিয়ে মোবাইল ফোন উদ্ধারে অভিযান চালাবেন গোয়েন্দারা

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
বাবুকে নিয়ে মোবাইল ফোন উদ্ধারে অভিযান চালাবেন গোয়েন্দারা

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে করা মামলার আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে ফের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছিল পুলিশ। আবেদনের ওপর শুনানি করে তা নামঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে বাবুকে নিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো উদ্ধারে ঝিনাইদহে অভিযান পরিচালনার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এ অভিযানে একজন ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকবেন। 

সোমবার (২৪ জুন) ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবুর বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ আদেশ দেন।

আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ভিকটিম আনোয়ারুল আজীম আনারকে প্রলুব্ধ করে অপহরণ ও হত্যার মূল ঘাতক সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার জব্দ করা মোবাইল ফোন পর্যালোচনায় দেখা যায়, শিমুল ভূঁইয়া ১৫ মে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং ১৬ মে রাতে গ্যাস বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তারা আনারকে অপহরণ ও হত্যাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথাবার্তা বলেন। পরবর্তী সময়ে দুজনেই ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় মিটিং করে আনারের ছবি বিনিময় করেন।

তা ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবু  কিছু বিষয় স্বীকার করেছেন। সেগুলো হচ্ছে, ১৭ মে থেকে ১৯ মে রাত পর্যন্ত শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে গ্যাস বাবুর হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ, এসএমএস আদান-প্রদান এবং আনারকে অপহরণ ও পরবর্তী টাকা পয়সার লেনদেন বিষয়ে কথাবার্তা হয়। শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা মোবাইল ফোনগুলোর হদিস জানতে চাইলে জিজ্ঞাসাবাদে গ্যাস বাবু জানান, তার মোবাইল ফোনগুলো হারিয়ে গেছে এবং থানায় এ নিয়ে তিনি জিডিও করেছেন।

বাবুকে রিমান্ড চাওয়ার আবেদনে আরও বলা হয়, জবানবন্দিতে আসামি স্বীকার করেছেন, শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা তিনটি মোবাইল ফোনের মধ্যে দুটি ভাঙ্গার গাঙ্গুলী হোটেলের পেছনের পুকুরে এবং অন্যটি স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে দেন তিনি। ওই মোবাইল ফোনগুলোতে এমপি আনারের অপহরণ ও হত্যাসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকায় সেগুলো প্রয়োজন। ফলে ফোনগুলো কোন কোন স্থানে ফেলেছে সেই স্থান নির্ধারণসহ মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে ফোনগুলো উদ্ধারে আসামি গ্যাস বাবুকে সঙ্গে নিয়ে ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনার জন্য আসামির পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রয়োজন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান এই আবেদন করেন।

এর আগে গত ৯ জুন আদালত ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা বাবুর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। এই মামলার অন্য আসামি শিমুল ভূঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি দেওয়ার পর তাদের প্রত্যেককেই কারাগারে পাঠান আদালত। মামলার অন্য আসামি ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেননি।

এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। এদিকে এমপি আনার খুনের ঘটনায় ভারতে একটি হত্যা মামলা বিচারাধীন আছে।