রিশাদ হোসেনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এমন- এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন। লেগ স্পিনার নিয়ে টাইগার সমর্থকদের হতাশা তো নিয়মিত ঘটনা। বিশ্বকাপে এসে সেই হতাশা অন্তত খানিকটা ঘুচল রিশাদের কল্যাণে। প্রথম লেগ স্পিনার হিসেবে বাংলাদেশের জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই দারুণ বোলিংয়ে আটকে দিলেন শ্রীলঙ্কাকে। ফলে তাকে ঘিরে তো প্রশংসা হতেই পারে। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে তার বোলিং ফিগারও যে ঈর্শণীয়। মাত্র ২২ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট।
ইনিংসের ৮ম ওভারে রিশাদের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। পাওয়ার প্লেতে আক্রমণাত্মক ব্যাট চালানো লঙ্কানরা রিশাদের উপর চড়াও হবেন- এমনটাই মনে হচ্ছিল বাইরে থেকে। প্রথম বলেই পাথুম নিশাঙ্কা চার হাঁকিয়ে এমনটাই জানান দেন। এতে রিশাদ ভড়কে যাননি। পরের বলেই ঘুরে দাঁড়ান। তাতে নিজের প্রথম ওভারে রিশাদের খরচ ছিল মাত্র ৭ রান।
নিজের দ্বিতীয় ওভারের শুরুটাও ভালো করেছিলেন রিশাদ। দারুণ সব ড্রাফট ডেলিভারি আর লেগ স্পিনে প্রতিপক্ষের জন্য রান তোলা হয়ে উঠছিল কঠিন কাজ। তবে টানা ভালো বল করা রিশাদ হুটহাট একটি খারাপ বল করে বসবেন এটা যেন একটা নিয়তি। ম্যাচের ১০ম ওভারের পঞ্চম বলে চারিথ আসালাঙ্কাকে আউট সাইড অফে বল করে বসে রিশাদ। ওই সুযোগ মোটেও হাতছাড়া করেননি আসালাঙ্কা। বল পাঠিয়ে দেন সীমানার ওপারে। তাতে নিজের দ্বিতীয় ওভারে রিশাদের খরচ হয় ৯ রান। দুই ওভার শেষে ১৬ রান খরচায় তার নামের পাশে ছিল না কোনো উইকেট।
একটু খেই হারিয়ে বসা রিশাদকে দিয়ে তৃতীয় ওভার করাতে খানিকটা অপেক্ষাই করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ম্যাচের ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন রিশাদ। এবার অবশ্য অধিনায়ককে আর হতাশ করেননি। ওভারের প্রথম বলে আউট হন আসালাঙ্কা। রিশাদের করা আউট সাইড অফে থাকা বল সুইপ করে বড় শটে আগ্রহী ছিলেন এই লঙ্কান। তবে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার পয়েন্টে দাঁড়ানো সাকিব আল হাসানকে ফাঁকি দিতে পারেনি বল। উড়ে আসা বল সহজে তালুবন্দি করেন সাকিব। রিশাদের পরের বলে ফেরেন লঙ্কান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। বল বুঝতে না পেরে স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের কাছে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন।
নিজের তৃতীয় ওভারে ঘুরে দাঁড়ানো রিশাদ তৃতীয় উইকেটের দেখা পান নিজের চতুর্থ ওভারে। ওই ওভারে ফেরান আরেক লঙ্কান ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। তাতে ইনিংস শেষে রিশাদের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪-০-২২-৩। রিশাদ তার করা ২৪ বলের ১০ বলই দিয়েছেন ডট। ইনিংসে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ ডট দিয়েছেন রিশাদ। সবচেয়ে বেশি ১৪ ডট দেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমান।