ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

তোফায়েল ছাড়া সব ভিআইপির আয়-সম্পদ বেড়েছে

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:১১ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:০০ এএম
তোফায়েল ছাড়া সব ভিআইপির আয়-সম্পদ বেড়েছে
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ২১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ভিআইপি ও আলোচিত সব প্রার্থীর আয় ও সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। তবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদের আয় ও সম্পদ দুটিই কমেছে। আর সবচেয়ে বেশি অর্থ-সম্পদ বেড়েছে বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ ও সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের। গত পাঁচ বছরে তার আয় ও সম্পদ বেড়েছে ২৩ গুণেরও বেশি। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ঝালকাঠি-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির হোসেন আমুর আয় ও সম্পদ দুটিই বেড়েছে। হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমির হোসেন আমু বছরে আয় করেন ৮৪ লাখ ২৯৫ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ১ কোটি টাকা ও ৭৫ লাখ টাকা মূল্যমানের দুটি মোটরগাড়ি আছে তার। ২০ একর এবং ৬০ বিঘা কৃষিজমি, ৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা দামের তিনটি এবং আরও দুটি আবাসিক ভবন রয়েছে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ভোলা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের আয়-সম্পদ দুটিই কমেছে। এ বছরে দাখিলকৃত হলফনামা অনুযায়ী তিনি বছরে আয় করেন ২৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫৮ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ২ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৫ টাকা নগদ রয়েছে। ২৮ হাজার ৯৪৭ দশমিক শূন্য ১ ইউএস ডলার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২ কোটি ১৪ হাজার ৯ টাকা, স্থানীয় আমানতে বিনিয়োগ আছে ৩৬ লাখ ৬০ হাজার, অন্যান্য খাতে রয়েছে ৫ লাখ টাকা এবং ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার আসবাবপত্র। ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের ২৪ দশমিক ৪৬২ একর কৃষিজমি, চারটি ফ্ল্যাট ও ৬ লাখ টাকার ব্যবসায় শেয়ার। দায়দেনার মধ্যে ফ্ল্যাটের বিপরীতে অগ্রিম বাবদ ৪৩ লাখ ৬০ টাকা পাওনা রয়েছে তার। 

বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর আয় ও সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ। বছরে তিনি আয় করেন ৪ কোটি ১৭ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ অর্থ রয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ৫০৯ টাকা, ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২৫ কোটি ৯৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯ টাকা, শেয়ার রয়েছে ৫১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, সঞ্চয়পত্র ৩ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের দুটি জিপগাড়ি, ৫০ ভরি স্বর্ণ, আসবাবপত্র ২ লাখ টাকা, কৃষিজমি ১৭ একর, অকৃষি জমি ৪১ একর, ঢাকার কলাবাগানে একটি দালান, যার মূল্য ৮৯ লাখ ১১ হাজার ৫৭৫ টাকা। তার জামানতবিহীন ঋণ রয়েছে ৫ কোটি ৬০ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর আয় বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। তিনি বছরের আয় করেন ১ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৭০০ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ১ কোটি ১ লাখ ৯৪ হাজার ২১ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৭ লাখ ৪৩ হাজার ২৫০ টাকা। অন্যান্য খাতে তার রয়েছে ২৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। রয়েছে ৪ হাজার ৮১৭ দশমিক ৪৯ মার্কিন ডলার, ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের আসবাবপত্র, ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের স্বর্ণ এবং ৯১ লাখ ৯৪ হাজার ১৯১ টাকা দামের ল্যান্ড ক্রুজার মোটরগাড়ি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১ দশমিক ৫২৫ একর কৃষিজমি, ৩ দশমিক ৪৩৫ এলাকার অকৃষি জমি, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া একটি দালান রয়েছে তার। ২ কোটি ৭৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৩ টাকার দেনা আছে তার। 

পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজেরও আয় এবং সম্পদ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তিনি বাড়ি ও দোকানঘর ভাড়া দিয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮০ টাকা, ব্যাংক আমানত ও শেয়ার দিয়ে ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭০৪ টাকা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে বছরে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৩ কোটি ২৫ লাখ ২৩ হাজার ৮৬৪ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২ কোটি, ব্যবসায় শেয়ার ১ কোটি ৯২ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ টাকা, ১ কোটি ২৩ লাখ ৫২ হাজার ৪১ টাকা মূল্যমানের দুটি গাড়ি, ২০ হাজার টাকার স্বর্ণ, ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের আবসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে দুই একর কৃষিজমি, ৩১ শতাংশ অকৃষি জমি, ১ কোটি ২০ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫ টাকা মূল্যে দুটি দালান এবং ৩০ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি পিস্তল।

পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও বছরে আয় করেন ৫৭ লাখ ১৩ হাজার ৩৮০ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৮২ লাখ ৫২ হাজার ৫০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৯১৬ ও ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। ৯৫ হাজার টাকা মূল্যমানের আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিকস পণ্য। ব্যবসায়র মূলধন ১৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৫ কোটি ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৬ টাকা দামের অকৃষি জমি রয়েছে তার।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বরিশাল-৩ আসনের প্রার্থী রাশেদ খান মেননের বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৫ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯৭১ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৪ লাখ ৬০০ টাকা। কোম্পানি শেয়ার ৩০ হাজার টাকা, স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ২০ লাখ, ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যমানের জিপগাড়ি, ১ লাখ টাকা মূল্যমানের আসবাপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকার কৃষিজমি। রয়েছে বন্ধুর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা ঋণ।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের আয় বেড়েছে কয়েক গুণ। আয়ের উৎস হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন চাকরির অবসর ভাতা ও সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতা থেকে ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৬ টাকা আয় করেন। এ ছাড়া ফ্ল্যাট বিক্রি থেকে আয় করেছেন ১ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৯০২ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৫৮ লাখ ১১ হাজার ৬০৩ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। কোম্পানি শেয়ার ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২৬ লাখ ৮৯ লাখ ৪৫০ টাকা মূল্যমানের মোটরগাড়ি, ২০ তোলা স্বর্ণ, ২ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের আসবাবপত্র ইলেকট্রনিকস সমাগ্রী রয়েছে তার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে জাহিদ ফারুক শামীমের রয়েছে দালান ও ভিটাবাড়ি দুটি, অকৃষি জমির মধ্যে বরিশালের আলেকান্দা, কক্সবাজার ও বারিধারায় ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যমানের দালান রয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিপর্যায়ের কোনো দায়দেনা নেই তার। 

বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু বছরে আয় করেন ৫৫ লাখ ৩০ হাজার ১৩১ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৩ কোটি ৩০ লাখ ৮০ হাজার ৩৯২ টাকা, সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৬৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯৪৭ টাকা, দুটি মোটরগাড়ি বাবদ ১ কোটি ৫ লাখ ২৯ হাজার ৩৮৬ টাকা। ২০ ভরি স্বর্ণ, ৬০ হাজার টাকা দামের ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাবপত্র, ২ লাখ টাকা মূল্যের টু-টু বোর রাইফেল ও একটি পিস্তল রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৭৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের কৃষিজমি, ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি, জমি কেনা বাবদ অগ্রিম জমা ৪ লাখ টাকা।

হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে বরগুনার নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে বরগুনার নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ
ছবি : সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বরগুনা জেলার স্থানীয় পর্যায়ে নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। 

বুধবার (৩ জুলাই) বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবনে তারা সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় বেতাগী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান, পৌর মেয়র এবি এস গোলাম কবীর ও পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সালমান/

সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের ওপর আক্রমণ: রিজভী

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের ওপর আক্রমণ: রিজভী
নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুকে দেখতে হাসপাতালে রুহুল কবির রিজভী

সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সরকারপ্রধানের নির্দেশেই এই বর্বরোচিত আক্রমণটা করা হয়েছে বাচ্চুর ওপর। কারণ বিএনপি নেতাদের রক্ত দেখলেই সরকারপ্রধান আনন্দিত ও খুশি হন। এই কারণেই একটি দোয়ার অনুষ্ঠান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে। এই হামলা শুধু ন্যক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত নয়, আওয়ামী লীগ যে একটি বর্বর সংগঠন সেটির বহিঃপ্রকাশ।’

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন গুরুতর জখম নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু একজন বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। যাকে গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষ সজ্জন হিসেবেই চেনেন। জেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এমনকি জেলার তিনি প্রধান নেতা। তার গায়ে আদিম বন্য হিংস্রতায় এভাবে আক্রমণ করে তার হাত, পা, শরীর ক্ষতবিক্ষত করেছে। আজকে তাকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়ে কী আনন্দ পেলেন সেখানকার আওয়ামী লীগ এবং এমপি শিমুল সাহেব?’ শহীদুল ইসলাম বাচ্চুর সুস্থতা কামনা করেন তিনি।

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গতকাল বুধবার (৩ জুলাই) কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাটোর জেলা বিএনপির সমাবেশ ঘিরে হামলায় গুরুতর জখম হন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু। 

মিজানুর রহমান/সালমান/

 

দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিচ্ছে সরকার : মান্না

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম
দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিচ্ছে সরকার : মান্না
ছবি : খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, ‘আজ পত্রিকায় দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতকে ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী? আপনি তো ট্রানজিট দেননি, দিয়েছেন তো করিডোর। তাদের দেশ থেকে ট্রেন ঢুকবে, সেই ট্রেন আবার তাদের দেশে যাবে। সেখানে কী থাকবে আমরা জানি না।’ 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে ‘সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর পুলিশি হামলার ১৪ বছরেও বিচার না হওয়ায় দোষীদের বিচারের দাবিতে’ এ প্রতিবাদ সভা হয়। 

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকার কিছু কিছু মানুষকে হঠাৎ করে সামনে আনেন। খুব রসিকতা করে, হাসি-ঠাট্টা করে তাকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব দিয়ে দেন। আজ রাষ্ট্রের প্রধান, এক নম্বর ব্যক্তি রসিকতা করতে করতে খুনিদের মুক্তির সনদে স্বাক্ষর করে দেন। রসিকতা করতে করতে তাদের আত্মীয়স্বজনদের আরও প্রমোশন দিয়ে দেন। এরা জালিম সরকার, প্রতারক সরকার।’

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।’ কিন্তু তিনি বেনজীর আহমেদ, আজিজ আহমেদ, মতিউরসহ তাদের প্রথম দেখেছেন? আজিজের ভাইদের তিনি প্রথম দেখেছেন? তাকে তিনি প্রমোশন দেননি, প্রশ্রয় দেননি আর আমাদের ডেপুটি স্পিকারের ছেলে ২০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছে। এ নিয়ে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে পরিবার থেকে বলা হয়েছে, বেড়াতে গেছে। এই ২০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকির মামলা কি আছে? এই নিয়ে কোনো মামলা হয়েছে কি? এই নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম নিউজও করেছে। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল বলেছেন, ‘এরা আমাদের দলের কেউ নয়’।”

মান্না বলেন, ‘পুলিশের একটি সিপাহি পদে চাকরি দিতে গেলে আগে তার পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে। তার পরিবারের কেউ, দূর সম্পর্কের কেউ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে থাকলে তার চাকরি হয় না। কিন্তু সরকার একজন মানুষকে সামরিক বাহিনী থেকে ধীরে ধীরে বাহিনীপ্রধান বানিয়ে দিলেন, তার পরিবারের খোঁজ নেননি। তার আপন ভাই জেলে আছে এটা জানতেন না?’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার আমার-আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারে না। কিন্তু কোর্টকে দিয়ে কোটা তুলে দিতে পারে। কোর্টকে দিয়ে এমন এমন কাজ করে যাতে জনগণের অধিকার খর্ব হয়। জনগণের অধিকার খর্ব করতে সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে।’ 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, ‘এই সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে না। এই সরকার জিনিসের দাম কমাতে পারে না, জনগণের ভরণপোষণ দিতে পারে না, ভোট দিতে দেয় না, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় না, মানুষের ওপর অত্যাচার করে, নির্যাতন করে, এখন পর্যন্ত জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলার বিচার করা হয়নি। এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। ভরসা রাখেন, আজ হোক, কাল হোক এর বিরুদ্ধে সেরকম আন্দোলনই গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’ 

মিজানুর রহমান/সালমান/

বিতর্কিত কারিকুলাম ও সিলেবাস মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি করবে: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
বিতর্কিত কারিকুলাম ও সিলেবাস মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি করবে: চরমোনাই পীর
ছবি : সংগৃহীত

বিতর্কিত কারিকুলাম ও পাঠ্যসিলেবাস মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। 

তিনি বলেন, ‘নতুন কারিকুলাম ১০০ শতাংশ কারিগরিনির্ভর হওয়ায় শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। শুধু তাই নয়, এই কারিকুলামের পাঠ্যসিলেবাস লজ্জাহীন প্রজন্ম উপহার দিতে চলেছে।’ 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লার লাকসামে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর।

রেজাউল করীম বলেন, ‘ধর্মীয় ও ইসলামী শিক্ষার অভাবে মানুষ বিপথগামী হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ ও উঠতি বয়সীদের কিশোর গ্যাংসহ ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে।’

চরমোনাই পীর বলেন, “৯ম শ্রেণির ‘জীবন- জীবিকা’ বইয়ে ‘নারীরূপী পুরুষের অন্তর্বাসে ভরপুর ছবি সম্বলিত কিউআর কোড ব্যবহার’ করে যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইচ্ছাকৃতভাবেই এসব করা হলেও কর্তৃপক্ষ বেখবর। প্রয়োজনে এসব পাঠ্যপুস্তক বাতিল করে আবারও অভিজ্ঞ, দক্ষ, রুচিশীল স্কলারদের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। যেন ধর্মীয় চেতনায় বেড়ে উঠা আমাদের সন্তানরা চরিত্রহীন হয়ে না যায়।”

তিনি বলেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্রে ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জালিমদের কবল থেকে আলেমদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ওলামায়ে কেরামকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’ 

জেলা সভাপতি মুফতি শাসছুদ্দোহা আশরাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াসের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীশ আবরার, কেন্দ্রীয় নেতা ও কুমিল্লা জেলা উত্তর সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফী।

এনাম আবেদীন/সালমান/

আ.লীগের রাজনীতির পুঁজি নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও রসিকতা : আলাল

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
আ.লীগের রাজনীতির পুঁজি নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও রসিকতা : আলাল
প্রতিবাদ সভায় কথা বলছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল

নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও রসিকতা আওয়ামী লীগের রাজনীতির পুঁজি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি। 

জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ২০১১ সালের ৬ জুলাই সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর পুলিশি হামলার ১৪ বছরেও দোষীদের বিচার না হওয়ায় তাদের বিচারের দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম (জিসফ)।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা অকৃতজ্ঞ। ২০০৭ সালে সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে বিদেশ পাঠিয়ে দিয়েছিল। খালেদা জিয়াকেও দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেদিন খালেদা জিয়া দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘দেশের ১৬ কোটি মানুষ আমার সন্তান। আমি এই মাটি ছেড়ে কোথাও যাব না।’ এমনকি শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার সুযোগ দিতে তিনি সেসময় বিবৃতি দিয়েছিলেন। তাকে আটকে রাখা অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক। সুতরাং আজ খালেদা জিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ তো দূরের কথা শেখ হাসিনা তাকে জেলে রেখে তার সাধারণ সম্পাদক দিয়ে খেলা হবে, খেলা হবে বলছেন।” 

তিনি বলেন, ‘সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে যারা অমানবিকভাবে টানাহেঁচড়া করেছেন তারা আসলে পুলিশের লোক নয়, তারা পুলিশ লীগের লোক। এই লীগ করতে করতে আজকে দেশটাকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আবারও নাকি খেলা হবে। তাদের এতই খেলাধুলার ইচ্ছা যে সংসার টিকে না। চলে যায়। তাদেরকে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতে হয়। আমি বলব, খেলার ইচ্ছা থাকলেই রাষ্ট্রকে নিয়ে খেলবেন না। সাধারণ মানুষের জীবনকে নিয়ে বারবার খেলবেন না।’

আলাল আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। বাজারে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে। সব প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ করেছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামীতে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি আসবে। আপনারা সবাই সেই আন্দোলনে আগের মতো শামিল হবেন। কারণ আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে না পারলে দেশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক চাই না। তবে ট্রানজিট ও করিডোরের নামে তাদের গোলামিও করব না।’ এ সময় তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা দেওয়ার আহ্বান জানান।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মনজুর রহমান ভুইয়ার সভাপতিত্বে ও ফোরামের নেতা সোহেল রানা ও এইচএম স্বপন রানার পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/