সরকার ভয় পেয়ে এখন ডাবল প্রোটেকশন নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেছেন, ‘বর্তমান সংসদে প্রায় ৬৫০ জন এমপি রয়েছেন। কোনো কারণে একটা সরকার ঝরে পড়ে গেলে আরেকটা সরকার যাতে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু এবার আর কোনো প্রোটেকশন আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।’
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর তোপখানা রোডে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ মিয়া এবং ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল বিশ্বাস। সভা পরিচালনা করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পুরাই ভুয়া। একটা নৌকা, একটা ডাবগাছ, একটা গাবগাছ মার্কা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। কারণ উনাদের তো মার্কার অভাব নেই। ভোটের পর তারা বড় বড় কথা বলতে শুরু করেছেন। আজকে যে সবচেয়ে বেশি দালালি করেছেন তিনিও বলছেন, তাকে কারচুপি করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের যারা নমিশন পাননি তাদেরও বুকটা ফেটে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘চোর চোর দেশ চোর। পুরো দেশটাই চুরি করে সাফ করে দিয়েছে সরকার। এই সরকার প্রতারণার ভোটের সরকার, এই সরকারকে জনগণ মানে না। দড়ি ধরে টানছি। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের থামবে না। ভুয়া সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলনে অব্যাহত থাকবে।’
মান্না বলেন, ‘আজকে ভোট হয়েছে এক ব্যক্তির। ১০ কোটি ভোটার এই দেশে নেই। তিনি একাই ৩০০ আসনে ভোট দিয়েছেন। শেখ হাসিনাকে যাকে যে আসনে চেয়েছেন তার বাইরে কেউ জিততে পারেননি। দু-একজন হয়তো ভেবেছেন আমরা জিতেছি, কিন্তু সেটাও শেখ হাসিনার দয়ার কারণে।’
আইনমন্ত্রীর উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী বলেছেন, এই দেশের জনগণ সংবিধান বোঝে না। কিন্তু জনগণ যে সংবিধান চায়, আইনমন্ত্রী সেই সংবিধান চান না। আইনমন্ত্রীর সংবিধান হলো আওয়ামী লীগ যা বলবে, তাদের নেতা যা বলবে, সেটাই সংবিধান। ওই সংবিধান বাংলাদেশের সংবিধান না, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার সংবিধান। তড়িঘড়ি করে পঞ্চদশ সংশোধনী করলেন তখন একটা সংসদ নির্বাচিত হলে, এমপির শপথ নিলে আরেকটা সংসদ যে থাকতে পারে না, এটার ব্যাখা করতে ভুলে গেছেন।’
সভাপতির বক্তব্যে সাইফুল হক বলেন, ‘ডামি লীগের নির্বাচন করে আজকে দেশকে একদলীয় বাকশাল কায়েম করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সরকারকে মেনে নেয়নি। দেশের জনগণও তাদের মেনে নেয়নি। আগামী পাঁচ বছর তাদের ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন পূরণ হতে দেবে না জনগণ।’
অংশনিসংকেত পেয়ে সরকার এখন ডাবল প্রোটেকশন নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একাদশ সংসদ নিবাচনের ৩৪৮ জন এমপি এবং দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন এমপি বহাল আছেন। একসঙ্গে প্রায় ৬৫০ জন এমপি বহাল আছেন। কোনো আইন, সংবিধান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এই সরকার ধার ধারে না। এই সরকার আগামী পাঁচ বছর টিকতে পারবে না।’
এমএ/