দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ৪৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে বিকেলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের জানান, আগামী রবিবার প্রার্থী তালিকা নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেবে আওয়ামী লীগ।
সংসদের সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে আজ দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতবিনিময় করেন। দুপুরের পর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে দলটির সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।
ঘোষণা করা সংরক্ষিত মহিলা আসনে রয়েছেন শবনম জাহান শিলা (ঢাকা)। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি একাদশ সংসদেও দলটির নারী আসনে এমপি ছিলেন।
নাহিদ ইজহার খান (ঢাকা) এবারও সংরক্ষিত নারী আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। একাদশ সংসদেও তিনি আওয়ামী লীগের নারী আসনে এমপি ছিলেন।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ (বরিশাল) দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পান, তবে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল হয়। দল এবার তাকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।
সদ্য সাবেক মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা (মুন্সীগঞ্জ) এবারও সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। একাদশ সংসদেও তিনি নারী আসনে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলেন। সাহেদা তারেক দিপ্তী (ঢাকা) নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম (টাঙ্গাইল) এবার মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি এর আগেও একাধিকবার সংসদ সদস্য এবং প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক শামসুন নাহার (টাঙ্গাইল)। তিনি এর আগেও সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি ছিলেন।
মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর) নৌকার মনোনয়নে এমপি হয়েছেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও তিনি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান। তাকে দল আবারও নারী সংরক্ষিত আসনে মনোনীত করেছে।
অপরাজিতা হক (টাঙ্গাইল) এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। একাদশ সংসদেও আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে এমপি ছিলেন।
আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী (লক্ষ্মীপুর) এর আগেও দলের সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়েছেন। দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি নৌকার মনোনয়ন পেলেও ১৪-দলীয় জোটকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়। দল এবারও তাকে নারী আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম ঢাকা-৪ আসন থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। একাদশের মতো দ্বাদশ সংসদেও দল তাকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।
এ ছাড়া রেজিয়া ইসলাম (পঞ্চগড়), দ্রোপদী দেবী আগরওয়াল (ঠাকুরগাঁও), আশিকা সুলতানা (নীলফামারী), আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা (জয়পুরহাট), কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর), জারা জেবিন মাহবুব (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), রুনু রেজা (খুলনা), ফরিদা আক্তার বানু (বাগেরহাট), ফারজানা সুমি (বরগুনা), খালেদা বাহার বিউটি (ভোলা), নাজনীন নাহার রশীদ (পটুয়াখালী), ফরিদা ইয়াসমিন (নরসিংদী), উম্মি ফারজানা ছাত্তার (ময়মনসিংহ), নাদিয়া বিনতে আমিন (নেত্রকোনা), মাহফুজা সুলতানা মলি (জয়পুরহাট), আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা (ঝিনাইদহ), অ্যারমা দত্ত (কুমিল্লা), লায়লা পারভীন (সাতক্ষীরা), সদ্য সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান (খুলনা), বেদৌরা আহমেদ সালাম (গোপালগঞ্জ), পারুল আক্তার (ঢাকা), সাবেরা বেগম (ঢাকা), ঝর্ণা আহসান (ফরিদপুর), অনিমা মুক্তি গমেজ (ঢাকা), শেখ আনার কলি পুতুল (ঢাকা), মাসুদা সিদ্দিক রোজি (নরসিংদী), হাছিনা বারী চৌধুরী (ঢাকা), নাজমা আক্তার (গোপালগঞ্জ), রুমা চক্রবর্তী (সিলেট), আশ্রাফুন নেছা (লক্ষ্মীপুর), কানন আরা বেগম (নোয়াখালী), শামীমা হারুন (চট্টগ্রাম), ফরিদা খানম (নোয়াখালী), দিলারা ইউসুফ (চট্টগ্রাম), আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান (চট্টগ্রাম), জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা (রাঙামাটি), নাছিমা জামান ববি (রংপুর) মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে কানন আরা বেগমকে ১৪-দলীয় জোটের শরিক দলের বিবেচনায় মনোনীত করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৪৮টি। এসব আসনে দলটির মনোনয়ন পেতে ফরম কিনেছেন ১ হাজার ৫৪৯ জন। ফলে প্রতিটি আসনের বিপরীতে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা ছিলেন ৩২ জন।